উদ্বিগ্ন: অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন
গোরক্ষার নামে রাজনৈতিক তাণ্ডব কৃষি অর্থনীতির পায়েও কুড়ুল মারছে বলে ইঙ্গিত দিলেন অর্থ মন্ত্রকের প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন।
কোনও রাজনৈতিক দলের নাম করেননি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে শনিবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুকৌশলে তিনি প্রশ্ন তুলে দিলেন, যে ভারত প্রাণী রফতানিতে বিশ্বে প্রথম সারিতে, সেখানে গরুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত রাজনীতি কেন কুরে খাবে গরিব কৃষকের সংসারের আর্থিক ভারসাম্যকে? বরাবর লাঙল টানা, দুধ পাওয়া ইত্যাদির জন্য দাম দিয়ে মোষ বা গরু কেনেন গ্রামের মানুষ। পরে ক্ষমতা কমে এলে, ‘বুড়ো গরু’ বেচে সেই টাকার সঙ্গে আরও কিছু জুড়ে ফের নতুন গরু কিনতে হাটের পথে হাঁটা দেন তাঁরা। এখন সে পথ বন্ধ হলে, বুড়ো গরুকে বাকি জীবন পোষার খরচ তাঁদের অভাবের সংসারে আসবে কোথা থেকে?
নিজের সদ্য প্রকাশিত বই ‘অব কাউন্সেল: দ্য চ্যালেঞ্জেস অব মোদী-জেটলি ইকনমি’র প্রচারে ভারতে এসেছেন অরবিন্দ। তারই অঙ্গ হিসেবে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে এ দিন অবশ্য নোটবন্দি নিয়ে কিছুটা রক্ষণাত্মক মনে হয়েছে তাঁকে। বইয়ে তিনি লিখেছেন, নোটবন্দি এক বিশাল, নির্মম আর্থিক ধাক্কা। এ দিন সেই নির্মম বা নিষ্ঠুর বিশেষণ আর প্রয়োগ করেননি। কিন্তু মেনেছেন যে, এক লপ্তে ৮৬% নোট বাতিল যে অর্থনীতির পক্ষে মারাত্মক, তা তাঁকে বলেছেন নোবেলজয়ী পল ক্রুগম্যান থেকে শুরু করে অনেক অর্থনীতিবিদই। একই সঙ্গে মেনেছেন যে, চালুর পরেই মাসে এক লক্ষ কোটি টাকা করে জিএসটি আদায়ের লক্ষ্য আদৌ বাস্তববাদী নয়।
ব্যাঙ্কের অনাদায়ি ঋণ থেকে শুরু করে বিজয় মাল্যের দেশে ফেরার সম্ভাবনা— সমস্ত কিছুর মধ্যেই যে ভাবে রাজনীতি বা সরকার মাথা গলাচ্ছে, তা-ও চিন্তায় রেখেছে তাঁকে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির প্রাক্তন উপদেষ্টা মনে করেন, বিচারের আগেই মাল্যকে কাঠগড়ায় তুলে দিয়েছে সংবাদমাধ্যম। আগে তাঁর কাছ থেকে ঋণের টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা হোক। একমাত্র তাতেই লাভ ব্যাঙ্কগুলির।
মোদী সরকার চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বললেও, প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টার ইঙ্গিত, সেই অচ্ছে দিন এখনও দূর অস্ত্। কারণ, খরার বছর তো আছেই, ভাল বর্ষার বছরেও চাষিরা জলের দরে শস্য বেচতে বাধ্য হন। তবে প্রথমে নিজের তৈরি আর্থিক সমীক্ষা এবং পরে নিজের বইয়ে লেখা কথার খেই ধরে তিনি এ দিনও বলেছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে ভাগ বসানোকে তিনি অযৌক্তিক মনে করেন না। তবে শর্ত হল, তা ব্যবহার করতে হবে ব্যাঙ্কে মূলধন জোগানোর কাজেই। ঘাটতি পূরণে নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy