দিল্লিতে অরুণ জেটলি। ছবি: পিটিআই।
ঘোষণা বাজেটে ছিলই। বিদেশি লগ্নির পথ মসৃণ করতে বৃহস্পতিবার সেই পরিকল্পনায় সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানালেন, এ বার থেকে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণে আর তার গোত্র বিচার করা হবে না। অর্থাৎ, আলাদা-আলাদা সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হবে না প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই), বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি (এফআইআই), কিংবা অনাবাসী ভারতীয়দের বিনিয়োগে। তার বদলে বরং সবগুলি মিলিয়ে বেঁধে দেওয়া হবে একটিই ঊর্ধ্বসীমা (কম্পোজিট ক্যাপ)।
সংস্কারের এই পদক্ষেপকে এ দিন স্বাগত জানিয়েছে শেয়ার বাজার। এক লাফে ২৪৮ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। পৌঁছেছে গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮,৪৪৬.১২ অঙ্কে। অবশ্য উত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছে ত্রাণ পেতে কৃচ্ছ্রসাধনের প্রস্তাব গ্রিক পার্লামেন্টে পাশ হওয়া এবং ইরান-আমেরিকা চুক্তির দরুন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমার সম্ভাবনাও।
এখন অধিকাংশ শিল্পে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা তো বেঁধে দেওয়া হয়ই, তার মধ্যে আবার আলাদা-আলাদা গণ্ডি কেটে দেওয়া হয় এফডিআই, এফআইআই ইত্যাদির জন্য। নতুন নিয়মে তা আর থাকছে না। শুধু তা-ই নয়। বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তনযোগ্য ঋণপত্র (ফরেন কারেন্সি কনভার্টিবল্ বন্ড) এবং ডিপোজিটরি রিসিট ছেড়ে টাকা তুললেও, তা আর গণ্য হবে না বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে ভারতে বিদেশি লগ্নি বাড়বে। সহজ হবে ব্যবসা করা। বিনিয়োগের জোয়ার আসবে বিশেষত খুচরো ব্যবসা (রিটেল) এবং স্টক এক্সচেঞ্জগুলিতে। কিন্তু এরই মধ্যে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে ব্যাঙ্কিং ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে ঘিরে।
বর্তমানে ব্যাঙ্কে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৭৪%। এর মধ্যে ৪৯% পর্যন্ত আসতে পারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ঝুলি থেকে। ইয়েস ব্যাঙ্ক-সহ বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কই এফআইআইয়ের সেই সীমার বেশ কাছাকাছি। ফলে আলাদা ভাবে ওই বেড়া উঠে গিয়ে মোট ৭৪ শতাংশের সীমা বাঁধা থাকলে তাদের পক্ষে মূলধন জোগাড় করা অনেক সহজ হবে বলে ব্যাঙ্কগুলির আশা।
শিল্প মন্ত্রকের কর্তা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘ব্যাঙ্কিং এবং প্রতিরক্ষা— এই দু’টিকে নতুন নিয়মের বাইরে রাখা হচ্ছে। ফলে সেখানে এফআইআইয়ের পৃথক ঊর্ধ্বসীমা থাকছে যথাক্রমে ৪৯ ও ২৪%।’’ তাঁর দাবি, দেশের নিরাপত্তার কারণে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র স্পর্শকাতর। আর ব্যাঙ্কিংয়ে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি ৫০ শতাংশের নীচে বেঁধে রাখার কারণ বাড়তি সাবধানতা। যাতে ওই সংস্থাগুলি আচমকা ভারত থেকে লগ্নি সরালে, ওই ক্ষেত্র ধসে না-পড়ে। নতুন নীতি নিয়ে সম্পূর্ণ খসড়া প্রকাশিত হলে, বিষয়টি খোলসা হবে বলে আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy