মন্দা বাজারের চোখরাঙানি তো আছেই। গোদের উপর বিষফোড়া সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। ফলে রাজ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি উদ্বেগজনক ভাবে কমলেও বাড়ছে তা তৈরির খরচ। আর তাই, আবাসন-বাজার চাঙ্গা করতে দাম কমিয়ে ফ্ল্যাট বেচার যে-নিদান রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজন দিয়েছেন, তা মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল এ রাজ্যের আবাসন শিল্প। একই সঙ্গে খরচ বাড়ার জন্য ঘাড়ে চেপে বসা করের বোঝাকেও দায়ী করেছে তারা। সব মিলিয়ে নির্মাণ সংস্থাগুলির দাবি, দাম আরও কমালে তাদের ব্যবসা করাই কঠিন হয়ে যাবে।
আবাসন শিল্পে চাহিদা বাড়াতে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন রাজন। তিনি বলেন, দাম চড়া থাকলে চাহিদা বাড়বে না। তবে রাজনের দাওয়াই এ রাজ্যে খাটবে না বলে দাবি সংস্থাগুলির। তাদের মতে, আবাসন তৈরিতে শ্রমিক, কাঁচামাল ও কর-সহ বিভিন্ন খাতে খরচ হিসাব করেই ব্যবসায় নামা হয়। কিন্তু মজুরি ছাড়া কোনও খরচের রাশই হাতে থাকে না। তাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের চাপে বালি, স্টোনচিপ ও যাবতীয় কাঁচামালের খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। সঙ্গে আছে বিভিন্ন কারণে থোক টাকা ‘তোলা’ চাওয়ার হিড়িক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্মাণ সংস্থার কর্তা বলেন, ‘‘সিন্ডিকেটের চাহিদা মেপে খরচ ধরা অসম্ভব।’’ তাঁর মতে, সিন্ডিকেটের খরচ সামলাতে ফ্ল্যাটের দাম যেমন বাড়ানো যায় না, তেমনই কঠিন দাম কমিয়ে দেওয়াও।
রাজ্যে নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতার দাবি, মাত্র ৫-১০% লাভ করেন তাঁরা। অথচ ডজন খানেক ছাড়পত্র পেতে এত সময় নষ্ট হয় যে, খরচ ২৫-৩০% বেড়ে যায় বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘দেরির জন্য বছরে প্রতি বর্গ ফুট পিছু দাম ২০০-১০০০ বাড়ে। ফলে বিক্রির হার অনেকটা পড়লেও, ক্রেতা টানতে দাম কমানোর সুযোগ নেই।’’
পাশাপাশি ক্রেডাইয়ের অন্যতম কর্তা সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা জানান, পরিষেবা কর ও ভ্যাটের জন্য আবাসন প্রকল্পের খরচ ৯-১০% বেড়েছে। বাড়ির নকশা অনুমোদনের ফি বেড়েছে। ফলে বর্গ ফুট প্রতি খরচ বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি বর্গ ফুট তৈরির খরচ দাঁড়িয়েছে ১৭০০-৬০০০ টাকা।
নিমার্ণ সংস্থাগুলির অভিযোগ, এ সবের সঙ্গে যোগ হয় সিন্ডিকেট, পুরসভা ও স্থানীয় প্রশাসনের অযৌক্তিক আবদার। ফলে বাড়ে খরচের বোঝা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy