Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

ঘুম কাড়ছে রিটার্ন জমার বাড়তি খরচ

বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, এখন পণ্য লেনদেনে উৎপাদন শুল্ক, প্রবেশ কর, কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর ইত্যাদি দিতে হয়। জিএসটিতে কর একটিই। তাই রিটার্ন জমার খরচ বাড়লেও, মোট খরচ বাড়বে না বলেই তাঁদের দাবি। যদিও যে সমস্ত ছোট উৎপাদনকারী শুধু ভ্যাট দেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

জিএসটি জমানায় পণ্য-পরিষেবা বেচতে গিয়ে হাজারো কর জমার ঝক্কি থেকে মুক্তি মিলবে ঠিকই। কিন্তু তেমনই এক লাফে অন্তত ন’গুণ হবে রিটার্ন জমার সংখ্যা। আর তার জন্য পেশাদারদের ‘ফি’ হিসেবে যে বাড়তি টাকা গুনতে হবে, তা ছোট শিল্প ও ব্যবসায়ীদের যথেষ্ট চাপে ফেলবে বলে শঙ্কিত সংশ্লিষ্ট মহল।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, এখন পণ্য লেনদেনে উৎপাদন শুল্ক, প্রবেশ কর, কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর ইত্যাদি দিতে হয়। জিএসটিতে কর একটিই। তাই রিটার্ন জমার খরচ বাড়লেও, মোট খরচ বাড়বে না বলেই তাঁদের দাবি। যদিও যে সমস্ত ছোট উৎপাদনকারী শুধু ভ্যাট দেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

জিএসটি-র রিটার্ন জমা দিতে গিয়ে খরচ বাড়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীরা করছেন কেন?

ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন্সের চেয়ারম্যান মহেশ সিংহনিয়া বলেন, ‘‘এখন আমরা বছরে তিন মাস অন্তর একটি করে রিটার্ন জমা দিই। জিএসটি চালু হলে প্রতি মাসে দিতে হবে তিনটি করে রিটার্ন। অর্থাৎ, বছরে চারটির জায়গায় অন্তত ৩৬টি।’’

তাঁর দাবি, এক জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে দিয়ে তিন মাসে একটি রিটার্ন তৈরিতে তাঁর খরচ পড়ে ৫ হাজার টাকা। বছরে ২০ হাজার। জিএসটি জমানায় রিটার্নের সংখ্যা এ ভাবে লাফিয়ে বাড়ায় তা গিয়ে ঠেকবে অন্তত ৬০ হাজার টাকায়। সংস্থা বিশেষে এই খরচের পরিমাণের হেরফের অবশ্যই হবে। কিন্তু রিটার্ন দাখিলের খরচ যে লাফিয়ে বাড়বে, তা নিয়ে বিশেষ সন্দেহ নেই ব্যবসায়ীদের। আর স্বাভাবিক ভাবেই এই বাড়তি খরচ নিয়ে চিন্তিত তাঁরা।

অঙ্ক নিয়ে মন্তব্য করতে না-চাইলেও, রিটার্ন জমার খরচ যে বাড়বে, তা মানছেন জিএসটি বিষয়ে অন্যতম পরামর্শদাতা সংস্থা কম্পিউটার ল্যাবের সিইও-এমডি সন্তোষ কুমার সাহুও।

কিন্তু পরোক্ষ কর ব্যবস্থা সরল করতে কেন্দ্র যেখানে এত বড় মাপের সংস্কারের পথে হাঁটছে, সেখানে রিটার্ন জমার বিষয়টি জটিল হচ্ছে কেন? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ‘ইনপুট ক্রেডিট’ বা আগে মিটিয়ে দেওয়া কর ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়াটি মসৃণ করতেই এতগুলি রিটার্ন জমা।

মহেশবাবুর দাবি, রিটার্নে প্রধানত তিনটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়। আগের মাসের পণ্য কেনা (পার্চেজ), বিক্রি (সেল) ও করের হিসাব (ট্যাক্স)। জিএসটি জমানায় প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে আগের মাসের বিক্রি, ১৫ তারিখের মধ্যে কেনা এবং ২০ তারিখের মধ্যে করের হিসাব সংক্রান্ত আলাদা-আলাদা রিটার্ন জিএসটি নেটে জমা দিতেই হবে। করও জমা করতে হবে ওই ২০ তারিখের মধ্যেই। আপাতত ওই রিটার্ন দাখিলের খরচই ঘুম কাড়ছে ব্যবসায়ী আর ছোট শিল্পের মালিকদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE