দরিদ্রদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে ফের আলোচনার জন্য নতুন বছরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও-র বৈঠক ডাকবে ভারত। ফেব্রুয়ারিতেই ডব্লিউটিও-র কিছু সদস্য দেশকে বৈঠকে ডাকার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে রবিবার জানান ভারতের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। ছোট আকারে একটি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করতে চান তিনি, যাতে খাদ্যে ভর্তুকি ও গণবণ্টন ব্যবস্থা বহাল রাখার প্রশ্নে সমাধানসূত্র খোঁজা যায়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে এ বিষয়ে সদস্যদের মধ্যে মতৈক্য না-হওয়ার জেরেই ফের ভেস্তে যায় ডব্লিউটিও-র একাদশ মন্ত্রী পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক। আর্জেন্তিনার রাজধানী বুয়েনস এয়ারেসে আয়োজিত চার দিনের ওই বৈঠকে বিষয়টির পাকাপোক্ত সমাধান চেয়েছিল ভারত। কিন্তু ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে গরিবদের স্বার্থে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রাখার প্রশ্নে অন্যান্য বৈঠকের মতোই মূলত আমেরিকা বেঁকে বসায় অধরাই থাকে সন্ধি। আমেরিকার অভিযোগ, এতে মার খাচ্ছে অবাধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। মতের মিল রয়েছে, এমন কিছু রাষ্ট্রকে এ বার ভারতে বৈঠকে ডেকে বিষয়টি এগোতে চান প্রভু।
তবে বাণিজ্যমন্ত্রীর দাবি, এ বারের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার জন্য ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপাতে পারেনি আমেরিকা। প্রভুর মতে, ডব্লিউটিও-র সাম্প্রতিক ইতিহাসে এই প্রথম ভারতের দিকে সরাসরি অভিযোগ তুলতে পারেনি আমেরিকা। সম্ভবত তাদের বেশি আপত্তি ছিল চিনের ভর্তুকি নীতি নিয়ে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘খোলা মনেই বৈঠক করছিলাম। কিছু দেশের একগুঁয়ে মনোভাবের জন্যই কথা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া গেল না।’’
উল্লেখ্য, ডব্লিউটিও-র আওতায় বিশ্ব বাণিজ্যের নিয়ম অনুযায়ী একটি সদস্য দেশ খাদ্যে ভর্তুকি খাতে কৃষির মোট উৎপাদন-মূল্যের ১০ শতাংশের বেশি খরচ করতে পারে না। এর জন্য ১৯৮৬-’৮৮ সালের দামকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। তবে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে গিয়ে এই নিয়ম মানা সম্ভব হবে না বলেই আশঙ্কা ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির। তাই এই আইন সংশোধনের দাবি তুলেছে নয়াদিল্লি। ২০১৩ সালে বালি-র বৈঠকে রফাসূত্র স্থির হয়। এখন তা মেনে চললেও এই একাদশ বৈঠকেই পাকাপাকি সমাধানে পৌঁছনো সম্ভব হবে বলে আশা ছিল। প্রভু অবশ্য বলেছেন, উন্নত দুনিয়া কৃষিতে বিপুল ভর্তুকি ছাঁটাই না-করলে নতুন করে কোনও শর্ত মানবে না ভারতও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy