—প্রতীকী ছবি।
চলতি অথবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৩% ছুঁতে পারে বলে অনুমান। পরের বার (২০২৪-২৫) তার থেকে কিছুটা কমলেও, আশা ৬.৫ শতাংশের নীচে নামবে না। ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে প্রত্যাশার এই ছবি তুলে ধরেছে মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস। তবে একই সঙ্গে সমীক্ষায় তারা স্পষ্ট করেছে অর্থনীতির আশঙ্কা এবং ঝুঁকির দিকগুলিও। যার মধ্যে অন্যতম রোজগার বৃদ্ধির সুযোগ উচ্চবিত্তদের একাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়া এবং সরকারের মূলধনী খরচের উপরে অত্যধিক নির্ভরশীলতা। যে কারণে আর্থিক বৃদ্ধির প্রত্যাশা পূরণের ব্যাপারে কিছুটা সংশয়ীও তারা। ইঙ্গিত দিয়েছে, রাস্তাটা তেমন মসৃণ হবে না। বরং অর্থনীতি এবং সামাজিক ক্ষেত্রে এমন কিছু ঝুঁকি বহাল, যা শেষ পর্যন্ত ওই পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ইন্ডিয়া রেটিংসের দাবি, ভারতীয় অর্থনীতি এই মুহূর্তে স্থিতিশীল। সরকারি লগ্নি বৃদ্ধি, শিল্প সংস্থাগুলির ভাল আর্থিক ফল, বিশ্ব বাজারে কমতে থাকা পণ্যের দাম, ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক ভাবে ছন্দে ফেরা এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে লগ্নি বৃদ্ধির সম্ভাবনা বৃদ্ধির চাকাকে গতিশীল রাখতে পারে। কিন্তু তার পরেও যে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে, সেটা স্পষ্ট সংস্থার রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, এ দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু ঝুঁকি এবং উদ্বেগ রয়ে গিয়েছে। বেসরকারি লগ্নি আসার সম্ভাবনা থাকলেও বৃদ্ধি মূলত নির্ভর করে রয়েছে সরকারি লগ্নির উপর। ইতিমধ্যেই সরকারি খরচের প্রভাবে যন্ত্রপাতি তৈরি এবং পরিকাঠামো/নির্মাণ শিল্প যথাক্রমে ৭% এবং ১০.৪% বৃদ্ধি দেখেছে। ফলে সেই খরচ কোনও কারণে কমাতে হলে কী হবে, প্রশ্ন থাকছে। দেশে বিক্রীত পণ্যের ক্রেতা প্রধানত ৫০% উঁচু আয়ের মানুষ। বাকি অংশের হাতে বাড়তি টাকা না থাকায় ক্রয়ক্ষমতা সীমিত। ফলে তাঁদের মধ্যে চাহিদাও বাড়েনি। যে কারণে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির হার আটকে ১ শতাংশে।
আর একটি ঝুঁকি পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধি। সেখানে গত এপ্রিল-অক্টোবরে পণ্যের দাম কমার পরে ফের বাড়তে শুরু করেছে। এতে সংস্থাগুলির উৎপাদন খরচের বাড়তি বোঝা পণ্যের দামে চাপিয়ে ক্রেতাদের দিকে ঠেলে দিতে না পারলে টান পড়বে তাদের মুনাফায়। আবার একাংশের কেনাকাটার ক্ষমতা সীমিত গণ্ডিতে আটকে বলে পণ্যের দাম বাড়লেও সমস্যা হবে। এর পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির সমস্যা। উন্নত দেশগুলি এখনও আর্থিক সঙ্কটে। ফলে মার খেতে পারে রফতানি।
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকেরও দাবি, আগামী অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমার অন্যতম কারণ হতে পারে সরকারি খরচ ছাঁটাই। রাজকোষ ঘাটতি সামাল দিতে যা জরুরি। সার্বিক ভাবে চাহিদা না বাড়লেও বৃদ্ধির গতি রুদ্ধ হতে পারে। পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কার সময় বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy