অভিব্যক্তি: মনোযোগ, বিরক্তি, হতাশা। বিভিন্ন বৈঠকে জাপানের শীর্ষ ব্যাঙ্ক গভর্নর কুরোদা। ছবি: রয়টার্স।
কথায় বলে, মুখ হল মনের আয়না। তা কি শীর্ষ ব্যাঙ্ক কর্ণধারদের ক্ষেত্রে সত্যি? তাঁদের মুখ দেখেও কি ঋণনীতির কোনও আঁচ পাওয়া সম্ভব? বোঝা যেতে পারে সুদ বাড়বে না কমবে?
এ নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছেন জাপানের উপদেষ্টা সংস্থা নমুরা সিকিউরিটিজ এবং মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফটের দুই গবেষক ইয়োশিইউকি সুইমন ও দাইচি ইসামি। সে জন্য তাঁরা ব্যবহার করেছেন বিশেষ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট সফটওয়্যার। বিষয়বস্তু হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক বৈঠকে ব্যাঙ্ক অব জাপানের গভর্নর হারুহিকো কুরোদার বক্তব্যের ভিডিও-কে।
সব দেশেই ঋণনীতি বৈঠকের আগে, শীর্ষ ব্যাঙ্ক কী পদক্ষেপ করবে তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা চলে। খুঁটিয়ে দেখা হয় ঋণনীতির বয়ান। শোনা হয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের সদস্যদের কথাও। তা থেকে পরবর্তী ঋণনীতির গতিপথ খোঁজে সংশ্লিষ্ট মহল। এ বার গভর্নরের মুখের সূক্ষ্ম অভিব্যক্তি থেকেও শীর্ষ ব্যাঙ্কের নীতির আগাম সন্ধান পাওয়া যায় কি না, তা নিয়েই এই গবেষণা।
আরও পড়ুন: টুইটারে রাহুলের দাপট দেখে চিন্তা বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের
তাঁদের বক্তব্য, দেখলে মনে হবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কুরোদার মুখ অভিব্যক্তিহীন। কিন্তু ভিডিওগুলিকে আধ সেকেন্ডের অজস্র ফ্রেমে ভেঙে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিরক্তি,
রাগ, হতাশা ফুটে উঠেছে সেখানে। বিশেষ করে ব্যাঙ্কের নীতি পরিবর্তনের আগে ও পরে কুরোদার ‘মুখের ভাষা’ বদলে গিয়েছে অনেকটাই। আর এই গবেষণা থেকেই নীতি প্রস্তুতকারকদের মন কী ভাবে কাজ করে, তা খুঁজে বের করা সম্ভব বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ব্যাঙ্ক অব জাপান।
এমনিতে রাষ্ট্রনেতা, নানা ক্ষেত্রের উচ্চপদস্থ কর্তাদের বা পোকারের মতো খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখ দেখে তাঁর মন বুঝতে চেষ্টা করার প্রক্রিয়া নতুন নয়। এমনকী বিয়ে টিকবে কি না, তা-ও আগাম বোঝার জন্য শরীরী ভাষা নিয়ে গবেষণা চলছে মার্কিন মুলুকে। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্ণধারের অভিব্যক্তিকে ব্যাখ্যা করে, তা থেকে আর্থিক নীতির গতি বোঝার এই চেষ্টা নতুন পথ দেখাবে বলেই বিশেষজ্ঞদের মত। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন লগ্নিকারী সংস্থা দুই গবেষকের কাছে এ নিয়ে খোঁজখবর করেছে।
গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যেতে আগামী দিনে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ কর্ণধার জ্যানেট ইয়ালেন এবং ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের গভর্নর মারিও দ্রাঘির ‘মুখের ভাষা’ বিশ্লেষণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সুইমন এবং ইসামি-ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy