Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

লেখা-পড়া

হরফ খুদে। কিন্তু বড্ড জরুরি। না-পড়লে, খেসারত গুনতে হতে পারে মোক্ষম। সুরক্ষার জন্য বিমা কিনছেন। তা হলে তার খুঁটিনাটি মন দিয়ে পড়ে ফেলার কাজটুকু করতে হবে আপনাকেই। লিখছেন মেধা রায়প্রথমে তাঁকে টাকা জমা দিতে হবে, তার পরে তা বিমা সংস্থার থেকে ফেরত পাবেন। তখন আবার শুরু হল ছোটাছুটি, টাকা জোগা়ড়ের জন্য। চিকিৎসা তো করাতে হবে!

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৯
Share: Save:

অফিসের সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থ্য বিমা করিয়েছিলেন সম্রাট। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে হাসপাতাল থেকে জানাল তাঁর বিমায় ক্যাশলেস সুবিধা নেই। প্রথমে তাঁকে টাকা জমা দিতে হবে, তার পরে তা বিমা সংস্থার থেকে ফেরত পাবেন। তখন আবার শুরু হল ছোটাছুটি, টাকা জোগা়ড়ের জন্য। চিকিৎসা তো করাতে হবে!

ভেবে দেখবেন যে, সম্রাটের মতো এ রকম অবস্থা আমাদের অনেকেরই হয়। আর সে জন্য অনেক ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই দায়ী।

গোড়ায় গলদ

বেশির ভাগ সময়েই কোনও পলিসি কেনা বা লগ্নির সময়ে আমরা যতটা উৎসাহ দেখাই, টাকা জমছে ভেবে আনন্দ পাই, ঠিক ততটাই নিরুত্তাপ থাকি তার কাগজপত্র খুঁটিয়ে পড়া নিয়ে। ফলে খুদে হরফে লেখার প্রায় পুরোটাই চোখ এড়িয়ে যায়। পরে সমস্যায় পড়লে পাওনা মাথাব্যথা।

তাই কষ্ট করে রোজগার করা টাকা কোথায় রাখলে সুদ বা রিটার্ন কেমন হবে— তা যেমন জানা জরুরি। তেমনই দরকার, প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিষয়গুলিও জেনে রাখা। প্রথমেই যদি জেনে নিতে পারি প্রাপ্য কী, তা হলে দরকারের সময়ে নিশ্চিন্তে থাকা যায়। তাই এই কাগজের ছোট অক্ষরে কী পড়তে হবে, তা নিয়েই কথা বলব। আজ দেখব সাধারণত যে বিমাগুলি আমরা করি, তাদের খুঁটিনাটি।

প্রতিটির জন্য আলাদা

মিউচুয়াল ফান্ড বা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলাই হোক, অথবা স্বাস্থ্য বিমা বা স্থায়ী আমানত। প্রতি ক্ষেত্রেই থাকে আলাদা আলাদা ফর্ম। তাতে এক বা একাধিক সই করতে হয়। আপনি ভাবতেই পারেন যে, কাগজ এক বার পড়ে নিলেই মনে হয় চলবে। কিন্তু মনে করুন, একাধিক জীবন বিমা করেছেন। কোনটা এনডাওমেন্ট পলিসি, কোনওটা ইউলিপ, আবার কোনওটা টার্ম পলিসি। ফলে সেগুলির খুঁটিনাটি একটার কাগজ পড়ে বোঝা সম্ভব নয়। প্রতিটির জন্য আলাদা করে সময় দিতে হবে আপনাকে। তবে হ্যাঁ, কিছু ক্ষেত্রে মূল বিষয়গুলি এক থাকবে, তবে তা-ও দেখে রাখতে পারলে ভাল।

অন্তত দু’বার পড়ুন

প্রতিটি লগ্নি বা বিমার কাগজে সই করার আগে দেখে নিতে হবে সেখানে কী লেখা রয়েছে। অর্থাৎ, কী কী শর্তে রাজি হয়ে বিমা করছেন। তেমনই এক বার টাকা ঢালার পরে হাতে আসা কাগজেও নজর রাখতে হবে। দেখতে হবে, আপনার অপছন্দের কিছু সেখানে রয়েছে কি না। থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা পরামর্শদাতা বা সংস্থাকে জানাতে হবে। ফলে শুধু এক বার পড়ে নিশ্চিন্ত হলেই চলবে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্তত দু’বার করে দেখতে হবে।

জীবন বিমা

বাজারে একাধিক সংস্থার বহু জীবন বিমা প্রকল্প চালু রয়েছে। আপনার পলিসির কাগজ তো পুরোটাই পড়বেন।
নানা প্রকল্পের মধ্যে তুলনার সময়েও সতর্ক থাকতে হবে। দেখতে হবে—

•• বিমাটি এনডাওমেন্ট পলিসি, ইউলিপ (শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত), না কি টার্ম পলিসি।

•• প্রিমিয়ামের অঙ্ক কত। সেই টাকা বাড়ানো-কমানো যাবে কি না।

•• আপনার পলিসিতে কত দিন অন্তর প্রিমিয়ামের টাকা গুনতে হবে। বিমা পলিসিগুলিতে সাধারণত মাসে, তিন মাসে, ছ’মাসে, বছরে এক বার অথবা এককালীন টাকা দিতে হয়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এজেন্ট হয়তো বলল বছরে এক বার টাকা দিলেই চলবে, কিন্তু পলিসির কাগজে লেখা রয়েছে প্রতি তিন মাসে তা জমা দিতে হবে। ফলে বছরে অঙ্কটা বিশাল হয়ে দাঁড়াবে। তখন সমস্যা আপনারই।

•• বিমা কত টাকার (সাম অ্যাশিওর্ড), তা দেখে নিন। দেখুন, তার বাইরেও বোনাস রয়েছে কি না। থাকলে কত দিন পরে তা খাতায় জমা হবে।

•• আসল বিমার সঙ্গেই রাইডার (যেমন, দুর্ঘটনা বা শারীরিক অক্ষমতা) পাচ্ছেন কি না। আর যদি আলাদা করে সে জন্য টাকা দিয়ে থাকেন, তা কাগজে ঠিকঠাক লেখা রয়েছে কি না।

•• বিমার মেয়াদ। অর্থাৎ, কত দিনের জন্য বিমা করা হচ্ছে। চাইলে পলিসি একই রেখে বিমার মেয়াদ বাড়ানো-কমানো সম্ভব কি না।

•• বিমাকারীর নাম, ঠিকানা, লিঙ্গ। সঙ্গে নমিনির তথ্যও দেখে নিতে হবে।

•• ইউলিপ পলিসিতে কোন প্রকল্প কোথায় (শেয়ার, ঋণপত্র না মিলিয়ে-মিশিয়ে) টাকা খাটাচ্ছে, তা দেখে রাখা জরুরি। বিমাকারী চাইলে সেই লগ্নির ধরন বদলাতে পারবেন কি না।

•• পেড-আপের সুবিধা কী রকম। সাধারণত তিন বছর প্রিমিয়াম দিলে পলিসি পেড-আপ করা যায়। অর্থাৎ, আর টাকা দিতে হবে না, কিন্তু পলিসির মেয়াদ চলা পর্যন্ত জমা অর্থের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বিমার সুবিধা মেলে। দেখে নিতে হবে আপনার পলিসিতেও সেই সুবিধা রয়েছে কি না। থাকলে কী ভাবে তার হিসেব হবে।

•• সারেন্ডার ভ্যালু কী ভাবে স্থির হয়। অনেক সময়েই হয় বেশ কয়েক বছর বিমার টাকা গোনার পরে আর তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তখন চাইলে তা বন্ধ করা যায়। সে ক্ষেত্রে পলিসি সারেন্ডার করে কত টাকা পাওয়া যাবে, তা হিসেবের জন্য নির্দিষ্ট ফর্মুলা রয়েছে। তা জেনে রাখা জরুরি।

•• পলিসি থেকে ঋণের সুবিধা। কত টাকা মিলবে, হিসেব কী ভাবে হবে।

•• বিমাকারীর মৃত্যু হলে নমিনি কী ভাবে টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন, কত দিনের মধ্যে তা পাওয়া যায়, তা প্রথমেই দেখে রাখুন।

•• কোন ক্ষেত্রে বিমার টাকা পাওয়া যাবে না। মনে রাখবেন বেশির ভাগ সংস্থাই আত্মহত্যা, ড্রাগ নিয়ে মারা যাওয়ার মতো ঘটনায় বিমা দেয় না।

স্বাস্থ্য বিমা

সম্রাটের কথা দিয়ে লেখা শুরু করে-ছিলাম। সেই সমস্যায় যাতে পড়তে না-হয়, তাই দেখুন—

•• পলিসির কাগজে বিমাকারীর নাম, ঠিকানা, বয়স ঠিক রয়েছে কি না।

•• বিমা কত টাকার। তার অঙ্ক বাড়ানো (টপ-আপ) যাবে কি না।

•• প্রিমিয়ামের জন্য কত টাকা দিতে হবে। লোকসংখ্যা বাড়লে তা কতটা বাড়বে। বিমাকারীদের বয়স অনুসারে প্রিমিয়াম কতটা বদলাবে।

•• বিমার সুবিধা পরিবারের সকলে পাবেন কি না। অর্থাৎ, সেটি ফ্যামিলি ফ্লোটার, না কি এক জনের জন্য।

•• বিমা ক্যাশলেস, না কি আগে টাকা জমা দিয়ে, তার পরে তা ফেরতের জন্য দাবি করতে হবে।

•• অনেক সংস্থা ক্লেম না-করলে বোনাস দেয়। দেখে নিতে হবে তা-ও।

•• অবশ্যই দেখতে হবে কোন কোন হাসপাতাল আপনার বিমা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। পলিসির কাগজের সঙ্গেই এর তালিকা দেয় সংস্থাগুলি।

•• অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যে চেক-আপের সুবিধা দেয় বিমা সংস্থাগুলি। আপনার পলিসিতেও তা আছে কি না।

•• কবে থেকে বিমার টাকা দাবি করতে পারবেন। মনে রাখবেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনও স্বাস্থ্য বিমা কেনার পর নির্দিষ্ট মেয়াদ না-পেরোলে ক্ষতিপূরণ দাবি করা যায় না। সেই মেয়াদ সংস্থা বিশেষে আলাদা। আবার একই সংস্থার বিভিন্ন পলিসি-র ক্ষেত্রেও তা আলাদা হতে পারে। একে ওয়েটিং পিরিয়ড বা কুলিং পিরিয়ড বলে। তবে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকে।

•• আগে থেকে কোনও রোগ থাকলে, কত দিন পর থেকে টাকা মিলবে। অনেক ক্ষেত্রে তা কুলিং পিরিয়ডেই থাকে।

•• কোন কোন রোগের চিকিৎসায় টাকা পাওয়া যাবে না।

•• অনেক স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে বিভিন্ন রোগের খরচের ঊর্ধ্বসীমা নির্দিষ্ট করা থাকে। তা আগে থেকেই দেখে নিতে হবে। নইলে পরে চিকিৎসার সময়ে অসুবিধা হতে পারে।

•• চিকিৎসা খরচের ভাগ-বাটোয়ারা হবে, না কি পুরোটাই বিমা সংস্থা বহন করবে। যদি ভাগ হয়, তা হলে রোগীর এবং সংস্থার মধ্যে কে কত অংশ টাকা দিতে বাধ্য থাকবে।

•• বিমা থাকলেও, চিকিৎসা শুরুর সময়ে কোনও টাকা প্রথমে দিতে হবে কি না। দিতে হলে, তার অংশ কত।

গাড়ি বিমা

আইন অনুসারে, গাড়ি কেনার সময়ে থার্ড পার্টি বিমা করতেই হয়। বছরে এক বার সেই বিমার পুনর্নবীকরণ করাতে হয়। দেখতে হবে—

•• গাড়ির ভ্যালুয়েশন (বাজার দর) কত লেখা রয়েছে। মনে রাখবেন, এর ভিত্তিতেই প্রিমিয়ামের অঙ্ক স্থির হবে।

•• প্রিমিয়াম কী ভাবে ঠিক হচ্ছে, তার ফর্মুলা প্রথমেই নিজের এজেন্টের কাছে জেনে নিন। মুখের কথা ভরসা না-করে, তাঁকে বলুন কাগজে হিসেব স্পষ্ট করে লিখে দিতে।

•• গাড়ির তথ্য ঠিক রয়েছে কি না। অর্থাৎ, গাড়ির মডেল (দু’চাকা, চার চাকা), সংস্থার নাম, চ্যাসিস-ইঞ্জিন-গাড়ির নম্বর, ইঞ্জিন কত সিসি-র, কত জন বসতে পারেন ইত্যাদি।

•• মালিকের নাম, ঠিকানা।

•• বিমার মেয়াদ (কবে শুরু ও পরের বছর কবে শেষ) স্পষ্ট কি না।

•• থার্ড পার্টি বিমার অঙ্ক কত।

•• কোন ক্ষেত্রে বিমা পাবেন না। যেমন, ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি বাণিজ্যিক কাজে লাগালে এবং তখন দুর্ঘটনা হলে টাকা পাওয়া যায় না।

•• নো ক্লেম বোনাস পাবেন কি না। পেলে সেই অঙ্ক কত।

•• সাধারণ গাড়ি বিমার সঙ্গে কোনও রাইডার (যেমন, ইঞ্জিন প্রোকেটশন ইত্যাদি) নেওয়া থাকলে, তার তথ্য লেখা রয়েছে কি না।

•• আগের বছরে ক্লেম হয়ে থাকলে, কিছু সংস্থার পলিসির কাগজে তার তথ্য লেখা থাকে। তা দেখে নিন।

•• অনেক ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য দেখে নিতে বলে। তা-ও অবশ্যই পড়ে নিন।

বাড়ি ও সম্পত্তি বিমা

দুর্ঘটনা বলে-কয়ে ঘটে না। শখ করে বাড়ি কিনেছে। অথচ তার সুরক্ষার ব্যবস্থা করেননি, এমন হলে মুশকিল। বন্যা, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সম্পত্তি নষ্ট হলে, তার টাকা পাওয়া যায় বাড়ি বিমা থেকেই। এখন অনেক ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ নেওয়ার সময়ে বাড়ি বিমা করায়। করা যায় নিজেও। এতে দেখতে হবে—

•• বিমার অঙ্ক ও মেয়াদ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক সরাসরি বিমার ব্যবস্থা করলে, তার মেয়াদ ও অঙ্ক স্থির করে ঋণের ভিত্তিতেই। চাইলে তা বাড়াতে পারবেন কি না, জেনে নিন।

•• প্রিমিয়ামের অঙ্ক কত। তা এক বারে, না কি প্রতি বছর দিতে হবে।

•• অবশ্যই দেখে নিতে হবে যে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের বিমা করানো হচ্ছে, তার ঠিকানা ঠিক রয়েছে কি না।

•• কোন ক্ষেত্রে বিমার টাকা পাবেন। যেমন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি।

•• কী কী ঘটনায় টাকা পাওয়া যাবে না। যেমন অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধে বা নাশকতার মতো ঘটনায় সম্পত্তি নষ্ট হলে বিমার টাকা মেলে না।

•• মূল বিমার আওতায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট ছাড়াও, তার ভিতরে থাকা কোনও জিনিসের জন্য বিমা করানো রয়েছে কি না। আলাদা রাইডার নেওয়া থাকলে, তার তথ্য। কী কী জিনিসের বিমা করানো হয়েছে এবং কোন ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া যাবে।

•• বাড়িতে থাকা কোন সম্পত্তির ক্ষতিতে কত টাকা পাওয়া যাবে।

মনে রাখবেন

•• এক বার বিমা করানোর পরে তা পছন্দ না-হলে, ১৫ দিনের মধ্যে পলিসি বন্ধ করা যায়।

•• পলিসি অপছন্দ হলে, তা এক সংস্থা থেকে অন্য সংস্থায় পাল্টে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

•• স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে চিকিৎসার টাকা দাবির ৩০ দিনের মধ্যে ক্লেম মেটাতে হবে সংস্থাগুলিকে। নইলে ব্যাঙ্কের চেয়ে ২% বেশি সুদ দিতে হবে। যা হিসেব হবে শেষ কাগজ জমার দিন থেকে।

সুতরাং...

টাকা যখন ঢালছেনই, তখন কাগজ পড়তে অসুবিধা কোথায়? সামান্য ভুলে যাতে পরে সমস্যা না-হয়, তাই শুরুতেই তৈরি থাকা ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

insurance Details
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE