— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অতিমারির ধাক্কা পার করে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে হোটেল-রেস্তরাঁ ব্যবসা। মাঝে জ্বালানি ও কাঁচামালের চড়া মূল্যবৃদ্ধি সেই রাস্তায় কিছুটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। পুজোর মরসুমে তা কাটিয়ে উঠে বড়দিনে ও গত সপ্তাহান্তে রাজ্যের অধিকাংশ রেস্তরাঁই ভাল ব্যবসা করছে বলে দাবি তাদের সংগঠনের। হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (এইচআরএইআই) সূত্রের খবর, ছুটির সময়ে রেস্তরাঁগুলিতে অতিথিদের আনাগোনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেড়েছে ব্যবসাও। অন্যান্য বছরের মতো এ বারও অনেক রেস্তরাঁ রাত ১২টার পরে কয়েক ঘণ্টা বাড়তি খোলা রাখার প্রশাসনের সায় চেয়েছে। জমা করেছে অতিরিক্ত চার্জ।
উৎসবের মরসুমে বা ছুটিতে হোটেল-রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার চল বরাবরের। মাঝে বাদ সেধেছিল অতিমারি। তার পরে বাহ্যিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আর্থিক চাপে সাধারণ মানুষ সেই খরচে সাময়িক কাটছাঁট করেছিলেন। তবে গত বছরের পুজো থেকে ফের রেস্তরাঁয় অতিথিদের আনাগানো বাড়তে থাকে। অতিমারির ভয় কেটে যাওয়ায় বড়দিন, বর্ষশেষ বা বর্ষবরণের পার্টির ছন্দে অতিথিদের পা মেলানোয় গতি ফেরে।
এ বারে বড়দিন ছিল সপ্তাহান্তের ঠিক পরে। ফলে শীতের ছুটি এমনিতেই কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। তার মধ্যেও যাঁরা বেড়াতে যেতে পারেননি, তাঁদের অনেকে নিজেদের শহরে বিনোদনে মেতে ওঠার সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছেন। মঙ্গলবার এইচআরএইআইয়ের প্রেসিডেন্ট সুদেশ পোদ্দার জানান, গত বছর এই সময়টা ছিল অতিমারির পরে প্রথম ঘুরে দাঁড়ানোর বড়দিন। এ বারে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার রেস্তরাঁয় অতিথি সমাগম বেড়েছে ৭%-১০%। ব্যবসা বৃদ্ধির হার ১০%-১৫%। তাঁর আরও বক্তব্য, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের অন্যান্য শহরেও আধুনিক রেস্তরাঁ, নাইট ক্লাব চালু হয়েছে। কলকাতার বাইরে শাখা খুলছে বড় রেস্তরাঁগুলি। ফলে সেখানে বর্ষশেষে বিনোদনের সুযোগ বেড়েছে।
সুদেশ এবং এইচআরএইআইয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি সন্দীপ সেহগল জানান, উৎসবের মরসুম-সহ কিছু বিশেষ সময়ে প্রশাসনকে বাড়তি চার্জ দিয়ে রেস্তরাঁ চালু রাখার সুযোগ রয়েছে। এ বারেও রাজ্যের আবগারি দফতর ও পুলিশের কাছে রাত ২টো বা ৩টে পর্যন্ত রেস্তরাঁ খোলা রাখার আবেদন বেড়েছে। সব মিলিয়ে খাবার
তৈরির খরচ সাম্প্রতিককালে ৬%-৭% বাড়লেও ব্যবসা বৃদ্ধি বজায় থাকলে তা পুষিয়ে যাবে বলে আশা তাঁদের।
এ বছর কলকাতায় বড়দিনের উদ্যাপন শুধু পার্ক স্ট্রিটে সীমাবদ্ধ নেই। লালবাজারের কাছে বো-ব্যারাকেও উৎসবের সূচনা করেছে রাজ্য। সন্দীপের মতে, সেই টানে সংলগ্ন এলাকার হোটেল-রেস্তরাঁগুলিও অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি অতিথি পেয়েছে। উৎসবের আয়োজন ছড়াতে সরকারে উদ্যোগ সেই সব এলাকার ব্যবসা ছড়াতেও সাহায্য করেছে।
এইচআরএইআইয়ের সেক্রেটারি প্রণব সিংহের মত অবশ্য মত, এই সময়ে নাইট ক্লাব, ডিস্কোথেক-সহ রেস্তোরাঁর ব্যবসা বেশি বাড়ে। ফলে শহরের যে দিকে এই শ্রেণির রেস্তোরাঁর সংখ্যা বেশি, সেখানে ভিড় বাড়লেও অন্যান্য জায়গায় ভিড় ততটা জমেনি। তবে সার্বিক ভাবে আশায় রয়েছে রেস্তরাঁ ক্ষেত্র। কারণ বর্ষশেষ ও নতুন বর্ষবরণও পড়েছে ফের শনি থেকে সোমবার। সেই ছুটিও বাড়তি অতিথি টেনে আনবে বলে আশা এই ব্যবসায় জড়িত নানা পক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy