অস্তাচলে অর্থবর্ষ। হাতে আর মাত্র ১১টি দিন। অর্থাৎ গড়িমসি করার দিন শেষ। কর সাশ্রয়ের জন্য যদি সঞ্চয় এখনও করা না-হয়ে থাকে, তবে তা করতে হবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই। ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত (এনপিএস-এ ৫০,০০০ টাকা ধরে) যা সঞ্চয় করবেন, তার উপর সাশ্রয় হতে পারে ১০.৩%-৩০.৯% অর্থাৎ সর্বাধিক ৬১,৮০০ টাকা। কম কী! সুতরাং যাঁদের হাতে লগ্নি করার মতো তহবিল আছে, তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে না-থেকে উপযুক্ত প্রকল্পে প্রয়োজন মতো লগ্নি সেরে ফেলুন আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই। খামোখা কর দিতে যাবেন কেন?
কর বাঁচানোর উদ্দেশ্যে যে-টাকা লগ্নি করা হয়, তা তোলা যায় না কমপক্ষে তিন বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য। এই ব্যাপারে সব থেকে কম লক-ইন (তিন বছর) প্রযোজ্য মিউচুয়াল ফান্ডের ইকুইটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিনিয়োগ প্রকল্পে—যাকে ছোট করে বলা হয় ইএলএসএস প্রকল্প। গত এক দশকে ভাল রিটার্নের ব্যবস্থা করায় প্রকল্পটি এখন বেশ জনপ্রিয়। মানুষ যত জানছেন ততই বাড়ছে তার জনপ্রিয়তা। বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ডের অধীনে আলাদা আলাদা নামে আছে ইএলএসএস। নাম দেখে সব সময় বোঝা যায় না প্রকল্পটি কর সাশ্রয়কারী প্রকল্প কি না। অসুবিধা হলে এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন: রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলেন তরুণী
ইএলএসএস প্রকল্পে সংগৃহীত অর্থের পুরোটাই লগ্নি করা হয় ইক্যুইটিতে। অর্থাৎ ঝুঁকির প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে। তবে যেহেতু এই লগ্নি অন্ততপক্ষে তিন বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য খাটানো হয়, অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গিয়েছে, এর গড় রিটার্ন অন্য অনেক প্রকল্পের তুলনায় বেশিই হয়। এ ছাড়া কর বাবদ সুবিধা তো আপনি গোড়াতেই পেয়ে যাচ্ছেন। আপনি যদি ৩০.৯% করের আওতায় পড়েন, তবে ১ লক্ষ টাকায় আপনার প্রকৃত লগ্নি দাঁড়ায় ৬৯,১০০ টাকা। এ ছাড়াও আছে আরও বেশ কয়েকটি সুবিধা। এগুলি হল:
১) তিন বছর বা তার পরে বিক্রি করে কোনও লাভ হলে তার উপর কোনও কর দিতে হয় না।
২) কর দিতে হয় না ডিভিডেন্ডেও।
৩) এক লপ্তে অথবা কিস্তিতে (এসআইপি) জমানো যায়।
৪) তিন বছর পরে তুলে নিয়ে আবার নতুন করে লগ্নি করে ফের কর বাঁচানোর সুবিধা নেওয়া যায়।
৫) ন্যূনতম লক-ইন মেয়াদ।
৬) আয়ের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। ভাল বাজারে আয় অতি আকর্ষণীয় জায়গায় পৌঁছতে পারে।
৭) তিন বছর মেয়াদ শেষে আয় মন মতো না-হলে আরও কিছু দিন ধরে রাখা যায় ন্যাভ বাড়ার আশায়।
৮) কর বাঁচানোর প্রয়োজন না- থাকলেও লগ্নি করা যায় এই প্রকল্পে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, ইএলএসএস প্রকল্পের সুবিধা অনেক। বাজারজনিত ঝুঁকি থাকলেও বড় মেয়াদে এস আই পি পথে লগ্নি করলে ঝুঁকি অনেকটাই বাগে রাখা যায়। যদিও শেয়ার-সূচক এখন কম-বেশি সর্বকালীন উচ্চতায়, তবুও বিশেষজ্ঞদের আশা, মাঝেমধ্যে সংশোধন হলেও বাজার আগামী দিনে আরও উপরে যাবে। পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের ফলে বাজার খুশি। নোট বাতিলের প্রতিকূল প্রভাব এক রকম কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। অপেক্ষা এখন ভাল বর্ষার। বর্ষা যদি স্বাভাবিক হয়, তবে সূচকের আরও ১০-১৫% উপরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এই কথা মাথায় রেখে ইকুইটি ফান্ডে লগ্নি করা যেতেই পারে। তা হলে আর অপেক্ষা কেন? সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে পুরোটা না-হোক, দেড় লাখের একাংশ ইএলএসএস প্রকল্পে লগ্নি করা যেতেই পারে।
এক নজরে কিছু ইএলএসএস প্রকল্প
প্রকল্পের নাম সূচনা নিট সম্পদ গত এক বছরে (কোটি টাকা) রিটার্ন (%)
• অ্যাক্সিস লং টার্ম ইক্যুইটি ২০০৯ ১১,৪৯১ ২০.৩৪
• রিলায়্যান্স ট্যাক্স সেভার ২০০৫ ৬,৯১৬ ৩২.২৬
• এইচডিএফসি ট্যাক্স সেভার ১৯৯৬ ৫,৮০১ ৩৫.৭৮
•
আইসিআইসিআই প্রু ১৯৯৯ ৪,০১৪ ২৭.৬৬
লং টার্ম ইক্যুইটি
• ফ্র্যাঙ্কলিন ট্যাক্স শিল্ড ১৯৯৯ ২,৬৫৭ ২২.৩৮
•
আইডিএফসি ট্যাক্স ২০১৩ ৫১৯ ২৮.৯৫
অ্যাডভান্টেজ
• ইউটিআই লং টার্ম ইক্যুইটি ১৯৯৯ ৭৫০ ২৫.৪০
তথ্যসূত্র: www.valueresearchonline.com
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy