Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ভোটের পাতে মুরগি, পৌষ মাস পোলট্রির

পোলট্রি শিল্প মহলের হিসেব, সাধারণত রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটাতে সপ্তাহে গড়ে ২.৮০ কোটি কেজি মুরগির মাংস লাগে। এ রাজ্য থেকে মুরগি যায় ঝাড়খণ্ড, বিহার, অসমেও।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

দু’দশক আগে পর্যন্তও ব্রিগেডের জনসভার সকালে সমর্থকদের বাড়ি থেকে রুটি-তরকারি সংগ্রহ করতে দেখা যেত রাজনৈতিক দলের কর্মীদের। কয়েক বছরের মধ্যে সেই মেনু বদলে যায় ডিম-ভাতে। এখন তা আরও ‘দামি’ হয়েছে। ব্রিগেডের সভায় সমর্থকদের ঢালাও মাংস-ভাত খেতেও দেখা গিয়েছে ইদানিং। এই রেওয়াজ বজায় রেখে ভোটের এবং গণনার দিনগুলিতেও যে মুরগির চাহিদা বাড়বে, তার আঁচ আগেই পেয়ে গিয়েছেন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। সে কারণেই এপ্রিল ও মে মাসে যাতে জোগানে কোনও টানাটানি না হয়, তার জন্য পোলট্রিগুলিকে আগে থেকেই তাগাদা দেওয়া শুরু করেছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের অনুমান, ভোটের মরসুমে সাধারণ সময়ের তুলনায় অন্তত ২৫% বেশি মুরগি লাগতে পারে।

পোলট্রি শিল্প মহলের হিসেব, সাধারণত রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটাতে সপ্তাহে গড়ে ২.৮০ কোটি কেজি মুরগির মাংস লাগে। এ রাজ্য থেকে মুরগি যায় ঝাড়খণ্ড, বিহার, অসমেও। ভোটের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ওই রাজ্যগুলিতেও মুরগির চাহিদা বাড়বে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে পোলট্রিগুলি। সে ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে ১.৭ কোটি করে গোটা মুরগি লাগতে পারে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এক একটি মুরগির গড় ওজন কম-বেশি দুই থেকে আড়াই কেজি। সেই হিসেবে সাড়ে তিন লক্ষ কেজির বেশি মুরগি লাগতে পারে প্রতি সপ্তাহে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এবং আবহাওয়া ভাল থাকলে সেই চাহিদা আরও বাড়বে। সেই অনুযায়ী জোগান দিতেই এখন ঘাম ছুটছে পোলট্রি মালিকদের।

পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের সভাপতি মদনমোহন মাইতি বলেন, ‘‘ভোটের সময়ে মাংসের চাহিদা বাড়ে অনেকটাই। তাই মার্চ থেকেই খামারগুলিকে মোট উৎপাদনের অন্তত ২৫% বেশি মুরগি পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।’’ তিনি জানান, ডিম ফোটার পর থেকে মুরগিকে মাংস খাওয়ার উপযুক্ত করে তুলতে সময় লাগে ৪০-৪৫ দিন। তাই আগে থেকে হিসেব কষে শুরু হয়েছে তৎপরতা।

১১ এপ্রিল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজ্যে ভোট সাতটি পর্যায়ে। তার পর ২৩ মে গণনা। রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার এখন তুঙ্গে। এই সময়টায়, বিশেষ করে ভোটের দিনে মধ্যাহ্নভোজে কর্মীদের ‘প্রত্যাশা’ এখন বেড়েছে। পাশাপাশি, সরকারি ভোট কর্মী থেকে পুলিশ, আধা সামরিক বাহিনীর দিন-রাতের মেনুতেও মুরগির মাংস লাগবে বলেই ধরে রেখেছেন খামার মালিকরা। আবার ফল বেরনোর পর বিজয় উৎসব, পিকনিক তো আছেই! তাই মে মাসের শেষ পর্যন্ত মাংসের জোগানে যাতে কোনও ঘাটতি না হয়, তার প্রস্তুতি তুঙ্গে।

রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিগমের হরিণঘাটা বিপণিগুলিতেও মাংসের জোগান বাড়ানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। নিগমের এমডি গৌরীশঙ্কর কোনার জানিয়েছেন, ভোটের সময় তাঁদের বিপণিগুলিতে মাংসের চাহিদা অন্তত দেড় গুণ বেড়ে যাবে বলে তাঁরা ধরে রেখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chicken Poultry Farm Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE