Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
তহবিল পাঁচ কোটির

বন্ধ খনিতে বেতন কাদের, তালিকা করছে নিগম

রাজ্যের বন্ধ পাঁচটি কয়লা খনির শ্রমিক-কর্মীদের বেতন দেবে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। এবং কারা বেতন পাবেন, এখন তাঁদের নামের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজই শুরু করেছেন নিগম কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যতদিন না কয়লা তোলার জন্য নতুন সংস্থা বাছাইয়ের কাজ সাঙ্গ হচ্ছে, ততদিন তাঁদের বেতন দিয়ে যাবে নিগম। প্রাথমিক ভাবে এই খাতে পাঁচ কোটি টাকার একটি তহবিলও তৈরি করা হচ্ছে।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

রাজ্যের বন্ধ পাঁচটি কয়লা খনির শ্রমিক-কর্মীদের বেতন দেবে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। এবং কারা বেতন পাবেন, এখন তাঁদের নামের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজই শুরু করেছেন নিগম কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যতদিন না কয়লা তোলার জন্য নতুন সংস্থা বাছাইয়ের কাজ সাঙ্গ হচ্ছে, ততদিন তাঁদের বেতন দিয়ে যাবে নিগম। প্রাথমিক ভাবে এই খাতে পাঁচ কোটি টাকার একটি তহবিলও তৈরি করা হচ্ছে।

নিগমের এক কর্তা জানান, খনিগুলিতে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের সবার দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বেঙ্গল এমটা আগে খনিগুলি থেকে কয়লা তুলত। তারা হাজারেরও বেশি কর্মীর নামের একটি তালিকা পাঠিয়েছে। ওই তালিকা খতিয়ে দেখার পরে যাঁরা আপাতত নিগমের অধীনে থাকার যোগ্য হবেন, তাঁদেরই বেতন দেওয়া হবে। বাকিদের দায়িত্ব নিগম নেবে না।’’

বিভিন্ন সূত্রে খবর, নিগমের হাতে থাকা ঝাড়খণ্ডের পাচোয়াড়া (উত্তর), বর্ধমান-বীরভূমের বড়জোড়া, গঙ্গারামচক, গঙ্গারামচক-ভাদুলিয়া— এই খনিগুলিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় হাজার চারেক কর্মী কয়লা তোলার কাজে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই অসংগঠিত শ্রমিক। বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থার অধীনে তাঁরা কাজ করতেন। ফলে এঁদের দায়িত্ব নিগম নেবে না। সরাসরি মূল সংস্থার অধীনে যাঁরা কমর্রত ছিলেন, মূলত তাঁদেরকেই এখন বেতন দিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

নিগম কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, যেহেতু খনি শিল্পে তাঁদের কোনও অভিজ্ঞতা নেই, তাই আর এক সরকারি সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন নিগমকে এই বিষয়গুলি দেখার জন্য পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এখন দুই নিগম কর্তৃপক্ষ শ্রমিক-কর্মীদের নামের ওই চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করছে।

গত বছর খনি বণ্টন বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে রাজ্যের পাঁচটি কয়লা খনির বণ্টনও বাতিল হয়ে যায়। গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওই খনিগুলি থেকে কয়লা তোলা হলেও, তারপরে সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন খনিগুলিতে কর্মরত কয়েক হাজার কর্মী। ওই খনিগুলি থেকে কয়লা তোলার দায়িত্বে ছিল বেঙ্গল এমটা। কিন্তু বরাত বাতিল হয়ে যাওয়ায় তারাও জানিয়ে দিয়েছে যে, বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে সংস্থা কর্তৃপক্ষের কোনও দায়িত্ব নেই। ফলে গত দেড় মাস কর্মহীন হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, অসংগঠিত শ্রমিক হওয়ায় তাঁদের কথা কেউ ভাবছেই না।

তবে রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়া কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না। সুপ্রিম কোর্টেরও সেই রকমই নির্দেশ রয়েছে। সেখানেও বলা হয়েছে, শ্রমিক-কর্মীদের বিনা কারণে ছাঁটাই করা যাবে না। আর সেই নির্দেশমতো নিগম পুরনো খনিতে শ্রমিকদের নিয়েই কাজ চালাতে চাইছে। নিগমের দাবি, বেঙ্গল এমটার অধীনে কাজ করত তুলনায় কম কর্মী। বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন। তবে অসংগঠিত শ্রমিকরাও যাতে বঞ্চিত না হন, সে দিকে নজর রাখছে নিগম। তাই কয়লা তোলার জন্য দরপত্র চেয়ে নতুন যে সংস্থা বাছাই করা হবে, তারা যাতে পুরনো ব্যবাস্থাতেই কয়লা তুলতে রাজি হয়, সে বিষয়ে শর্ত রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE