—প্রতীকী চিত্র।
ফের চড়তে শুরু করেছে সোনার দাম। ভারত-সহ বিশ্ব জুড়েই। এক মাসে কলকাতায় ১০ গ্রাম (২৪ ক্যারাট) পাকা সোনার বাট বেড়েছে প্রায় ৪৫০০ টাকা। অক্টোবরের গোড়ায় দাম ছিল ৫৭,২০০ টাকা। সোমবার পৌঁছেছে ৬১,৭০০ টাকায়। ব্যবসায়ী মহলের ধারণা, অনিশ্চয়তা চাহিদা বাড়াচ্ছে। ফলে দাম উঠছে। যুদ্ধের বাজারে আগামী দিনে তা আরও চড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করছেন তাঁরা। আর কিছু দিন পরেই শুরু হচ্ছে বিয়ের মরসুম। এই সময় আচমকা গয়নার দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের একাংশ বিপাকে। তবে বিক্রেতাদের আশা, এতে গয়নার চাহিদায় ভাটা পড়বে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার আগেই পশ্চিম এশিয়া উত্তপ্ত হয়েছে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের সংঘর্ষে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধের বাজারে শেয়ারের মতো লগ্নির ক্ষেত্র অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অনেকে আঁকড়ে ধরছে সোনাকে। বিনিয়োগের জগতে যাকে সব থেকে সুরক্ষিত লগ্নির জায়গা বলে মনে করা হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে তার দাম। এ দিন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স ২৪ ক্যারাট সোনা ছিল ১৯৯৪ ডলার।
গয়না ব্যবসায়ীদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের (জিজেডিসি) ডিরেক্টর দীনেশ জৈন বলেন, “দাম বাড়ছে বটে। তবে এখনই তাতে বিক্রি কমার আশঙ্কা নেই। শুধু পাকা সোনা নয়, সোনার গয়নার চাহিদাও আপাতত বাড়বে।’’ গয়নার চাহিদা কেন বাড়বে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সংগঠনের আর এক ডিরেক্টর সমর দে বলেন, “নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব বাজারে আউন্সে পাকা সোনা ২০৩০ ডলারে উঠবে বলে ধারণা। ওই সময় ভারতে ধনতেরস। সামনে রয়েছে বিয়ের মরসুমও। তাই গয়না বিক্রি বাড়বে বলেই বিশ্বাস। বিয়ের গয়না কেনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বিদেশিদের গয়না কেনায় উৎসাহিত করতে তাঁদের কেনাকাটায় জিএসটি ছাড় দিতে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’ সেনকো গোল্ডের এমডি শুভঙ্কর সেনও বলেন, “আশা করছি, এ বার ধনতেরসে বিক্রি ১০%-১৫% বাড়বে।’’ শুধু বড় নয়, ছোট দোকানগুলিতেও ক্রেতারা আসছেন বলে জানান বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, জানুয়ারিতে বিয়ে তারিখ পড়েছে, এমন বহু ক্রেতা গয়নার দাম আরও কমার অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা হাত কামড়াচ্ছেন। অনেকে তড়িঘড়ি কিনতে ছুটছেন।
এ দিকে, চড়া দামের বাজারে গয়নার কাটতি বাড়াতে ইন্ডিয়া জুয়েলারি শপিং ফেস্টিভাল নামে বিশেষ প্রকল্প চালু করেছে জিজেডিসি। সমরবাবু জানান, তাতে দেশের ২০০টি শহরে দু’হাজারেরও বেশি বিপণি অংশ নিচ্ছে। বিক্রির বিশেষ প্রকল্প এটি। মূলত সাধারণ ক্রেতার কথা ভেবে করা। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। দীনেশবাবু বলেন, “আশা করছি প্রকল্পের হাত ধরে ১.২০ লক্ষ কোটি টাকার গয়না বিক্রি করা সম্ভব হবে।’’
সোনার দামের এই রমরমা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে মিউচুয়াল ফান্ডের গোল্ড ফান্ড ও গোল্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) লগ্নিতেও। মিউচুয়াল ফান্ড বিশেষজ্ঞ নিলাঞ্জন দে জানান, “গত এক মাসেই ওই দুই প্রকল্পে গড়ে লগ্নি বেড়েছে ৩ শতাংশ। পাশাপাশি যে সব মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে সোনাতেও লগ্নি করা হয়, চাহিদা বাড়ছে সেই সব ‘মাল্টি অ্যাসেট’ প্রকল্পেরও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy