বিনিয়োগ টানা ও সম্প্রসারণের দৌড়ে বড় বড় রেস্তোরাঁকে অনেক পিছনে ফেলে দিচ্ছে চটজলদি খাবারের রেস্তোরা।ঁ দ্রুত লাভের আশায় এই ব্যবসায়ে যেমন টাকা ঢালছে দেশি-বিদেশি প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থা, ঠিক তেমন করেই এ সব রেস্তোরাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে দ্বিধা করছেন না মাঝারি মাপের বিনিয়োগকারীরা।
আর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পথে হেঁটে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ছকে নিচ্ছে দেশের অন্যান্য সংস্থার মতো এ রাজ্যের রেস্তোঁরাগুলিও। ‘কুইক সার্ভিস রেস্টোর্যান্ট’ (কিউ এস আর) বা চটজলদি খাবারের ব্যবসা বাড়াচ্ছে সিরাজ, স্পেশালিটি রেস্টোর্যান্টস-এর পাশাপাশি মাত্র দেড় বছরের পুরনো সংস্থা রয়্যাল লেবানিজ।
বদলে যাওয়া জীবনধারার উপর ভর করেই বাড়ছে চটজলদি খাবারের রেস্তোরাঁ ব্যবসা। বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সমীক্ষা বলছে, ইতিমধ্যেই এ ধরনের রেস্তোঁরার ব্যবসা ৫০০০ কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে। এবং এই রমরমা শুধুই ম্যাকডোনাল্ডস ও কে এফ সি-র মতো বিদেশি ব্র্যান্ডগুলির সৌজন্যে নয়। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, বড় শহরগুলির পাশাপাশি ছোট ও মাঝারি শহরেও চটজলদি খাবারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরগুলিতেও পরিবার পিছু চটজলদি খাবারের বার্ষিক খরচ ৫০০০ টাকা ছুঁয়েছে। বড় শহরে এই অঙ্ক প্রায় ৭ হাজার টাকা।
এই বিপুল বাজারের দিকে চোখ রেখে দেশি-বিদেশি বড় সংস্থার সঙ্গে মাঠে নামছে স্থানীয় সংস্থাগুলিও। দেড় বছর আগে ব্যবসা শুরু করেছে রয়্যাল লেবানিজ। এক কোটি টাকা লগ্নির বদলে বার্ষিক ব্যবসার পরিমাণ এখন প্রায় ৪ কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চালু হয়েছে ৫টি বিপণি। সংস্থা কর্ণধার সুশোভন দাসের দাবি, ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলেই সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। সাধারণ ভাবে একটি বিপণি চালু করতে ২০-২৫ লক্ষ টাকা লাগে। যার খরচ ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে ভাগ করে নেবে রয়্যাল লেবানিজ। জায়গা ও কর্মীর দায়ও নেবে সংস্থা। তিনি বলেন, “লগ্নির বদলে নির্দিষ্ট টাকার অঙ্ক প্রতি মাসে পাবেন ফ্র্যাঞ্চাইজি। ঝুঁকি কম থাকবে তাদের। আমাদেরও খরচের বোঝা বাড়বে না।”
ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল অনুসরণ করে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সাজিয়েছে সিরাজ রেস্তোরাঁ-ও। নয়া ব্র্যান্ড ‘লাজিজ’-এর হাত ধরে কিউ এস আর ব্যবসা শুরু করেছে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের ১০ শহরে চালু হচ্ছে এই ব্র্যান্ডের ১৬২টি রেস্তোরা।ঁ এর মধ্যে ৭৫টি রেস্তোরাঁ নিজেদের হাতে রেখে বাকিগুলি ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থা।
ইন্ডিয়ান হসপিটালিটি রিভিউ-এর তথ্য অনুযায়ী দেশি ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ সংস্থাগুলির সম্প্রসারণের বহর নজর-কাড়া। গত বছরেই ২৫০ বিপণির সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেছে মুম্বইয়ের সংস্থা জাম্বো কিং। বারবিকিউ নেশন ও নিরুলাও রেস্তোরাঁর সংখ্যা তিন গুণ বাড়াতে চায়। ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে লাফিয়ে বাড়ছে ব্যাংস ইন্ডিয়া ও কাটি জোনের মতো চটজলদি খাবারের রেস্তোরা।ঁ দুই সংস্থার দাবি, খাবারের দোকানে লগ্নির আগ্রহ বাড়ছে। তার অন্যতম কারণ কিউ এস আর ব্যবসায় দ্রুত লাভের সম্ভাবনা ও কম ঝুঁকি।
ভারতে এ ধরনের রেস্তোরাঁর ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত অবশ্য বিদেশি ব্র্যান্ডগুলির দৌলতেই। আর লাভের টানে সম্প্রসারণ করতেও পিছপা হচ্ছে না তারা। ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতে ম্যাক তৈরি করবে নতুন ২৫০টি রেস্তোরা।ঁ একই সময়ে ডমিনোজ চালু করবে আরও ২৭০টি রেস্তোরা।ঁ সাবওয়ে-র পরিকল্পনায় রয়েছে ৭০০-র বেশি নয়া বিপণি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy