Advertisement
০১ মে ২০২৪
Unemployment

বেকারত্ব ষোলো মাসে সর্বাধিক

রবিবার উপদেষ্টা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই) জানিয়েছে, ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৮.৩০ শতাংশে। ১৬ মাসে সব থেকে বেশি।

নভেম্বরে দেশে বেকারত্ব ৮% ছুঁয়েছিল। ডিসেম্বরে তার সাপ্তাহিক হারও ঘোরাফেরা করছিল ৮ শতাংশের উপরে।

নভেম্বরে দেশে বেকারত্ব ৮% ছুঁয়েছিল। ডিসেম্বরে তার সাপ্তাহিক হারও ঘোরাফেরা করছিল ৮ শতাংশের উপরে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১২
Share: Save:

কিছুটা আশা জাগিয়ে দেশে কর্মসংস্থান বাড়ল ডিসেম্বরে। কিন্তু আরও বেশি মানুষ কাজ খোঁজার জন্য বেরিয়ে পড়তেই মাথা তুলল বেকারত্ব। ফলে বছর শুরুর দিনেই ফের ঘনাল আশঙ্কার মেঘ।

রবিবার উপদেষ্টা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই) জানিয়েছে, ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৮.৩০ শতাংশে। ১৬ মাসে সব থেকে বেশি। শুধু শহরাঞ্চল ধরলে, তা পেরিয়েছে ১০%। গ্রামাঞ্চলও উদ্বেগমুক্ত নয়। তবে সেখানকার ৭.৪৪% হার তুলনায় একটু কম।

প্রশ্ন উঠেছে, আর্থিক কর্মকাণ্ড যখন পুরোপুরি খুলে গিয়েছে, তখন বেকারত্ব চড়ছে কেন? বিশেষত মোদী সরকার যখন ভারতীয় অর্থনীতির ভিত পোক্ত বলে দাবি করছে প্রতিনিয়ত। বার্তা দিচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতি যতই সঙ্কটে থাকুক, অন্যান্য বহু দেশের তুলনায় ভারতের অবস্থা অনেক ভাল। শিল্পে অগ্রগতি বহাল।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, সমস্যা এখানেই। অর্থনীতি যত চাঙ্গা হচ্ছে, তত বেশি মানুষ কাজ খুঁজতে নামছেন। অথচ বাজারে অত কাজ তৈরি হচ্ছে না। তাই কর্মসংস্থান যতই মাথা তুলুক বেকারত্বে রাশ টানা কঠিন হচ্ছে।

সিএমআই-র এমডি মহেশ ব্যাস সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, বেকারত্ব বৃদ্ধির এই ঘটনা যতটা খারাপ বলে মনে হচ্ছে, ততটা নয়। কারণ, গত এক বছরের মধ্যে ডিসেম্বরেই কাজের বাজারে অংশ নিতে আগ্রহীদের ভিড় বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, ৪০.৪৮% পর্যন্ত। ওই মাসে কর্মসংস্থানের ৩৭.১% হারও এক বছরে সর্বোচ্চ।

তবে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বেকারত্বের মোকাবিলা যে মোদী সরকারের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ, মানছেন বিশেষজ্ঞেরা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অবিলম্বে দেশে লগ্নি বৃদ্ধি জরুরি। না হলে সমস্যা বাড়বে। বিরোধী কংগ্রেসও নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই দাম এবং কাজের প্রশ্নে আক্রমণ ধার বাড়াচ্ছে।

পটনা-আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের মতে, উন্নত দেশগুলিতে মন্দার আশঙ্কা ভারতের রফতানি কমাচ্ছে। যা বহু মানুষের চাকরি হারানোর অন্যতম কারণ। চড়া সুদের কারণে ছোট এবং অসংগঠিত সংস্থাগুলি ঋণ নিয়ে পুঁজির সংস্থান করতে পারছে না। এতেও ভুগছে কাজের বাজার। আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের দাবি, শহুরে বেকারত্বের ঊর্ধ্বগতি আশঙ্কাজনক। বিশেষত বিশ্বের একাংশে নতুন করে কোভিড বাড়ায় অর্থনীতির ঝুঁকিও যখন বাড়ছে। তাঁর দাবি, হয় শ্রম মন্ত্রক স্পষ্ট পরিসংখ্যান দিক, নয়তো বাস্তব সমস্যা স্বীকার করে সমাধান করুক।

নভেম্বরে দেশে বেকারত্ব ৮% ছুঁয়েছিল। ডিসেম্বরে তার সাপ্তাহিক হারও ঘোরাফেরা করছিল ৮ শতাংশের উপরে। এক বার তা ৯% পেরিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তখনই আঁচ ছিল ২০২২-এর শেষে কাজের বাজার নিয়ে অস্বস্তি আরও বাড়তে চলেছে।

অনির্বাণের মতো বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, শুধু কর আদায় বৃদ্ধি বা শেয়ার বাজারের দৌড় অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে না। বরং তা ভারতে বাড়তে থাকা আয় বৈষম্যের রিপোর্টগুলির সাক্ষী। একাংশের প্রশ্ন, বেশি মানুষ কাজ চাইতেই বেকারত্ব ১৬ মাসের সর্বোচ্চ হল। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে থাকলে কাজের বাজারে ভিড় তো আরও বাড়বেই। তখন কী হবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Unemployment Financial Burden Jobless
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE