পেমেন্টস ব্যাঙ্ক, স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের পরে এ বার বড় অঙ্কের ঋণ লম্বা মেয়াদে দেওয়ার জন্য আলাদা ধাঁচের ব্যাঙ্ক খুলতে চায় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কিং মহলের ধারণা, আসলে নতুন করে পুরনো পথেই ফিরতে চায় আরবিআই। কারণ, স্বাধীনতার পরে পরিকাঠামো প্রকল্পে বড় ঋণ দেওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল আইডিবিআই, আইসিআইসিআই, আইএফসিআই-এর মতো উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্কের ধারণা, এ বার নতুন মোড়কে তা-ই চালু করতে চায় তারা।
সম্প্রতি ১,০০০ কোটি টাকা মূলধনে এ ধরনের ব্যাঙ্ক খোলার জন্য প্রস্তাবনাপত্র প্রকাশ করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, যার ওপর সাধারণ মানুষ মতামত জানাতে পারবেন আগামী ১৯ মে পর্যন্ত। নতুন ব্যাঙ্ক চালু করার উদ্দেশ্য মূলত সেই সব বড় মাপের পরিকাঠামো প্রকল্পের জন্য ঋণের সংস্থান করা, যেগুলি শেষ হতে বেশ দেরি হয় বলে টাকা জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, বহু সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কই এ ধরনের বড়সড় প্রকল্পে ঋণ দিতে আগ্রহী নয়।
নতুন মোড়
•
প্রস্তাবনাপত্র পেশ আরবিআইয়ের
•
জনসাধারণের মত নেওয়া হবে ১৯ মে পর্যন্ত
•
মূলধন ১,০০০ কোটি বা তার বেশি
•
লক্ষ্য বড় প্রকল্পে লম্বা মেয়াদে ঋণ দেওয়া
•
নজরে পরিকাঠামো প্রকল্প
•
ঋণদাতা সংস্থাকেও তহবিল জোগাবে এই ব্যাঙ্ক। উদ্দেশ্য, তাদের ছোট-মাঝারি শিল্পে বড় ঋণ দিতে সামিল করা
•
ঋণ কেনা-বেচার ব্যবসায় নামবে নতুন ব্যাঙ্ক
•
তহবিল জোগাড় বড় মেয়াদের জমা থেকে, বাজারে শেয়ার ও ঋণপত্র ছেড়ে, আর্থিক সংস্থার ঋণ নিয়ে
আরবিআই তার প্রস্তাবে বলেছে, এ ধরনের ধার শোধে দেরি হয় বলেই ব্যাঙ্কের ব্যালান্স শিটে তা খরচের খাতায় ধরা থাকে দীর্ঘ দিন। ফলে ওই ধরনের অনাদায়ী ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হওয়ার আশঙ্কায় ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে পিছিয়ে যায়। বিশেষ করে ইদানীং অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা নিয়ে ব্যাঙ্কগুলির দুশ্চিন্তা বাড়ায় গত বছর থেকেই ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এ ধরনের ঋণের দায়িত্ব দিয়ে আলাদা ধাঁচের ব্যাঙ্ক তৈরির পথেই হাঁটতে চেয়েছিল তারা। প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পরে উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্ক হিসেবে গড়া হয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আইডিবিআই), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্রেডিট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (আইসিআইসিআই), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিনান্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (আইএফসিআই)-র মতো প্রতিষ্ঠান। পরে সেগুলির মধ্যে থেকেই কয়েকটিকে কার্যত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক হিসেবে ঢেলে সাজা হয়। এখন আবার বড় প্রকল্পে ঋণ জোগাড় করতে সেই পুরনো ধাঁচের ব্যাঙ্ক খোলার পথেই আরবিআইও হাঁটতে চায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে ইঙ্গিত।
আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যাঙ্ক গড়তে আগেই পেমেন্টস ব্যাঙ্ক ও স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের লাইসেন্স দিয়েছে তারা। এগুলিতে অবশ্য মূলধন লাগে ১০০ কোটি টাকা। পেমেন্টস ব্যাঙ্কে গ্রাহকের সর্বোচ্চ জমা ১ লক্ষ টাকা। লক্ষ্য টাকা হস্তান্তর ও প্রত্যন্ত প্রান্তে পরিষেবা। রয়েছে ডেবিট কার্ড। দেওয়া হয় না ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড। স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট এলাকায় কৃষক, ছোট ব্যবসা, অসংগঠিত ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া ও আমানত জমা রাখার পরিষেবা দেয়। এ বার বড় প্রকল্পে ঋণ দিতেও আলাদা ব্যাঙ্ক চায় আরবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy