প্রতীকী ছবি।
ডলারের সাপেক্ষে রেকর্ড তলানিতে পৌঁছনো টাকার দর নিয়ে সোমবার দিনভর বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়ল মোদী সরকার। এ দিন ৫৪ পয়সা বেড়ে ১ ডলারের দর দাঁড়িয়েছে ৭৭.৪৪ টাকা। যা নিয়ে সকাল থেকেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালা কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন। ফেসবুকে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে পেট্রল-ডিজ়েলে ১০০ টাকা এবং রান্নার গ্যাসে ১০০০ টাকার লক্ষ্য ছুঁয়েছেন। এ বার ডলারে টাকার দরের ১০০-র দিকে হাঁটার পালা।’’ টাকার দর নিয়ে তোপ দেগেছে তৃণমূলও।
আমেরিকার মতো দেশে সুদ বাড়ায় সেখানে লগ্নি সরানোর হিড়িক পড়েছে। ফলে টানা পড়ছে শেয়ার বাজার। এ দিনও প্রায় ৩৬৫ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স নেমেছে ৫৪,৪৭০.৬৭ অঙ্কে। ডলারের চাহিদা বাড়ায় উঠছে তার দাম। বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর বক্তব্য, ‘‘টাকার দামের এতটা পতন মূল্যবৃদ্ধির সমস্যাকে আরও জটিল করবে। আমদানি খরচ বাড়বে, মাথাচাড়া দেবে কাঁচামালের দাম। তার জের পড়বে উৎপাদন খরচ ও পণ্যের দরে।’’ তবে তাঁর মতে, বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার এখন অনেকটাই মজবুত। ফলে টাকার দামকে বাগে আনতে খুব বেশি সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। যদিও আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের আশঙ্কা, টাকার দর পড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে পারে। ফলে কমতে পারে বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার। সার্বিক ভাবে অবস্থা না-শোধরালে রাজকোষ ঘাটতিও চড়তে পারে।
বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ৬০,৩০০ কোটি ডলার থেকে ক’সপ্তাহেই ৫৩,৬০০ কোটিতে নামায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাহুলও। তাঁর বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী দেশের আর্থিক ও সামাজিক সত্যিটা ‘সব সময়ে লুকিয়ে’ রাখতে পারবেন না। তাঁর দাবি, অন্য দিকে নজর না-ঘুরিয়ে সমাধানসূত্র খোঁজা জরুরি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে পড়তে থাকা টাকা নিয়ে যে মোদী ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ করতেন, টুইটে সে কথাও মনে করিয়েছেন তিনি। বলেছেন, টাকার দরে পতন রফতানির ক্ষেত্রে ভাল হলেও, তার জন্য পুঁজি দিয়ে তাদের সাহায্য করা জরুরি। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মোদী টাকার দর নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করতেন ও বলতেন এই ঘটনা দেশবিরোধী। অথচ প্রধানমন্ত্রী মোদী চুপ।’’
স্বাধীনতার পরে ভারত সব চেয়ে বড় আর্থিক সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর দাবি, ‘‘পরিস্থিতি কী ভাবে সামলানো সম্ভব, তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রক সম্পূর্ণ অন্ধকারে।’’ আর সূরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘মোদী সরকারের আমলে টাকা আইসিইউ-তে। বিজেপি-র ‘মাগদর্শক মণ্ডলের’ বয়সকেও ছাড়িয়েছে।’’ মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীর মতো বয়স্ক নেতাদের নিয়ে এই মণ্ডল গড়েছিল বিজেপি। লক্ষ্য, কেন্দ্রকে পরামর্শ দেওয়া। এই অবস্থায় কেন্দ্র বা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক টাকার দর সামলাতে কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy