অগস্টে দেশের বাজারে যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১৩ শতাংশেরও বেশি। তার উপরে শুরু হচ্ছে উৎসবের লম্বা মরসুম। বিক্রিবাটা যখন ভাল হওয়ার কথা। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিন্তা কমছে না গাড়ি শিল্পের। মাত্র এক মাসের মধ্যে জিএসটি-তে সেস সংশোধন, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই আগামী দিনে শুধু বৈদ্যুতিক ও বিকল্প জ্বালানির গাড়ি চালানো নিয়ে কেন্দ্রের ‘চাপ’ সমেত নানা কারণে চিন্তার ভাঁজ তাদের কপালে। ভাবনা, সব সামলে বিক্রির উজ্জ্বল ছবি আগামী দিনে ধরে রাখা যাবে কি না।
সোমবার গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম জানিয়েছে, অগস্টে যাত্রী গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ১১.৮%। কেজো গাড়ি (ইউটিলিটি ভেহিক্ল) ও ভ্যান ধরলে তা ১৩.৭৬%। জিএসটি-তে কর কমার দৌলতে দাম হ্রাস যার অন্যতম কারণ। কিন্তু সম্প্রতি আবার মাঝারি, বড় ও এসইউভি গাড়িতে সেস বাড়িয়েছে জিএসটি পরিষদ। যা খুশি করেনি গাড়ি শিল্পকে।
সিয়ামের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সুগত সেন বলেন, ‘‘গাড়ির চড়া করে ভারত প্রথম সারিতে।’’ তাঁদের দাবি, জিএসটি-র আগে ক্রমশ উৎপাদন শুল্ক বেড়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে ভ্যাটও এক-এক রকম বাড়ছিল। তাই তাঁদের আশা ছিল যে, জিএসটিতে অনেক সমস্যার সুরাহা হবে। কিন্তু তা চালুর এক মাসের মধ্যেই ফের সেস বেড়েছে বড় ও দামি গাড়ির।
তাঁদের মতে, এ দেশ থেকে গাড়ির রফতানি বৃদ্ধি পাওয়া জরুরি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এখন বড় গাড়ির চল বেশি। তা তৈরি তবেই লাভজনক হবে, যদি দেশেও তার বিক্রি বাড়ে। সেস বৃদ্ধি সেই সম্ভাবনায় কিছুটা জল ঢালতে পারে। এর আগে মার্সিডিজ ইন্ডিয়ার কর্তা রোল্যান্ড ফোলজারও বলেছিলেন, দাম কমলে দূষণরোধী আধুনিক প্রযুক্তি ভারতে আনা সহজ হবে। হোন্ডা সিয়েল কারের অন্যতম কর্তা জ্ঞানেশ্বর সেনেরও মতে, সেস না-বাড়লে বৃদ্ধি আরও ভাল হত।
সম্প্রতি কেন্দ্র বলেছে, ২০৩০ সালের পরে শুধু বৈদ্যুতিক গাড়ির কথা। পেট্রোল-ডিজেল গাড়ি নির্দিষ্ট সময়ের পরে আর রেয়াত করা হবে না বলেও জানিয়েছে তারা। এ প্রসঙ্গে সুগতবাবু বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট রোডম্যাপ জরুরি। নইলে গাড়ি সংস্থাগুলি সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় পড়বে। পিছিয়ে যাবে হাত খুলে লগ্নি থেকে।’’
বস্তুত নানা সময়ে কেন্দ্রের নানা ভাবনার প্রেক্ষিতেই এই রোডম্যাপের কথা বলেছে গাড়ি শিল্প। যেমন, এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির কথা বলা হচ্ছে। এর আগে ‘হাইব্রিড’ গাড়ি তৈরিতে সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও, সম্প্রতি সে সব প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাই বারবার বদলাতে থাকা নীতির এই চ্যালেঞ্জ সামলে ব্যবসা বৃদ্ধির হার ধরে রাখা নিয়ে সংশয়ী গাড়ি শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy