Advertisement
১০ জুন ২০২৪

পুরো মজুরি না-দিলে শাস্তি নয় সংস্থাকে

কোন আইনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পুরো মজুরির নির্দেশিকা জারি করেছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে পৃথক হলফনামায় তা-ও জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল অবশ্য বলেন, শ্রমিকদের আর্থিক সঙ্কটের কথা ভেবেই সাময়িক ভাবে ওই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল কেন্দ্র। পরে সেই নির্দেশিকা ফেরানোও হয় ১৮ মে থেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০৬:৫০
Share: Save:

লকডাউনের সময়ে ৫৪ দিন কর্মীদের পুরো মজুরি না-দেওয়ার জন্য অন্তত জুলাই পর্যন্ত কোনও বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বারণ করল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে এই নির্দেশ দিল তারা। যা শুনে কর্মী সংগঠনের প্রশ্ন, নিজেদের ইচ্ছেয় নয়, সরকারি নির্দেশ মেনেই তখন কাজে যেতে পারেননি শ্রমিকেরা। এই পরিস্থিতিতে সংস্থাকে বেতন দিতে বাধ্য করা না-গেলে, সরকার সেই মজুরির দায় নেবে কি?

নির্দেশে শীর্ষ ব্যাঙ্কের তিন বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, শিল্প, শ্রমিক পরস্পরকে ছাড়া চলতে পারে না। তাই নিজেদের মধ্যে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়াই কাঙ্খিত। প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করতে পারেন প্রত্যেক রাজ্যের শ্রম কমিশনার।

২৯ মার্চ এক নির্দেশিকায় সব সংস্থাকে লকডাউনের সময়ে কর্মীদের পুরো মজুরি দিতে বলেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ওই সময়ে যাতে কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করা না-হয় কিংবা কোপ না-পড়ে কারও বেতনে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়ে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রম সচিব। কিন্তু কোন এক্তিয়ারে কেন্দ্র এ ভাবে মজুরি মেটানোর কথা বলে, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালতে যায় কিছু সংস্থা।

কোন আইনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পুরো মজুরির নির্দেশিকা জারি করেছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে পৃথক হলফনামায় তা-ও জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল অবশ্য বলেন, শ্রমিকদের আর্থিক সঙ্কটের কথা ভেবেই সাময়িক ভাবে ওই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল কেন্দ্র। পরে সেই নির্দেশিকা ফেরানোও হয় ১৮ মে থেকে।

ট্রেড ইউনিয়ন সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের বক্তব্য, “এমন নয় যে, কর্মীরা ইচ্ছেমতো কাজে না-যাওয়ায় মজুরি পাননি। তাঁরা যেতে পারেননি সরকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় আইনে লকডাউন ঘোষণা করায়। তা হলে ওই সময়ে তাঁদের বেতনের দায় কার? সরকার তা দিতে সংস্থাগুলির জন্য নির্দেশিকা জারি করলেও, বাস্তবে তা কার্যকরের চেষ্টা হয়নি। দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে অধিকাংশ সংস্থাও। এই অবস্থায় কেন্দ্র মজুরির একাংশের দায় নিতে পারত না কি?” এখন দশচক্রে শ্রমিকদের বেঁচে থাকার অধিকারই অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, অভিযোগ তাঁর। ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকেরা কী ভাবে আলোচনা করবেন, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “লকডাউনের জেরে জীবিকা, আশ্রয় সব খুইয়ে বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। মজুরি দূর, সম্মানটুকুও পাননি। এখন শিল্পের প্রয়োজনে যেন জোর করে তাঁদের প্রবল ঝুঁকির মুখে ফেরত পাঠানো না-হয়।” এ নিয়ে শ্রমমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme court workers lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE