বন্ধন কর্ণধার চন্দ্রশেখর ঘোষ।
পুরোদমে ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু করে দিল বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস। দেড় বছরের মধ্যে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শের জন্য উপদেষ্টা বহুজাতিক ডেলয়েট-কে নিয়োগ করল তারা। একই সঙ্গে, ব্যাঙ্ক চালুর প্রাথমিক কাজগুলি সেরে ফেলতে ৩০ জনের একটি বিশেষ দলও তৈরি করেছে সংস্থাটি।
সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, “ইতিমধ্যেই সংস্থার ৩০ জনকে নিয়ে একটি দল গড়েছি। যাঁরা ব্যাঙ্ক চালুর জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাজগুলি করবেন। তা ছাড়া, ডেলয়েটের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। সেই অনুযায়ী তারা আমাদের সংস্থায় আরও ১৫ জনের একটি দল পাঠাবে। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালুর জন্য ১৮ মাস ধরে যাবতীয় পরামর্শ দেবেন তাঁরা।”
সম্প্রতি অম্বানী-বিড়লা-বজাজদের ‘টপকে’ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘর থেকে ব্যাঙ্ক খোলার ছাড়পত্র (লাইসেন্স) ছিনিয়ে এনেছে বন্ধন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, নিয়ম মেনে সব ঠিকঠাক এগোলে, বছর দেড়েকের মধ্যেই ব্যাঙ্ক হতে চলেছে চন্দ্রশেখরবাবুর হাতে গড়া ওই ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা। শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঘোষণা অনুযায়ী, ২৫টি সংস্থার মধ্যে কড়া প্রতিযোগিতায় লাইসেন্স জুটেছিল মাত্র দু’টির কপালে। তারই একটি বন্ধন। তাদের চালু করা নতুন ব্যাঙ্কের নাম হবে বন্ধন ব্যাঙ্ক। সদর দফতরও হবে কলকাতায়। কিছু দিন আগেই চন্দ্রশেখরবাবু জানিয়েছিলেন, ব্যাঙ্কিং ব্যবসায় শুরুতেই (প্রথম পর্যায়ে) ছ’শোটির মতো শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। কী ভাবে তার মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবসা পুরোদস্তুর চালু করা যাবে, তা নিয়ে এ বার ডেলয়েটের কাছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাবে তারা।
বন্ধন কর্ণধার জানাচ্ছেন, প্রথম পর্যায়ে আমানত সংগ্রহ, ঋণ দেওয়া, বিমা-পলিসি বিপণন এবং গ্রাহকের হয়ে তাঁর টাকা এক জায়গা থেকে অন্যত্র পাঠানোর পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। এখন বন্ধন জীবনবিমা নিগমের পলিসি বিপণন করে। কিন্তু ব্যাঙ্ক চালুর পর কোন কোন সংস্থার জন্য তা করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ব্যাঙ্ক চালুর পরেও বন্ধন যে তার ৫৫ লক্ষ গ্রাহককে ক্ষুদ্র ঋণের (মাইক্রো ফিনান্স) পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করবে না, তা এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন চন্দ্রশেখরবাবু। তবে তখন তা দেওয়া হবে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। তাঁর দাবি, “এতে গ্রাহকদের আরও সুবিধা হবে। কারণ, তখন আমাদের লক্ষ্যই হবে আরও কম সুদে ঋণ দেওয়া। আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারব আমরা।” তিনি জানান, সম্প্রতি ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা হিসেবেও সুদ ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ২২.৪০% করেছে বন্ধন।
ব্যাঙ্ক চালুর পর আরও একটি বদলের কথাও জানিয়েছেন চন্দ্রশেখরবাবু। তিনি বলেন, এখন সংস্থার নীতি হল, প্রতি পরিবার থেকে এক জনকেই গ্রাহক হিসেবে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া। কিন্তু ব্যাঙ্ক চালু হলে, এই ‘নিয়ম’ আর থাকবে না। অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন একাধিক জন। শুরুতে ৫৫ লক্ষ গ্রাহক নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও দ্রুত সেই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হবে বলে চন্দ্রশেখরবাবুর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy