Advertisement
০৭ মে ২০২৪
কড়েয়া

অস্ত্র আইন, অপহরণেও অভিযুক্ত সেই শাহজাদা

শুধু ধর্ষণ নয়, কড়েয়ার বাসিন্দা ধৃত শেখ শাহজাদা বক্সের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও অপহরণের মামলাও রুজু করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ধৃত শাহজাদাকে শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বছর দেড়েক আগেও এক বার এই শাহজাদার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিল কড়েয়ার এক কিশোরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০২:২০
Share: Save:

শুধু ধর্ষণ নয়, কড়েয়ার বাসিন্দা ধৃত শেখ শাহজাদা বক্সের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও অপহরণের মামলাও রুজু করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ধৃত শাহজাদাকে শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

বছর দেড়েক আগেও এক বার এই শাহজাদার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিল কড়েয়ার এক কিশোরী। কিন্তু পুলিশ ওই অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি। প্রতিবাদে পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে কড়েয়া থানার সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন ওই কিশোরীর প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম নামে এক যুবক। এই নিয়ে শহর জুড়ে আন্দোলন শুরু হলে পুলিশ শেষমেশ শাহাজাদাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে দাঁড়িয়ে ওই কিশোরী ও তার পরিবার শাহাজাদার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। বেকসুর খালাস হয়ে যায় শাহজাদা।

তার পরেও এলাকায় শাহাজাদার ‘দাদাগিরি’ একই রকম রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ছিল কড়েয়ার বাসিন্দাদের। শনিবার তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, শাহজাদার শিক্ষা হয়নি এবং এ বার একটি গণধর্ষণের ঘটনায় জড়ানোই তার প্রমাণ।

ঘটনাচক্রে এ বার যে মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, তিনি আগের ঘটনার অভিযোগকারিণীর আত্মীয়া ও ওই পুরনো মামলার অন্যতম সাক্ষী। প্রসঙ্গত, আদালতে নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরেও শাহজাদার বিরুদ্ধে ধর্ষণের পুরনো মামলাটি নতুন করে শুরু করার চেষ্টা সম্প্রতি শুরু হয়েছিল। কারণ, ওই কিশোরী এ দিনও জানিয়েছে, শাহজাদার লোকজনের ক্রমাগত হুমকিতে ভয়ে পেয়েই সে ও তার পরিবার তখন আদালতে বয়ান বদল করেছিল। তাই, এখন সে ও তার পরিবার পুরনো মামলাটি নতুন ভাবে শুরু করার সুযোগ চায়।

পুলিশের কাছে অভিযোগে মহিলা জানিয়েছেন, গত ২০ জুন রাত ৯টা নাগাদ তিনি খাবার কিনতে বন্ডেল রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন রাইফেল রেঞ্জ রোড থেকে শাহাজাদা ও তার দুই সঙ্গী তাঁকে টেনেহিঁচড়ে একটি গাড়িতে তোলে। এক জন তাঁর বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বলে, শাহাজাদার বিরুদ্ধে আগের ধর্ষণের মামলাটি যেন কোনও ভাবে নতুন করে শুরু না হয়।

ওই মহিলার অভিযোগ, এর পরে চলন্ত গাড়িতেই এক দুষ্কৃতী তাঁর জামাকাপড় টেনে ছিড়ে দেয়। প্রাণভয়ে তিনি চিৎকার করলেও গাড়ির কাচ তোলা থাকায় আশপাশের লোকজন শুনতে পায়নি বলে অভিযোগকারিণীর দাবি। এর পরে তাঁর মুখ চেপে ধরে শাহাজাদা তাঁকে ধর্ষণ করে। রাত পৌনে ১০টা নাগাদ বালিগঞ্জ পার্কের কাছে তাঁকে গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। তার পর দুই অপরিচিত মহিলা তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেন। মহিলা জানিয়েছেন, সেই অবস্থাতেই তাঁর পরিবারের লোকেরা তাঁকে নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। ওই রাতেই মহিলা কড়েয়া থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ করেন। শাহজাদার দুই সঙ্গী জামিলুর রহমান ও মহম্মদ আকবরকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্রটির খোঁজে তল্লাশি চলছে।

কিন্তু শাহজাদা ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতার করতে এক মাসেরও বেশি সময় লাগল কেন? পুলিশের দাবি, ওরা এত দিন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তবে অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, সকলে এলাকায় ছিল, পুলিশ ইচ্ছাকৃত তাদের গ্রেফতার করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sekh sahajada weapon law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE