Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পার্কেই বসতি, দেখভাল নিয়ে টানাপড়েন

বড়দিনের আলোয় ঝলমল করছে সাজানো পার্কস্ট্রিট। চলছে উৎসব। কিন্তু আলোর পাশেই অন্ধকার। কাছেই পার্কের মধ্যে বস্তা, ছেঁড়া কাপড় ঘিরে তৈরি ঝুপড়ি। পার্কের মধ্যে উনুন জ্বালিয়ে চলছে রান্না। এক পাশে জড়ো করে রাখা কাঠ। চারপাশে ছড়িয়ে আছে আবর্জনা। রেলিং-এর গায়ে মেলা কাপড়। রাতে দেখা না গেলেও দিনে তা সকলের নজরে পড়ে। কিন্তু পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার? তা নিয়েই মতভেদ রয়েছে কলকাতা পুরসভা ও ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’-এর মধ্যে (এইচআরবিসি)।

চলছে ঘরকন্না।  ছবি:রণজিৎ নন্দী।

চলছে ঘরকন্না। ছবি:রণজিৎ নন্দী।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

বড়দিনের আলোয় ঝলমল করছে সাজানো পার্কস্ট্রিট। চলছে উৎসব। কিন্তু আলোর পাশেই অন্ধকার।

কাছেই পার্কের মধ্যে বস্তা, ছেঁড়া কাপড় ঘিরে তৈরি ঝুপড়ি। পার্কের মধ্যে উনুন জ্বালিয়ে চলছে রান্না। এক পাশে জড়ো করে রাখা কাঠ। চারপাশে ছড়িয়ে আছে আবর্জনা। রেলিং-এর গায়ে মেলা কাপড়। রাতে দেখা না গেলেও দিনে তা সকলের নজরে পড়ে। কিন্তু পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার? তা নিয়েই মতভেদ রয়েছে কলকাতা পুরসভা ও ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’-এর মধ্যে (এইচআরবিসি)।

পার্কস্ট্রিট এলাকায় মেয়ো রোডের পাশে রয়েছে ‘নেলসন ম্যান্ডেলা পার্ক’। তার পাশে আরও একটি ছোট পার্ক। এখানেই ২৫টি পরিবারের বাস। পার্কস্ট্রিটের রাস্তাঘাট সাজলেও পার্কটি অবহেলিত।

পার্কের অধিকাংশ বাসিন্দা কাগজ কুড়ানো, মুটেগিরির মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত। বেশির ভাগের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা গ্রামে। তা হলে পার্কে থাকছেন কেন? ঝুপড়ির এক বাসিন্দা মুনাম শেখ বলেন, “কাজে সুবিধা হয়। সারা বছর এ ভাবেই থাকি।”

শহরের গৃহহীনদের জন্য রাজ্য সরকার রাত্রে থাকার ব্যবস্থা করেছে। সমাজকল্যাণ দফতরের চক্রচর নিয়ামক বিভাগ সূত্রের খবর, ২০১১-এ নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তিনটি পুর এলাকায় গৃহহীনদের জন্য রাত্রে থাকার ব্যবস্থা করে। সূত্রের খবর, কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আবাসগুলির দেখভাল করছে। এর জন্য বেশ কিছু বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ভাড়া দেয় সরকার। এই প্রকল্পে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আধিকারিক দেবশঙ্কর রায় জানান, ঠাকুরপুকুর থানার বিপরীতের তাঁদের চালিত গৃহহীন আবাসনে ৪০ জন গৃহহীন পুরুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। খাবার ছাড়া যাবতীয় ব্যবস্থা থাকে সেখানে। তা হলে পার্কে বাস কেন? ঝুপড়ির আর এক বাসিন্দা কুতুব শেখ বলেন, “বাড়ি আছে শুনেছি। কিন্তু কোথায় সেগুলি আছে জানি না। তা ছাড়া পরিবার নিয়ে থাকতে হবে।”

সমাজকল্যাণ দফতরের চক্রচর নিয়ামক দফতরের এক কর্তা জানান, পার্কস্ট্রিট এলাকায় কোনও বাড়ি নেই। তা ছাড়া পরিবার নিয়ে বসবাসের সুযোগ নেই। শিশু, নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “আপাতত গৃহহীন পরিবারগুলির থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া ওই পরিবারগুলির বাড়ি তো কলকাতা থেকে বেশি দূরে নয়। তাঁরা যাতে পার্কে বাস না করে তা বোঝাতে হবে।”

তবে অবৈধ ঝুপড়ি উচ্ছেদ করে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার? পুরসভা মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “আমাদের নয়, এইচআরবিসি-র।” যদিও এইচআরবিসি-র এক এক উচ্চপদস্থ আধিকারকি বলেন, “পার্কস্ট্রিটে উড়ালপুল তৈরির সময়ে ওই পার্কগুলির আমরা দেখভাল করতাম। পরে পুরসভাকে দিয়ে দেওয়া হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

supriya tarafder park street
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE