Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিপদে দুই দরজাই খুলে দেবে মেট্রো

বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। আর তার জেরেই পার্ক স্ট্রিটে সুড়ঙ্গে আটকে গিয়েছিল মেট্রো। খানিকক্ষণ আটকে থাকার পরে যাত্রীদের একে একে নামিয়ে আনা হয়েছিল চালকের কেবিনের দরজা দিয়ে। তবে ওই ট্রেনের ১০৮৭ জন যাত্রীকে একটিমাত্র গেট দিয়ে নামাতে গিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় মেট্রোকর্মীদের। ট্রেন থেকে নামতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০২:১৯
Share: Save:

বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। আর তার জেরেই পার্ক স্ট্রিটে সুড়ঙ্গে আটকে গিয়েছিল মেট্রো। খানিকক্ষণ আটকে থাকার পরে যাত্রীদের একে একে নামিয়ে আনা হয়েছিল চালকের কেবিনের দরজা দিয়ে। তবে ওই ট্রেনের ১০৮৭ জন যাত্রীকে একটিমাত্র গেট দিয়ে নামাতে গিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় মেট্রোকর্মীদের। ট্রেন থেকে নামতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে।

কিন্তু সে দিন যাত্রীদের একটি গেটের বদলে দু’দিক দিয়ে বার করা হলে তাঁদের কষ্ট কম হত বলে মত মেট্রোকর্মীদের। তাঁদের মতামত মেনে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বার থেকে কোনও কারণে মেট্রো সুড়ঙ্গে আটকে গেলে যাত্রীদের বার করা হবে দু’দিক দিয়ে। মোটরম্যান এবং কন্ডাক্টরদের কেবিনের দু’দিকে দু’টি ইমার্জেন্সি গেট রয়েছে। ওই দু’দিক দিয়ে বার করা হলে তাড়াতাড়ি খালি করা যাবে ট্রেনটি। পাশাপাশি, যাত্রীদের আতঙ্কের অবকাশও কমবে। এ ছাড়া, সুড়ঙ্গে মেট্রোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে রেকের ভিতরে যাতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায়, তারও ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। পুজোর আগে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা যায় কি না, তা-ও ভেবে দেখা হচ্ছে।

চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত কলকাতার পুজোমণ্ডপগুলিতে সারা রাত ধরে ঠাকুর দেখতে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। মেট্রোই তাঁদের প্রধান ভরসা। তাই পুজোর সময়ে যাতে মেট্রো চলাচলে কোনও গোলমাল না হয়, সে জন্য ১৮ জুলাই মেট্রো ভবনে ২৪টি স্টেশনের ম্যানেজার এবং ট্রাফিক অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। সেখানেই মেট্রোর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। পার্ক স্ট্রিটের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এর পরে এ রকম কিছু ঘটলে ট্রেনের দু’দিক দিয়েই যাত্রীদের বার করা হবে। ওই বৈঠকেই মেট্রোর বেশ কয়েক জন স্টেশন ম্যানেজার কর্তৃপক্ষকে জানান, সুড়ঙ্গে কখনও ট্রেন আটকে গেলে রেকের ভিতরেও অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সুড়ঙ্গের ভিতরের আলো থেকে ট্রেনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করলে যে যাত্রীদের আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা।

মেট্রো রেলের এক কর্তা জানান, নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার মেট্রো রেলের অধীনে রয়েছে ২৪টি স্টেশন। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। সারা দিন চলে ১৩টি এসি এবং ১৪টি নন-এসি রেক। এসি রেকগুলি চলছে বছর তিনেক ধরে। নন-এসিগুলি আরও পুরনো। মেট্রোর শুরু থেকেই সেগুলি চলানো হচ্ছে। ফলে বর্তমানে রেকগুলি চলছে কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে এই পুরনো রেকগুলি বাতিল করা জরুরি। ওই কর্তার কথায়, মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গে প্রতি তিন মিটার অন্তর কংক্রিটের স্তম্ভ রয়েছে। সেই সব স্তম্ভে বিদ্যুতের লাইন তৈরি করে আলাদা আলাদা প্লাগ পয়েন্টের ব্যবস্থা করে রাখা হলে কোনও রকম অঘটনে তারের সাহায্যে রেকের ভিতরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা যাবে। ফলে ওই সময়ে ট্রেনের ভিতর ফ্যান চলবে, আলোও জ্বালানো যাবে এবং যাত্রীদের আতঙ্কও অনেকটা কাটানো যাবে। এই ব্যবস্থায় মেট্রোকর্মীদেরও হয়রানির শিকার হতে হবে না। এই প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখছেন কর্তৃপক্ষ। পুজোর আগে এই ব্যবস্থাও করা যায় কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে। মেট্রোর আর এক কর্তা জানান, সুড়ঙ্গে কোনও ট্রেন আটকে গেলে থার্ড রেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। রেলের ভাষায় তাকে বলা হয় ‘পাওয়ার ব্লক’। এর পরে ভাল করে আর্থিং করে যাত্রীদের রেল-ট্র্যাকে নামতে অনুমতি দেওয়া হয়। ওই সময়ে ট্রেনের ভিতরে আলো জ্বললে, ফ্যান ঘুরলে যাত্রীদের আতঙ্ক অনেকটাই কেটে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkata metro metro problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE