মহিলা পুলিশ না থাকায় ফের নাজেহাল হতে হল পুলিশকে। রবিবার রাতে তারাতলার গড়াগাছার হরিজন বস্তির ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বস্তিবাসীদের হাতে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকর্মীদের। কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছাড়া ওই মহিলাকে কেন পুলিশ উদ্ধার করতে গিয়েছে, এই প্রশ্ন তুলে উত্তেজিত জনতা চড়াও হয় পুলিশের উপরে। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়ি ও কিয়স্কে। দুষ্কৃতীদের ছোড়া ইঁটের আঘাতে গুরুতর আহত হন এক পুলিশকর্মী।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন রাত পৌনে ২টো নাগাদ এলাকায় টহলদারির সময়ে তালতলা থানার পুলিশকর্মীরা দেখেন, হরিজন বস্তির সামনে এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা বসে রয়েছেন। আর তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এলাকারই কয়েক জন যুবক। অভিযোগ, ওই মহিলাকে তারা উত্যক্ত করছিল। তা দেখেই টহলরত পুলিশকর্মীরা মহিলাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশকে আসতে দেখে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এর পরেই সমস্যায় পড়েন ওই পুলিশকর্মীরা। কেন না, তাঁদের সঙ্গে কোনও মহিলা পুলিশ ছিলেন না। তাই তাঁরা ওই মহিলাকে থানায় আনার জন্য এলাকা সংলগ্ন বস্তিতে গিয়ে কিছু মহিলার সাহায্য চান। কিন্তু কেউ-ই সাহায্য করতে চাননি। উল্টে মহিলা পুলিশ এনেই মহিলাকে উদ্ধার করতে হবে বলে বস্তিবাসীরা দাবি তোলেন। কিন্তু অত রাতে থানায় কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না বলেই থানা সূত্রের খবর। ফলে বস্তিবাসীদের দাবি মানা কোনও মতেই সম্ভব ছিল না। আর এর পরেই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা বেধে যায় বস্তিবাসীদের।
পুলিশ সূত্রের খবর, মহিলা পুলিশ ছাড়া ওই মহিলাকে কোনও মতেই উদ্ধার করতে দিতে রাজি ছিলেন না তাঁরা। এই নিয়েই শুরু হয় পুলিশ ও বস্তিবাসীদের মধ্যে বচসা। আচমকাই পুলিশের উপরে চড়াও হয় তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট, পাটকেলও ছুঁড়তে শুরু করে জনতা। ভেঙে দেয় কিয়স্ক এবং দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়ির কাচ। চুরি করে নিয়ে পালায় টহলরত পুলিশের দু’টি সাইকেলও। ঘটনায় বাসুদেব লাহিড়ী নামের এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। রাত তিনটে নাগাদ থানা এবং লালবাজার থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। পরে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি, আহত পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে ওই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি-সহ শহরের একাধিক ঘটনায় রাতে পুলিশকে বিপাকে পড়তে হয়েছে শুধুমাত্র মহিলা পুলিশ না থাকার কারণে। এর পরে লালবাজার থেকে বলা হয়েছিল থানায় ২৪ ঘণ্টাই মহিলা পুলিশকর্মী থাকবে। কিন্তু এ দিনের ঘটনায় ফের প্রমাণ হল রাতে থানাগুলিতে মহিলা পুলিশের অভাব রয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, প্রতিটি থানাতেই রাতে মহিলা পুলিশকর্মী রাখার মতো পরিকাঠামো এখনও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই লালবাজার থেকে মহিলা পুলিশ এনেই সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy