Advertisement
১১ মে ২০২৪

রবীন্দ্র সরোবরে মিলল না বন্যপ্রাণী রাখার অনুমতি

রবীন্দ্র সরোবরে হরিণ রাখার ব্যাপারে কলকাতা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-এর প্রস্তাব বন দফতরের ছাড়পত্র পেল না। ফলে, এই প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত হয়ে গেল। রাজ্যের পূর্ত ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সরোবর এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্য হরিণ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই কারণেই বন দফতরের কাছে আমরা আর্জি জানিয়েছিলাম।”

ছাড়পত্র না মেলায় রাখা গেল না হরিণ।  —নিজস্ব চিত্র।

ছাড়পত্র না মেলায় রাখা গেল না হরিণ। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৪ ০২:২০
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবরে হরিণ রাখার ব্যাপারে কলকাতা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-এর প্রস্তাব বন দফতরের ছাড়পত্র পেল না। ফলে, এই প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত হয়ে গেল।

রাজ্যের পূর্ত ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সরোবর এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্য হরিণ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই কারণেই বন দফতরের কাছে আমরা আর্জি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বন্যপ্রাণী পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কিছু জটিলতা থাকায় এই পরিকল্পনা আপাতত বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনগত জটিলতা কাটিয়ে যাতে এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার জন্য চেষ্টা করছি। স্টেট জু অথরিটির সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলব।”

কেআইটি সূত্রে জানানো হয়েছে, রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়নের প্রকল্পের মধ্যে সরোবরে হরিণ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সরোবরের মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপে হরিণ রাখা হবে। বেশ কয়েক বছর আগে রবীন্দ্র সরোবরের সাফারি পার্কে হরিণ-সহ নানা ধরনের জীবজন্তু রাখা হত। এই সমস্ত প্রাণীদের দেখতে রবীন্দ্র সরোবরে অনেকে ভিড় জমাতেন। পরে ওই হরিণগুলি মারা যায়।

এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি সংস্থা দ্বীপের সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, এই দ্বীপের অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। হরিণ বা যে কোনও বন্যপ্রাণীকে এখানে রাখতে গেলে দ্বীপটির সংস্কারের প্রয়োজন। এ ছাড়া বর্ষায় এই দ্বীপে জল উঠে আসে। তাই এ দ্বীপে কোনওরকম প্রাণী রাখা নিরাপদ নয় বলে কেআইটি-র আধিকারিকরাই পিছিয়ে আসেন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, এই সমীক্ষার পরেই এই দ্বীপে কোনওরকম প্রাণী রাখার সম্ভাবনা বাদ দেওয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে রবীন্দ্র সরোবরের অন্য জায়গায় এই প্রাণীদের রাখা যেতে পারে। কেআইটির এক আধিকারিক জানান, বন দফতরের অনুমতি না পাওয়ায় কেআইটি কর্তৃপক্ষ স্টেট জু অথরিটির কাছে আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজ্যের মুখ্য বনপাল নবীনচন্দ্র বহুগুণা বলেন,“কেআইটি কর্তৃপক্ষ সরোবরে প্রাণী রাখার ব্যাপারে আমাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু বন দফতর কোনও বন্যপ্রাণী রাখার জন্য কেআইটি কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিতে পারবে না। বন দফতর অসুস্থ বন্যপ্রাণীদের সেন্টারে রাখে। সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের ফের বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। সরোবরে প্রাণীদের রাখতে গেলে চিড়িয়াখানা থেকে নিতে হবে। এই বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”

বন দফতরের এক কর্তা জানান, কোনও জায়গায় কোনও বন্যপ্রাণী রাখতে গেলে প্রয়োজন হবে তার সুরক্ষার। নির্দিষ্ট কোনও প্রাণী রাখতে গেলে কতটা জায়গা লাগবে সেই ব্যাপারেও সমীক্ষার দরকার। বন দফতর বা সেন্ট্রাল জু অথরিটি সেই ব্যাপারে সমীক্ষা করার পরেই সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাকে এই ব্যাপারে অনুমতি দিতে পারে।

স্টেট জু অথরিটি-র কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা খাঁচায় কোনও বন্যপ্রাণী রাখতে চাইলে একটি পরিকল্পনা জু অথরিটি-র কাছে জমা দিতে হবে। এই পরিকল্পনা খতিয়ে দেখে অনুমতি দেওয়া হয়। এর পরে সুপ্রিম কোর্টের গ্রিন বেঞ্চ থেকে চূড়ান্ত অনুমতি অনুমতি নিতে হয়। তাঁদের কাছে এখনও পরিকল্পনা জমা পড়েনি বলে জু-কর্তৃপক্ষ জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

wild animals kit kaushik ghosh rabindra sarobar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE