Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা চওড়া হওয়ার বদলে পার্কিং কাশীপুরে, নাকাল এলাকাবাসী

হওয়ার কথা ছিল চওড়া রাস্তা, হয়ে গিয়েছে পার্কিং-এর জায়গা। যে অংশে ফুটপাথ উড়িয়ে রাস্তা চওড়া করার কথা ছিল, সেখানে ধারে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। কোথাও পর পর ট্রাক বা ম্যাটাডর, কোথাও বা ট্যাক্সি। দৃশ্যটা কাশীপুর রোডের। ওখানে এক কিলোমিটারের একটু কম জায়গা জুড়ে রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। সেই মতো চার মাস আগেই রাস্তার এক দিকের ফুটপাথ কেটে প্রায় অর্ধেক করে ফেলা হয়েছে।

ফুটপাথ কাটায় বাতিস্তম্ভ নেমে এসেছে রাস্তায়। ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী

ফুটপাথ কাটায় বাতিস্তম্ভ নেমে এসেছে রাস্তায়। ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী

সায়নী ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৯
Share: Save:

হওয়ার কথা ছিল চওড়া রাস্তা, হয়ে গিয়েছে পার্কিং-এর জায়গা। যে অংশে ফুটপাথ উড়িয়ে রাস্তা চওড়া করার কথা ছিল, সেখানে ধারে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। কোথাও পর পর ট্রাক বা ম্যাটাডর, কোথাও বা ট্যাক্সি।

দৃশ্যটা কাশীপুর রোডের। ওখানে এক কিলোমিটারের একটু কম জায়গা জুড়ে রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। সেই মতো চার মাস আগেই রাস্তার এক দিকের ফুটপাথ কেটে প্রায় অর্ধেক করে ফেলা হয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় ফুটপাথ কাটায়, জায়গা এতটাই কমে গিয়েছে যে মানুষের হাঁটার জায়গা প্রায় নেই বললেই চলে। অগত্যা, ওই অংশে রাস্তা দিয়েই চলতে হচ্ছে তাঁদের।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফুটপাথ কেটে ছোট করে দেওয়ায় বাতিস্তম্ভ, ফিডার বক্স ইত্যাদি গিয়ে পড়েছে রাস্তায়। এখন রাস্তার উপরেই রয়েছে ওই বাতিস্তম্ভ এবং ফিডার বক্সগুলি। কোনও কোনও জায়গায় আবার চারদিকে বেদি তৈরি করা বড় গাছও এসে গিয়েছে রাস্তার উপর। আর সে জন্যই তৈরি হয়েছে যত বিপত্তি।

কী রকম? ফুটপাথ কেটে বের করা বাড়তি অংশটিকে জুড়ে রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, বাতিস্তম্ভ, ফিডার বক্স ও গাছগুলি সরানো হয়নি বলে সেই কাজ কার্যত বন্ধ। তাই কেটে ফেলা ফুটপাথ এখন না ব্যবহার করতে পারছেন পথচারীরা, না গাড়িচালকেরা। ওই অংশ এখন পরিণত হয়েছে গাড়ি রাখার বেআইনি পার্কিং লটে। এলাকার মানুষের অভিযোগ, ফুটপাথ কেটে যে বাড়তি অংশ বেরিয়েছে, সেই জায়গা দখল করে এখন দিনভর দাঁড়িয়ে থাকছে লরি-ম্যাটাডর-ট্যাক্সি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাশীপুর রোডের যে দিকের ফুটপাথ কাটা হয়েছে, তার উল্টো দিকের ফুটপাথ ঘেঁষে সব সময়েই বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে ওই রাস্তার একটা দিক বেশির ভাগ সময়েই আটকে থাকে। ওই বেআইনি পার্কিং তুলে দিলেই তো রাস্তার পরিমাণ অনেকটাই বাড়ত। এর জন্য অন্য দিকের ফুটপাথ কেটে পথচারীদের বিপাকে ফেলতে হত না।

কিন্তু উল্টো দিকের ফুটপাথের বেআইনি পার্কিং না তুলে কেনই বা সাত তাড়াতাড়ি অন্য দিকের ফুটপাথ কেটে ছোট করে দেওয়া হল?

৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমন সিংহ জানান, রাতে ওই এলাকায় পুরসভার গাড়ি পার্কিংয়ের অনুমতি দেওয়া আছে। তিনি বলেন, “রাস্তার ধারে গাড়ি পার্ক করলে পুলিশ ধরে, জরিমানাও করে। তা সত্ত্বেও ফের গাড়ি দাঁড়ায়। কে এত পাহারা দেবে বলুন তো?” সুমনবাবু জানান, ৩৬ ফুটের রাস্তা ৪০ ফুট হলে এই রাস্তায় গতি আসবে। তাই দ্রুত এই কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।

তা হলে রাস্তা উপরে বাতিস্তম্ভ, ফিডার বক্স সরানো কবে হবে? সুমনবাবুর জবাব, “রাস্তা থেকে ওই বাতিস্তম্ভ, ফিডার বক্স, গাছ, জলের পাইপ ইত্যাদি না সরালে আমরা কাজ এগোতে পারব না। এই সংক্রান্ত সব দফতরেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা দ্রুত এই কাজ করলে, আমরাও রাস্তা চওড়া করার কাজ শেষ করতে পারব।” এর মধ্যে ওই কেটে ফেলা ফুটপাথ যে বেআইনি গাড়ি পার্কিং-এর জায়গা হয়ে গিয়েছে, তা অবশ্য মেনে নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “সবটাই জানা আছে। কিন্তু কিছু করার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cossipore sayani bhattacharya footpath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE