শিক্ষক দিবসের আগে রাস্তা আটকে মিছিলে শামিল হলেন শিক্ষকরা। ফলে শুক্রবারও শহরে পথের ভোগান্তি থেকে রেহাই মিললো না সাধারণের।
চলতি সপ্তাহের সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বনধ সহ বিভিন্ন মিছিল, সভার জেরে রাস্তায় বেড়িয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। এই সপ্তাহে বনধের দিন বাদ দিয়ে প্রতিটি কাজের দিনেই শহরের রাস্তায় যানজট সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে ট্রাফিক পুলিশকে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে অচলাবস্থা।
শুক্রবার দুপর একটা নাগাদ প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের পার্শ্ব শিক্ষকদের সংগঠন রাজ্য পার্শ্ব শিক্ষক সমন্বয় সমিতির একটি মিছিল শুরু হয় শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে। মিছিলটি শেষ হয় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে। ওই একই সময়ে এই দিন কলেজ স্কোয়ার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে কর্মরত আংশিক সময়ের অধ্যপকদের একটি মিছিল বেড়িয়ে ধমর্তলার ওয়াই চ্যানেলে আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দু’টি মিছিল মিলিয়ে প্রায় হাজার পাঁচেক লোক অংশ নেন।
এই দুই মিছিলের জেরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড সহ মধ্য কলকাতার সমস্ত রাস্তাতেই যান চলাচল ব্যাহত হয়। যানজটে আটকে পড়েন সাধারণ পথচারীরা। পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন হাওড়ার বাসিন্দা শৈবাল চক্রবর্তীর মা। তিনি বলেন, ‘‘অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য এই সপ্তাহে প্রায় প্রতি দিনই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। শুক্রবারও সেই ভোগান্তি থেকে রেহাই মেলেনি।’’
শনিবার শিক্ষক দিবস। তার আগে শুক্রবার শিক্ষকদের রাস্তা আটকে এই মিছিল নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কাজের দিনে ব্যস্ত সময়ে রাস্তা আটকে মিছিল, মিটিং করে সাধারণ মানুষের চলাচলে অসুবিধা তৈরির জন্য রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলকে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর কাজের দিনে মিছিল করার বিরুদ্ধে এক জনস্বার্থ মামলায় স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই দিনেও রাস্তা আটকেই মিছিল বার করার নজির রেখেছে শাসক এবং বিরোধী দল। এ বার সেই নজিরের শরিক হল শিক্ষক সংগঠনও।
এই মিছিলের আয়োজক দুই শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বই তাঁদের রাস্তা আটকে মিছিল করার জন্য যে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়েছে তা স্বীকার করে নেন।
আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের সংগঠন কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, ‘‘এ কথা স্বীকার করছি আমাদের মিছিলের জন্য সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়েছে। তবে আমরা নিরুপায়। কারণ সরকার আমাদের শুধু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কাজের কাজ কিছু করছে না। তাই নিরুপায় হয়ে শিক্ষক দিবসের আগের দিন আমরা রাস্তায় নামি।’’ একই বক্তব্য রাজ্য পার্শ্ব শিক্ষক সমন্বয় সমিতির সম্পাদক রমিউল ইসলাম শেখেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy