ফের সরকারি হোম থেকে দশ আবাসিক নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল। এ বার সল্টলেকের সুকন্যা হোম থেকে। পুলিশ জেনেছে, প্রত্যেকের বয়স ১৪ থেকে ১৭-র মধ্যে। তাদের মধ্যে আট জনকে পুলিশ শুক্রবার সকালে উদ্ধার করলেও, বাকি দু’জনের খোঁজ মেলেনি। কী কারণে এবং কী ভাবে ওই দশ আবাসিক নাবালিকা পালাল, তার তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে-পৌনে তিনটে নাগাদ টহলরত পুলিশ ভ্যান সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের ২১৫এ বাস স্ট্যান্ড থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে। তার পায়ে চোট ছিল। ওই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে সে সুকন্যা হোমের আবাসিক। তার সঙ্গে কথাবার্তার পরেই পুলিশ জানতে পারে, একা নয়, হোম থেকে আরও ৯ জনের সঙ্গে পালিয়ে এসেছে সে। এর পরেই ওই নাবালিকার কথা মতো সল্টলেক এবং সেক্টর ফাইভ এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সেক্টর ফাইভের বিভিন্ন জায়গা থেকেই বাকি ৭ জনকে উদ্ধার করা হয়। তবে বাকি দু’জন নেপালি মেয়ের খোঁজে এখনও তল্লাশি চলছে।
শুক্রবার সকালে আবাসিকদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েই নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজাকে বিষয়টি হোম থেকে জানানো হয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে দফতরের অধিকারিক, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক, শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্যদের হোমে পাঠান। তাঁরা কথা বলেন উদ্ধার হওয়া আবাসিকদের সঙ্গে। দফতর সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া মেয়েরা হোমের পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ করেনি। এদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশের মেয়ে। সে দেশে ফিরতে চায়। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে। সে কথা সে মানতে রাজি নয়। তাই এখনই দেশে ফেরার চেষ্টায় হোম থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সে। পুলিশ জেনেছে, বাকিরা ছোট থেকেই বিভিন্ন হোমে ঘুরে ঘুরে থেকেছে। কিন্তু এখন নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরাই করতে চায় বলে উদ্ধারের পরে পুলিশ এবং দফতরের লোক জনকে জানিয়েছে তারা। মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, বাকি দু’জনকে তাড়াতাড়ি খুঁজে বার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এত নজরদারি এড়িয়ে তারা পালাল কী করে? দফতর থেকে কেউ কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দশ জন জানালার গ্রিল কেটে, সেখান থেকে কাপড় দিয়ে ঝুলে নীচে নামে। পরে হোমের পাঁচিল টপকে পালায়। আর ওই পাঁচিল টপকাতে গিয়েই এক জন পায়ে চোট পায়। তাকেই পুলিশ প্রথমে বাস স্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করে।
দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই দশ জন আবাসিকই সল্টলেক ইজেডসিসি-তে দফতরের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। সেখান থেকে বিকেলে ফেরার পরেই রাতে এরা হোম থেকে পালায়। পালানোর পিছনে হোমের কেউ জড়িত কি না, তদন্ত করছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এই হোমের ভিতরে এবং গেটগুলিতে যে সব সিসি ক্যামেরা ছিল, সেগুলি গত কয়েক দিন ধরেই খারাপ। এ দিন সল্টলেক পুলিশের এডিসিপি দেবাশিস ধর জানিয়েছেন, বাকি দু’জনকে খোঁজার পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের জিজ্ঞাসবাদও চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy