Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

৪১-এ ৩৭, তবু রইল খচখচানি

দলনেত্রী বলেছিলেন সবাইকে জিততে হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি কথা দিয়েছিলেন বিরোধীশূন্য হবে বিধাননগর। সেই লক্ষ্যে ভোটের দিন শাসক দল যে ‘বেলাগাম সন্ত্রাস’ দেখিয়েছে, তা এখন অনেকেরই মুখে মুখে ফিরছে।

গণনা শেষের পর সবুজে সবুজ সল্টলেকের পথ। ছবি: সৌভিক দে।

গণনা শেষের পর সবুজে সবুজ সল্টলেকের পথ। ছবি: সৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ১৭:০৩
Share: Save:

দলনেত্রী বলেছিলেন সবাইকে জিততে হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি কথা দিয়েছিলেন বিরোধীশূন্য হবে বিধাননগর। সেই লক্ষ্যে ভোটের দিন শাসক দল যে ‘বেলাগাম সন্ত্রাস’ দেখিয়েছে, তা এখন অনেকেরই মুখে মুখে ফিরছে। তা সত্ত্বেও বিধাননগরে মুছে দেওয়া গেল না বিরোধীদের। ২টি আসনে বামেরা এবং ২টিতে জয়ী হল কংগ্রেস।

মোট ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। নিরঙ্কুশ সংখ্যগরিষ্ঠতা শুধু নয়। তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু। তবু খচখচানি রয়েই গেল শাসক শিবিরে। পুনর্নির্বাচন হয়েছে যে ক’টি বুথে, তার মধ্যে দু’একটি বাদ দিলে বাকি সবক’টিতেই বিপুল ভোটে পিছিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। বিরোধীরা সেই হিসেব তুলে ধরে দাবি করছে, অবাধ ভোট হলে গোহারা হারতে হত শাসক দলকে। সিপিএমের অসীম দাশগুপ্ত থেকে কংগ্রেসের অরুণাভ ঘোষ, প্রত্যেকেই এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী অনুপম দত্ত তৃণমূলের অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে জোর টক্কর দিয়ে হেরে গিয়েছেন ৯৮১ ভোটে। গণনা শেষে এ দিন তাঁর প্রতিক্রিয়াতেও শোনা গেল অসীম-অরুণাভদের সুর। বললেন, ‘‘গণনার বিশদ রিপোর্ট দেখলেই বুঝতে পারবেন, কীভাবে জিতল তৃণমূল। যেখানেই পুনর্নির্বাচন হয়েছে, সেই বুথেই বিপুল ভোটে পিছিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। মানুষ এর বিচার করুন।’’ অনুপমবাবুর ওয়ার্ডে ভোটের আগের রাত থেকে ব্যাপক বোমাবাজি, ভোটের দিন বহিরাগতদের নজিরবিহীন দাবড়ানি, নির্দল প্রার্থী ও তাঁর এজেন্টকে মেরে বুথ থেকে বার করে দেওয়া, ভোটারদের উপর হামলা— বাদ যায়নি কোনও কিছুই। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি বুথে শুক্রবার পুনর্নির্বাচনও হয়। সামগ্রিক ফলে হার হলেও পুনর্নির্বাচন হওয়া বুথগুলিতে এগিয়ে ছিলেন অনুপম দত্ত। বিধাননগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডও শিরোনামে এসেছিল ভোটের দিন। সকাল থেকেই বাহিনী নিয়ে বুথ দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। বহিরাগত বাহিনী গুলিও চালায় সেখানে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে কংগ্রেস প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাতেও দেবরাজই সেখানে জয়ী হয়েছেন। ৩১২ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি। ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড গিয়েছে বামেদের দখলে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন কংগ্রেসের গীতা সর্দার। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে বামেদের মেয়র পদপ্রার্থী অসীম দাশগুপ্ত এবং ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে রমলা চক্রবর্তী পরাজিত হয়েছেন। তৃণমূলের তাপস চট্টোপাধ্যায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। শাসক দলের আরও দুই হেভিওয়েট সব্যসাচী দত্ত ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে এবং কৃষ্ণা চক্রবর্তী ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বড় ব্যবধানে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE