অজয় সিংহ
লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বেপরোয়া মোটরবাইকে সওয়ার এক কিশোরের। সোমবার সরস্বতী পুজোর বিকেলে গার্ডেনরিচের কাচ্চি সড়ক মোড়ের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অজয় সিংহ (১২)। তার বাড়ি মেটিয়াবুরুজের বিচালি ঘাটে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, ওই কিশোরের মাথায় হেলমেট ছিল না। শেখ সুরাবর্দি নামে ওই লরি চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প নিয়ে শহরবাসীকে একাধিক ভাবে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কলকাতা পুলিশ তাবড় কর্তারা। শহরতলিতে হেলমেট না পরে থাকলে মোটরবাইক আরোহীদের সঙ্গে ‘গাঁধীগিরি’ করে তাঁদের মিষ্টিও খাওয়ানো হয়েছে। তাঁরা জানান, তাতেও হেলমেট না পরার প্রবণতা কমেনি। এ দিন গার্ডেনরিচ রোডের দুর্ঘটনা তারই প্রমাণ।
বন্দর এলাকার ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, হেলমেট না পরে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালানোর প্রবণতা বন্দর এলাকাতেই বেশি। তাঁরা আরও জানান, লাইসেন্স না থাকা কিশোরদের একাংশ প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। ওই কিশোরদের অভিভাবকদের বারবার বুঝিয়েও লাইসেন্স না থাকা কিশোরদের হেলমেট না পরে গাড়ি চালানো আটকানো যাচ্ছে না।
কী করে দুর্ঘটনা? স্থানীয় সূত্রের জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ অজয় তার বন্ধুর মোটরবাইকের পিছনে বসে কাচ্চি সড়ক মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণহীন, বেপরোয়া ছিল অজয়দের গতি। ওই সময়ে অজয়দের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল অন্য এক মোটরবাইক। অজয়ের বন্ধুর গতি বেপরোয়া ছিল। মালবোঝাই একটি ট্রাকের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে অজয়ের বন্ধুর মোটরবাইকের হ্যান্ডেল কোনও ভাবে লরিতে আটকে যায়, তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ওই কিশোর। লরির পিছনের চাকা তার মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। রাস্তায় পড়ে যায় ওই কিশোরের বন্ধুও। তবে তার চোট গুরুতর নয়। পুলিশ আরও জানায়, রক্তাক্ত অজয়কে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের দিকে রওনা হন স্থানীয়েরা। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার পরে কাচ্চি সড়ক মোড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। লরিচালক গাড়ি ফেলে পালানোর চেষ্টা করলে একদল যুবক তাঁকে ধরে ফেলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
লালবাজার থেকেও পুলিশের বাহিনী পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার জেরে গার্ডেনরিচ রোডে কিছু ক্ষণের যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এ দিন সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেজা গলায় অজয়ের দাদা মুকেশ জানান, তাঁরা তিন ভাই, দুই বোন। অজয় সবচেয়ে ছোট। সে স্থানীয় কেশরাম স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। এ দিন তাঁদের বাড়িতে সরস্বতী পুজো হয়েছিল। দুপুরে খাওয়ার পরে বাড়িতে জানিয়েই পাড়ার কয়েক জনের সঙ্গে ঘুরতে বেরোয় অজয়। আদিত্য নামে বছর চোদ্দোর ওই কিশোরের মোটরবাইকের পিছনে বসে তাকে মেটিয়াবুরুজ থানার দিকে যেতে দেখেন পাড়ার কয়েক জন। তার পরেই বাড়িতে খবর আসে অজয় লরিতে চাপা পড়ছে। মুকেশ জেনেছেন, আদিত্য নামে ওই কিশোরের মাথাতেও হেলমেট ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy