Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দুষ্প্রাপ্য রেকর্ড চুরি, কিছু উদ্ধার

ভাঙেনি। তবে হাল্কা দাগ পড়েছে ৭৮ আরপিএমের ভারী চাকতিগুলোয়। তার মধ্যে ধরা আছে ইন্দুবালা, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামীদের কণ্ঠ।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লেক থানায় ঢুকে তাঁর সাধের ‘হারানো রত্নখনি’র এই ভগ্নাংশটুকুই যা দেখেছেন প্রবীণ অঞ্জন সেন।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

ভাঙেনি। তবে হাল্কা দাগ পড়েছে ৭৮ আরপিএমের ভারী চাকতিগুলোয়। তার মধ্যে ধরা আছে ইন্দুবালা, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামীদের কণ্ঠ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লেক থানায় ঢুকে তাঁর সাধের ‘হারানো রত্নখনি’র এই ভগ্নাংশটুকুই যা দেখেছেন প্রবীণ অঞ্জন সেন। তবে লেক রোডের দীর্ঘ দিনের বাসিন্দার এখনও উৎকণ্ঠা, গহরজান-কণ্ঠের ‘ফাঁকি দিয়ে প্রাণের পাখি’, ডি এল রায়ের স্বকণ্ঠে দুষ্প্রাপ্য ব্যঙ্গ-গীতি ‘আমরা বিলেত-ফের্তা ক’ভাই’ বা অতুলপ্রসাদ সেনের গাওয়া দু’টি গানের জন্য।

১২ ফেব্রুয়ারি পুণেয় মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে এই সঙ্গীত-সন্ধানীর। তাঁর প্রাণের মিউজিক লাইব্রেরিটাই কারা আগাপাশতলা ফাঁকা করে দিয়েছে। মাসখানেকেরও পরে স্থানীয় পুলিশ হারানো সম্পদ উদ্ধার করে অভিযুক্তদের পাকড়াও করেছে।

পুলিশ জানায়, মূল অভিযুক্ত অঞ্জনবাবুর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী অমিতাভ সেনগুপ্ত। মিউজিক লাইব্রেরির তালা-চাবি তাঁর কাছে থাকত। এ ছাড়া, অজয় পাত্র নামে জনৈক পুরনো জিনিসের কারবারিকেও পুলিশ ধরেছে। তাঁর কাছে অমিতাভবাবু সব রেকর্ড বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির জিম্মা থেকে খোয়া যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধেয় থানায় ঢুকে সব দেখে অঞ্জনবাবু বলছেন, ‘‘আরও কিছু রেকর্ড পরের দিন দেখানো হবে বলে শুনছি।’’ পুলিশের দাবি, অজয়ের ডেরায় আরও কিছু রেকর্ড আছে। অঞ্জনবাবুর মিউজিক লাইব্রেরির সংগ্রহ এখনও ওরা পাচার করতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠে গান-আবৃত্তি থেকে লালচাঁদ বড়াল, টপ্পার নিকুঞ্জবিহারী দত্ত, বিষ্ণুপুর ঘরানার রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী-জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী বা তারাপদ চক্রবর্তী-সহ খান ৪০০ রেকর্ড ছিল প্রৌঢ়ের সংগ্রহে। তাঁর প্রথম যৌবন থেকে সব জমিয়েছিলেন ৬৫ বছরের অঞ্জনবাবু।

কিন্তু তা কী ভেবে নিয়ে গেলেন অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী? পুলিশের বক্তব্য, অমিতাভর ধারণা ছিল ওই পুরনো রেকর্ড বিক্রি করে অনেক টাকা মিলবে। সেই আশা অবশ্য পূরণ হয়নি তাঁর। সাকুল্যে হাজার দেড়েকের বেশি টাকা পাননি। তবে ঠিকঠাক জায়গায় গেলে রেকর্ড বিক্রি করে মোটা টাকা পাওয়া সম্ভব বলে জানাচ্ছে পুলিশই।

হারানো রেকর্ড সব হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত অঞ্জনবাবু অবশ্য খানিক অশান্তিতে রয়েছেন। তবে পুলিশের ভূমিকায় তিনি খুশি। ‘‘আর একটু দেরি হলেই চুরি করা রেকর্ড হয়ত ওরা সরিয়েই ফেলত! তখন আফসোসের শেষ থাকত না।’’— বলছেন গান-পাগল প্রৌঢ়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

78 rpm record Record Player
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE