পার্কিং লটই যখন প্রস্রাবখানা। নিজস্ব চিত্র
এই কলকাতাতেই জন্মেছি, বড় হয়েছি। এই শহরটা আমার খুবই আপন। কিন্তু বেড়াতেও খুব ভালবাসি। সেই সুবাদে দেশের অন্য অনেক শহরেও ঘুরেছি। বাইরে ছুটি কাটিয়ে নিজের শহরে ফিরে মাঝেমাঝে যে কী মন খারাপ লাগে! পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত সচেতনতার বিষয়ে আমরা যদি আরও একটু এগোতে পারতাম, তবে ভাল হত।
ছোটবেলায় এই কষ্টটা অনেক বেশি হত। বেড়িয়ে ফিরেই মনে হত, আমার প্রাণের শহরটা কেন এত অপরিষ্কতার? আগের থেকে অনেকটাই বদল এসেছে। কলকাতা এখন বেশ ঝলমলে, ঝকঝকে শহর। যাকে বলা যায় ‘# ব্লুহোয়াইট সিটি’। কিন্তু একটা সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হয়নি। যেমন ছোটবেলায় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে খুব অসুবিধেয় পড়তে হত। পাবলিক টয়লেটের বড়ই অভাব ছিল তখন। ফলে রাস্তার ধারে দুর্গন্ধ। সব মিলিয়ে বহু জনবহুল এলাকাতেই ছিল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এখন আর সে পরিস্থিতি নেই। পাবলিক টয়লেট আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। আগের থেকে বেশি নজর পড়ে পরিচ্ছন্নতার দিকেও। প্রয়োজনে পড়লে রাস্তায় বেরিয়েও ততটা অসুবিধা হয় না। তবু যেন যথেষ্ট নয় পরিকাঠামো। রাস্তাঘাটে শৌচাগার তৈরি হলেও জনসংখ্যা যে বেড়েছে অঢেল। ফলে এখনও এই শহরে রাস্তাঘাট নোংরা করার প্রবণতা কমেনি। বরং কোনও কোনও জায়গায় তা বেড়েছে বলেই মনে হয়।
রাস্তায় আরও শৌচাগার বাড়ানোর আর্জি জানালেই তা সম্ভব হবে কি না, জানি না। অনেকেই বলতে পারেন, প্রতি মোড়ে মোড়ে পাবলিক টয়লেট বানানো সম্ভব নয়। কিন্তু বাজার-সমীক্ষা করে যদি গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গায় কয়েকটি আরও শৌচালয় বানানো যায়, তবে সাধারণ মানুষের অনেকটাই উপকার হয়। জায়গার অভাব যদি এই কাজে সমস্যার কারণ হয়, তবে নতুন কোনও উপায়ও ভাবা যেতে পারে। যেমন, ভেবে দেখা যায় কয়েকটি পাবলিক টয়লেট ভ্যান আনার কথা।
তবে এ সবের পাশাপাশি, আমাদের সকলকে আরও অনেক সচেতন হতে হবে। শৌচালয়ের অভাব মানেই যে যত্রতত্র রাস্তা নোংরা করার অধিকার রয়েছে, তেমন কখনওই নয়। নিজের শহরকে সকলেই ভালবাসেন। সেই ভালবাসা যেন নিজেদের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এ সংক্রান্ত সচেতনতার প্রচার আর একটু বাড়লে হয়তো পরিস্থিতি অনেকটাই বদলাবে। যে কোনও সময়েই আমরা ভুল শোধরাতে পারি, ইচ্ছেটাই আসল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy