—প্রতীকী চিত্র।
এ যেন উলট-পুরাণ!
তদন্তে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এ বার অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠল খোদ আক্রান্তের পরিবারের বিরুদ্ধে! পুলিশের দাবি, রবিবার সকালে ব্যারাকপুরে গোপাল সাউ নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে তারা তদন্তে গেলেও গোপালবাবুর পরিবার তাতে তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছে না। তাঁর পরিজনেরা পুলিশের সঙ্গে তেমন সহযোগিতাও করছেন না বলে জানা গিয়েছে। এমনকী, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কোনও কথা বলতে রাজি হননি তাঁরা। কেন পরিবারটি এমন আচরণ করছে, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
পুলিশের ধারণা, যারা গুলি চালিয়েছে, হয় তারা গোপালবাবুর পরিচিত। তা না হলেও কী কারণে গুলি চলেছে, তা গোপালবাবু বা তাঁর পরিবারের অজানা নয়। গোপালবাবুর মোবাইলের ‘কল ডিটেলস’ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনের কল লিস্ট যাচাই করলে ঘটনা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
দুষ্কৃতীরাও শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’
ওই ঘটনার পিছনে আর্থিক লেনদেন এবং সুদের কারবার জড়িয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। কান্নন বলেন, ‘‘আমাদের হাতে বেশ কিছু তথ্য এসেছে। তার মধ্যে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও রয়েছে। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
সদরবাজার এলাকায় গোপালবাবুর বাড়িতে গিয়ে থ হয়ে গিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। প্রাসাদোপম বাড়ি। আধুনিক সব ব্যবস্থা রয়েছে। গোপালবাবু দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থায় বাসের চালক। যে চাকরি তিনি করেন, সেই আয় থেকে এমন বৈভব সম্ভব নয় বলেই পুলিশের দাবি। গোপালবাবুর আয়ের উৎসও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
রবিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন গোপাল। সে সময়ে একটি মোটরবাইকে করে দু’জন এসে সামনে থেকে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। পরে পরিবারের লোকজন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও গোপালবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শেষ পর্যন্ত ব্যারাকপুর থানা কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে গোপালবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এক পুলিশকর্তা জানান, গোপালবাবুর পরিবারের লোকেরা তাঁদের বলেছেন, ‘‘যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে। এ নিয়ে আর বেশি কিছু করার দরকার নেই। তা ছাড়া, উনি (গোপালবাবু) তো ভালই আছেন।’’ গোপালবাবুর পরিবারের লোকেদের এমন আচরণে অবাক তদন্তকারীরা।
মণিরামপুর, সদরবাজার, নয়াবস্তি এমনিতেই গোলমালপ্রবণ এলাকা। সপ্তাহ তিনেক আগে শেখ চাঁদু নামে এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এলাকার ‘বেতাজ বাদশা’, তৃণমূল নেতা শিবু যাদবের। এলাকায় ‘ভাইয়া’ নামেই তাঁকে চেনে লোকে। দিন কয়েক আগে পুলিশ ভাইয়াকে গ্রেফতার করেছে। এলাকা এখন কিছুটা শান্ত। এরই মধ্যে ফের গুলি চলায় কপালে ভাঁজ পড়েছে পুলিশ কর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy