খালগুলির চেহারা বদলানোর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। নিজস্ব চিত্র
র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স থেকে বিশেষ অভিযান করে রোগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়েছিল অনেক। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কেন না গোটা প্রক্রিয়াই শুরু হয়েছিল দেরিতে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, নতুন বছরের গোড়া থেকেই জোর কদমে কাজ শুরু হবে। যাতে একই ভোগান্তি আর না হয়।
কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। মেলা নিয়েই ব্যস্ত আধিকারিক থেকে কর্মীরা। নেই সচেতনতার প্রচার। নতুন বছরের চার দিন গড়িয়ে গেলেও জনমত গঠনে এখনও পর্যন্ত সক্রিয়তা চোখে পড়েনি বাসিন্দাদের। তা হলে হুঁশ ফিরল কোথায়? এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিধাননগর পুর এলাকায় মশা এবং মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। পুরসভা অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, মেলার মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ততা থাকলেও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কোনও গাফিলতি হয়নি। সেই কাজ চলছেই। বছরের প্রথম থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
যদিও একাংশের মতে, চলতি মাসে তাপমাত্রা নামায় মশার দাপটও কম। তাই মশাবাহিত রোগে আক্রান্তেরও খবর নেই। ফলে মশা দমনে সক্রিয়তা আরও কমেছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু ওই পুর এলাকায় গত বছর মশাবাহিত রোগের প্রকোপে বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছয় শতাধিক। ফলে সেখানকার বাসিন্দারা মনে করেন, মেলা- উৎসবের সময়েও মশাবাহিত রোগ দমনের কর্মসূচিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অথচ সেই বিষয়ে প্রশাসনের তরফে কার্যত কোনও হেলদোল চোখে পড়ছে না বলেই অভিযোগ।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বছরের শুরু থেকেই ঝোপজঙ্গল সাফাই, খাল-বিল পরিচ্ছন্ন রাখা, মূল খালগুলিতে জলের প্রবাহ বাড়ানো এবং সচেতনতার কাজে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বিশেষত, বাগুইআটি থেকে মহিষবাথান এলাকায় একাধিক ওয়ার্ডে নিকাশি ব্যবস্থার হাল খুব খারাপ। সেখানে বছরের শুরু থেকে জোর কদমে কাজ না করলে ফের মশা থাবা বসাবে।
গোটা রাজ্যের মধ্যে গত বছর মশাবাহিত রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল দক্ষিণ দমদম এবং সল্টলেকে। সেখানে মশাবাহিত রোগে হাজারেরও বেশি মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। বেসরকারি হিসেব বলছে, কমপক্ষে ৫০ জন মানুষের মৃত্যুও ঘটেছে এই সব এলাকায়। যদিও সরকার এই তথ্য মানেনি।
বিধাননগরবাসীদের একাংশের বক্তব্য, বর্তমান পুরবোর্ড সৌন্দর্যায়ন থেকে শুরু করে হকার উচ্ছেদ, সবেতেই নজর দিচ্ছে। স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য কয়েক হাজার মানুষকে পথেও নামাচ্ছে। অথচ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সেই সক্রিয়তা কেন চোখে পড়ছে না, প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
এই অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ। বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের দাবি, পরিষেবার গতি কিছুটা কমলেও বন্ধ হয়নি। ২ জানুয়ারি থেকেই পুরসভার ৪১টি ওয়ার্ডেই বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ এবং সচেতন করার কাজ শুরু হয়েছে। জনমত গঠনের কাজও দ্রুত শুরু হবে।
তাঁর দাবি, এ বার বছরের শুরু থেকেই একগুচ্ছ পরিকল্পনা কার্যকরী করা হচ্ছে। প্রথমত, সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কোন কোন এলাকায় কেন মশার দাপট বেড়েছিল। সেই এলাকাগুলিকে বিশেষ জোন হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত সমস্ত দফতর মিলে একযোগে ঝাপিয়ে পড়া হবে। দ্বিতীয়ত, পরিকাঠামোর উন্নয়নের নজর দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয়ত, বাসিন্দা থেকে স্থানীয় ক্লাব-সংগঠনগুলিকে যুক্ত করে বিশেষ দল তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy