সঙ্কল্প দাস
স্কুলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে, শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই ছেলেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বালিগঞ্জ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র সঙ্কল্প দাসের অভিভাবক। রবিবার সঙ্কল্পের মা খুকু দাস বলেন, ‘‘আজ, সোমবার স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে টিসি-র জন্য আবেদন করব।’’ তিনি জানান, ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত সঙ্কল্পকে অন্য স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানোর চেষ্টা করা হবে। অথবা কোনও বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে ভর্তি করা হবে। কিন্তু ওই স্কুলে আর নয়।
প্রসঙ্গত গত অক্টোবর থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সঙ্কল্পের পরিবারের দ্বন্দ্বের শুরু। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের যে সুবিধা সঙ্কল্প পেয়ে এসেছে, তা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় এই দ্বন্দ্ব। ওই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়েই সঙ্কল্পের ডিসলেক্সিয়া ধরা পড়ে। বিষয়টি সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-কে জানায় পরিবার। এর পরেই তাকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর সুযোগ সুবিধা দেওয়া শুরু হয়।
খুকুদেবীর দাবি, দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝি সময়ে বেঁকে বসেন নতুন অধ্যক্ষ সুমন লতা। অধ্যক্ষ জানান, প্রতিবন্ধীর শংসাপত্র না থাকায় সঙ্কল্পকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে না। তাই অঙ্কন, হোম সায়েন্স বা সঙ্গীতের মতো বিষয় নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেন কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন খুকুদেবী। পাশাপাশি আইনি জটিলতায় বহু প্রতিবন্ধীকে শংসাপত্র যে দেওয়া যায়নি, তা স্বীকার করে রাজ্য সরকার। যে কারণে দ্রুত বিধি তৈরি করা হয়েছে। তবুও নরম হননি কর্তৃপক্ষ। আদালতের রায়ে ফের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের একাংশ সঙ্কল্পের পাশে দাঁড়াননি বলেই দাবি খুকুদেবীর। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে মানসিক ভাবে সাহায্য করার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু ক্লাসে ঠিক মতো নজর রাখা হয় না ওর উপরে। এই যন্ত্রণা থেকে ছেলেকে মুক্তি দিতে চাই।’’
শিক্ষাবর্ষের প্রায় শেষে অন্য কোনও স্কুল ভর্তি না নিলে তো সঙ্কল্পের এক বছর নষ্ট হবে! খুকুদেবী বলেন, ‘‘একটা বছরের থেকে আমার ছেলের জীবন অনেক দামি। শিক্ষকেরা ওর সঙ্গে ভাল ভাবে কথাই বলেন না। ছেলের মুখ দেখে আমি বুঝতে পারি, সেটা কতটা কষ্টের ওর কাছে।’’
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন স্কুলের অধ্যক্ষা সুমন লতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিছুটা শোনার পরে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ এর পরেই ফোন কেটে দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy