Advertisement
০৩ মে ২০২৪

এখানে পাঁচতলা উঠলেও স্কুল থাকবে একটি তলায়: পার্থ

রাজারহাটের দশদ্রোণে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি স্কুল গত শনিবার ভেঙে দিয়েছিলেন স্থানীয় প্রোমোটার। মঙ্গলবার সেই স্কুলটি ঘুরে দেখলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন, সরকার টাকা দিচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব পঠনপাঠন চালু করতে হবে।

রাজারহাটের সেই স্কুলে শিক্ষামন্ত্রী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

রাজারহাটের সেই স্কুলে শিক্ষামন্ত্রী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৯
Share: Save:

রাজারহাটের দশদ্রোণে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি স্কুল গত শনিবার ভেঙে দিয়েছিলেন স্থানীয় প্রোমোটার। মঙ্গলবার সেই স্কুলটি ঘুরে দেখলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন, সরকার টাকা দিচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব পঠনপাঠন চালু করতে হবে।

পাশাপাশি পার্থবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, স্কুলটি ওখানেই থাকবে। এমনকী, প্রোমোটার ভবিষ্যতে ওই জমিতে পাঁচতলা বাড়ি করলে একটি তলা স্কুলকে দিতে হবে। জানা গিয়েছে, মেরামতির কারণে আপাতত দিন সাতেক স্কুল
বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, সরকার নতুন ভাবে ওই স্কুলটি তৈরি করে দেবে। এ ভাবে স্কুল ভেঙে প্রোমোটিং যে বরদাস্ত করা হবে না, তা-ও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

মঙ্গলবার একই সুর শোনা গিয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর গলাতেও। স্কুল পরিদর্শনে এসে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আজ সকালে আমাকে ফোন করে স্কুল পরিদর্শনে আসার নির্দেশ দেন। শুনেছি প্রোমোটারের লোকজন স্কুলের লোকজনকে ভয় দেখাচ্ছেন। আমরা সব সময়ে স্কুলের পাশে আছি। দেখি কে কী ক্ষতি করতে পারে।’’

গত শনিবার দশদ্রোণের লীলাদেবী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশন নামে ওই স্কুলটি ভেঙে দেন স্থানীয় প্রোমোটার মিজানুর রহমান। তাঁকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। একটি দোতলা বাড়ির উপরতলায় রয়েছে স্কুলটি। নীচে বেশ কয়েকটি দোকান।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুল এবং একতলার দোকান সমেত গোটা বাড়িটিই কিনেছিলেন মিজানুর। কিন্তু কোনও নোটিস ছাড়াই তিনি স্কুলটি ভেঙে দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তিনি ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে আলাদা করে জমি
কিনে দিয়েছিলেন।

মিজানুরের থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ যে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন, এ দিন সেই প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, ‘‘হতে পারে ওই টাকা নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যে ভাবে স্কুলটি উৎখাত করতে চাওয়া হয়েছে, তা জনস্বার্থ বিরোধী। প্রয়োজনে আলোচনার টেবিলে বসতে পারতেন প্রোমোটার। স্কুল ওখানেই থাকবে। পাঁচতলা বাড়ি হলে একটি তলা স্কুলকে দিতে হবে।’’

স্কুল ভেঙে দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব বিধাননগর পুর নিগমও। বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘স্কুল ভাঙার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওই জমিটিও মিউটেশন করেননি প্রোমোটার। তাঁকে শো-কজ
করা হবে। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’

অন্য দিকে, স্কুল ভাঙার ঘটনায় মিজানুরের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে বুদ্ধদেব দাস নামে স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুদ্ধদেব আবার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচিত বলে এলাকায় খবর।

যদিও স্বাতী বলেন, ‘‘এক বছরের কিছু বেশি সময় আমি কাউন্সিলর হয়েছি। সল্টলেক থেকে ওখানে যাই। পুর পরিষেবার কাজ করে ফিরে আসি। কে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, তা আমার জানার কথা নয়। কেউ দোষ করলে শাস্তি পাবে।’’

তদন্তকারীদের দাবি, স্কুলের সঙ্গে প্রোমোটারের রফা করানো থেকে শুরু করে স্কুল ভাঙার ছক কষা— সবেতেই বুদ্ধদেবের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মিজানুরের।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে সরকারি জায়গাতেও ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকী স্কুল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তাঁদের সঙ্গে যখন ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রোমোটারের কথা চলছে, সেখানে বুদ্ধদেব উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee School Building
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE