Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শহর ছাড়ালেই পথে পথে গতির মারণ টক্কর

দূষণের কারণে শহরে স্পঞ্জ আয়রনের কারখানা নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জে এখনও কমেনি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার রমরমা।

বেপরোয়া: এ ভাবেই চলছে বিপজ্জনক দৌড়। ছবি: শৌভিক দে।

বেপরোয়া: এ ভাবেই চলছে বিপজ্জনক দৌড়। ছবি: শৌভিক দে।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

কলকাতায় নিষিদ্ধ হতেই পেট্রোলের অটো দেদার চলতে শুরু করে শহরতলিতে।

দূষণের কারণে শহরে স্পঞ্জ আয়রনের কারখানা নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জে এখনও কমেনি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার রমরমা।

ঠিক একই চিত্র এ রাজ্যে গতির দৌরাত্ম্যেও। মোটরবাইকের রেস কমাতে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় বসেছে ‘স্পিড ব্রেকার রেলিং’। কলকাতা পুলিশের নজরদারিও চলে নিয়মিত। একই ভাবে মোটরবাইকের কসরত আটকাতে নজরদারি শুরু হয়েছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট
এলাকাতেও। কিন্তু তার বাইরে? মোটরবাইকের রেসিং যে রমরমিয়ে চলছে, তার প্রমাণ মিলেছে গত শনিবার গলসির দুর্ঘটনাতেই। দুর্ঘটনার সময়ে মৃত যুবকের মোটরবাইকের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার।

কলকাতা শহর এলাকা থেকে একটু দূরে গেলেই রাজ্য ও জাতীয় সড়কগুলিতে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালানোর ঘটনা। কোথাও কোথাও শুধু মোটরবাইক চালানোর নেশাতেই অনেকে বেরিয়ে পড়েন। বন্ধুদের সঙ্গে বাইকের কসরত করতে করতে পিচের রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে এঁকেবেঁকে দৌড়ে যায় মোটরবাইক। কোথাও আবার দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালানো নিয়ে প্রতিযোগিতাও হয়।

যেমন ধরা যাক, মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে কাউকে ২৫০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হবে! পারলেই মোটা টাকা পুরস্কার। সেই মোহে বাইক ছুটিয়ে বেরিয়েও পড়েন অনেকে। পরিণাম যা হওয়ার তা-ই হয়। প্রাণ যায় বহু যুবকের।

গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে সারা রাজ্যেই ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প শুরু হয়েছে। গাড়ি সাবধানে চালানোর জন্য রাজ্য জুড়ে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। পথ নিরাপত্তার জন্য পৃথক আইনও তৈরি হয়েছে। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জে গতির দৌরাত্ম্য ক্রমেই বেড়ে চলেছে। রাজ্য ট্র্যাফিক বিভাগের হিসেব বলছে, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প শুরুর পর থেকে দ্রুত গতির গাড়ির উপরে কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। আগে যেখানে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য তিন মাসে হাজারখানেক মামলা দায়ের হত, সেখানে বর্তমানে তার সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘গতি কমাতে স্পিড গভর্নর বসানো হয়েছে। নজরদারি বেড়েছে। অনেক জায়গায় স্পিড ব্রেকার রেলিং-ও বসানো হয়েছে। বেড়েছে জরিমানার পরিমাণ। কিন্তু কিছুতেই গতির লড়াই কমানো যাচ্ছে না।’’ ওই কর্তার বক্তব্য, ‘‘আসল বিষয় হচ্ছে, হেলমেট পরা বা নির্দিষ্ট গতিতে গাড়ি চালানো নিশ্চিত করতে জরিমানা বাড়িয়ে বা নজরদারি বাড়িয়ে কোনও লাভ নেই। এ জন্য রাজ্যবাসীর মানসিকতা পাল্টাতে হবে। না হলে এ সব কমবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Car racing Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE