উদ্ধার হওয়া গাঁজা। নিজস্ব চিত্র
এ শহরের কলেজপড়ুয়াদের একাংশ যে নিয়মিত মাদকের নেশায় ডুবছে, তা কলকাতায় হানা দিয়ে জানতে পেরেছিলেন নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র অফিসারেরা।
কোথা থেকে সেই মাদক আসছে, তা খুঁজতে গিয়ে উঠে এসেছিল মালদহের কথা। রবিবার সেখানে হানা দিয়ে ধরা হল দুই ব্যক্তিকে। মাদকের উৎস খোঁজার পাশাপাশি এ শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের পড়ুয়াদের সচেতন করতে স্কুল-কলেজে গিয়ে প্রচারের কাজটাও শুরু করেছেন এনসিবি অফিসারেরা। আজ, মঙ্গলবার শিয়ালদহে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যাওয়ার কথা এক অফিসারের। জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষের দিকে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এই প্রচারের কাজ করা যায়নি। জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকে তা শুরু হয়েছে।
এ দিকে মাদক সরবরাহের অভিযোগে মালদহ থেকে কৃষ্ণচন্দ্র দাস এবং রফিকুল ইসলাম চৌধুরী নামে দুই ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে বলে এনসিবি-র পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব এ দিন জানিয়েছেন। এনসিবি সূত্রের খবর, এই দু’জনেই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিতেন। কৃষ্ণচন্দ্রের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এবং রফিকুলের শাড়ির দোকান রয়েছে। কিন্তু তার আড়ালে দু’জনেই মাদকের ব্যবসা করেন এবং দু’জনের কাছ থেকেই প্রচুর পরিমাণ গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট এবং বুপ্রেনরফিন নামে এক ধরনের ইঞ্জেকশনের অ্যামপুল পাওয়া গিয়েছে।
এনসিবি অফিসারদের অভিযোগ, শহরের যুব সমাজের একটা বড় অংশ এখন মাদকের নেশায় মেতেছে। তাঁদের একটি ছোট অংশকে যাঁরা নিয়মিত মাদক সরবরাহ করতেন, তাঁদেরই এক জনের কাছে গাঁজা, ইয়াবা এবং ইঞ্জেকশন পাঠাতেন ধৃত ওই দুই ব্যক্তি। অফিসারদের দাবি, কৃষ্ণচন্দ্র এবং রফিকুলের কাছ থেকে আসা মাদকের একটা বড় অংশ বাংলাদেশেও পাচার হয়ে যেত বলে জানা গিয়েছে। কলকাতায় যাঁর কাছে তাঁরা মাদক সরবরাহ করতেন, তাঁর খোঁজ চলছে বলেও জানা গিয়েছে।
দিলীপবাবু জানান, মালদহ স্টেশনের গায়ে কৃষ্ণচন্দ্রের দোকান রয়েছে। রবিবার সেখানে অফিসারেরা হানা দিয়ে কৃষ্ণচন্দ্রের কাছ থেকে সাড়ে চার কিলোগ্রাম গাঁজা, এক একটি একশো মিলিগ্রাম ওজনের মোট ৩০৩টি ইয়াবা ট্যাবলেট (মেটামফেটামাইন গোষ্ঠী) পান। জানা যায়, গাঁজা এসেছে মণিপুর থেকে আর ইয়াবা ট্যাবলেট এসেছে মায়ানমার থেকে। তাঁকে জেরা করে জানা যায়, তিনি মাদক চক্রের এক জন সদস্য। কাজ করেন রফিকুল নামে এক ব্যক্তির অধীনে। কালিয়াচকে হানা দিয়ে ধরা হয় রফিকুলকে। তাঁর কাছ থেকে ৫৫২টি ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ১৯৪৭টি বুপ্রেনরফিন ইঞ্জেকশন পাওয়া যায়।
এনসিবি অফিসারেরা জানিয়েছেন, সাধারণত নেশা ছাড়ানোর সময়ে মাদকাসক্তের যাতে শরীর খারাপ না হয়, ‘উইথড্রয়াল’ উপসর্গ দেখা না দেয়, তার জন্য হাল্কা ডোজে এই বুপ্রেনরফিন ইঞ্জেকশন তাঁদের দেওয়া হয়। এমনকী, চিকিৎসকেরাও তা নেওয়ার জন্য বলেন। অভিযোগ, এখন নেশা করার জন্য সস্তার সেই ওষুধই বেশি মাত্রায় নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy