কলকাতা পুরসভার ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অভিভাবক কে?
পুর রাজনীতিতে এ নিয়ে জোর আলোড়ন চলছে। কারণ গত দেড় বছর ধরে এই পদটি খালি রয়েছে। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেন দাশগুপ্ত ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মারা গিয়েছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারে আসন খালি হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে পুনর্নির্বাচন করতে হয়। তা হলে দেড় বছরেরও কেন সেখানে ভোট হল না?
পুরসভায় কান পাতলে শোনা যায়, ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়ার প্রধান দাবিদার হিসেবে বছর খানেক ধরেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন পুরসভার এক মেয়র পারিষদের পুত্র। এবং তাঁর আত্মবিশ্বাস এতটাই যে দল তাঁকে প্রতীক না দিলেও তিনি নির্দল হিসেবে জিতবেন বলেই দাবি। আর মুখে কেউ স্বীকার না করলেও শোনা যাচ্ছে মেয়র পারিষদের ছেলেকে প্রার্থী করা নিয়ে জেদাজেদির ফলেই আটকে রয়েছে ওই ওয়ার্ডের উপনির্বাচন। প্রশ্ন উঠছে যে, দলীয় নেতৃত্ব এত দিনেও বিষয়টি মীমাংসা করতে পারলেন না কেন?
এ প্রসঙ্গে দিন কয়েক আগে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল মেয়র পারিষদের ছেলেকে প্রার্থী করার বিষয়টি এড়াতে পারছেন না বলেই কি ভোট হচ্ছে না? শুধুমাত্র হেসেই পুরো ব্যাপারটি এড়িয়ে যান মেয়র।
পুরসভা সূত্রের খবর, নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহের ছেলে অমিত সিংহ নিজেকে ওই পদের অন্যতম দাবিদার হিসেবে মনে করছেন। তারক সিংহ শনিবার বলেন, ‘‘আমার ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে। এলাকার সকলে ওকে পছন্দ করে। সমাজসেবী হিসেবেও সুনাম রয়েছে।’’ কিন্তু আপনার মেয়েও তো কাউন্সিলর? একই পরিবারে তিন জন সংসদীয় পদে থাকলে তো দলে প্রশ্ন উঠতে পারে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘পুরো বংশই তো দল করে।’’ যদিও তারকবাবুর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘এক পরিবারে তিন জন এমন উদাহরণ তো এখনও রয়েছে। পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ একাধারে কাউন্সিলর, বিধায়ক। তাঁর মেয়ে সানা আহমেদও কাউন্সিলর। আবার ইকবালের বৌদি সাংসদ। একই ভাবে কাঁথির শিশির অধিকারীর পরিবারেও তিন জন সংসদীয় পদে রয়েছেন। তা হলে এখানে আপত্তি কোথায়?’’ ওই নেতার দাবি, ‘‘১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সব কাজেই মানুষের পাশে রয়েছেন অমিত। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।’’
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে কিছু জানিয়েছেন? প্রশ্ন করা হয়েছিল তারকবাবুকে। তাঁর জবাব, ‘‘আমি নিজে শোভনকে ছেলের ব্যাপারে বলেছি। ও বলেছে, দেখছি।’’ তবে এত দিনেও ভোট না হওয়া ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তারকবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য নিবার্চন কমিশন অনেক আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কাউন্সিলর না থাকা ওয়ার্ডের সবিশেষ জানতে চেয়েছিল। কিন্তু পুরসভা সময়ে সেই তথ্য জানায়নি।’’ এ বিষয়ে পুরসভার এক আমলা জানান, পুরবোর্ডের সম্মতি না মেলায় প্রথম ৬ মাসের মধ্যে তা পাঠানো হয়নি। তবে গত অক্টোবরে ‘পদ খালি’ বলে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। পুর প্রশাসনের ধারণা, রাজ্য নির্বাচন অফিস মনে করলে আগামী পঞ্চায়েতের সঙ্গেই ওই ভোট সেরে ফেলতে পারে।
সম্প্রতি অবশ্য মেয়রকে নিয়ে এই ডামাডোলের বাজারে ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডকে ঘিরে আরও এক নয়া গুঞ্জন। তা হল, সম্ভাব্য কোনও মেয়রকে ওই ওয়ার্ড থেকে তুলে আনা হবে। যদিও এ সব গুঞ্জনে দলীয় কোনও সমর্থন মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy