Advertisement
১১ মে ২০২৪
ভিআইপি রোড

জলা বোজানো মানল পুরসভা

ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত জলাশয় ছিল। সেই জলাশয় ফেরানোর পক্ষপাতী দক্ষিণ দমদম পুরসভাও। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যালের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের কাছে শুক্রবার এমনটাই জানাল দক্ষিণ দমদম পুরসভা। ভিআইপি রোডের ধারে নয়ানজুলি ভরাটের অভিযোগ করে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি রিপোর্ট দিয়েছিল।

বিতর্কিত সেই জায়গা। — ফাইল চিত্র।

বিতর্কিত সেই জায়গা। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত জলাশয় ছিল। সেই জলাশয় ফেরানোর পক্ষপাতী দক্ষিণ দমদম পুরসভাও। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যালের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের কাছে শুক্রবার এমনটাই জানাল দক্ষিণ দমদম পুরসভা।

ভিআইপি রোডের ধারে নয়ানজুলি ভরাটের অভিযোগ করে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি রিপোর্ট দিয়েছিল। সেই রিপোর্টের কথা বিধানসভায় তুলেছিলেন নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিল, স্থানীয় বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুকে চাপে ফেলতেই সব্যসাচী ওই রিপোর্টের কথা বলেছিলেন। পরে বিধানসভার বাইরে সুজিতবাবুও নিউ টাউনের সিন্ডিকেট বিতর্ক নিয়ে সব্যসাচীবাবুর নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বরাবরই একে অন্যের বিরোধী বলে পরিচিত ওই দুই বিধায়কের এ হেন আচরণে অস্বস্তিতে পড়ে দল। এ দিন গ্রিন ট্রাইব্যুনালে পেশ করা দক্ষিণ দমদম পুরসভার বক্তব্যেও কার্যত স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টই অনেকাংশে মান্যতা পেল।

উল্টোডাঙা থেকে ভিআইপি রোড ধরে বিমানবন্দরের দিকে এগোলেই চোখে পড়ে বড় বড় আবাসন, শপিং মল, বিয়েবাড়ি, ব্যাঙ্কোয়েট হল, শো-রুম। লেকটাউন পর্যন্ত এই অবস্থা। ওই সব জায়গায় নয়ানজুলি ভরাট করে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে— এমন অভিযোগে গ্রিন ট্রাইবুন্যালে জনস্বার্থ মামলা হয়। এ দিন মামলায় রায় বেরোনোর কথা ছিল। কিন্তু দক্ষিণ দমদম পুরসভা আর পূর্ত দফতরের আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হয়ে বিচারক প্রতাপকুমার রায় এবং পি মিশ্রকে অনুরোধ করে জানান, তাঁরা গতকাল নোটিস পেয়েছেন। সব কাগজ খতিয়ে দেখে তবেই নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে পারবেন। বিচারকরা যেন তাঁদের কয়েক দিন সময় দেন। ফলে মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ অগস্ট ধার্য
করেন বিচারকেরা।

মামলাকারীর আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ি বিচারককে জানান, উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত নয়ানজুলি ভরাট করে যে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে আদালতের কাছে সেই সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়া হয়েছে। ওই সব জায়গা খনন করে পুনরায় নয়ানজুলি ফেরাতে নির্দেশ দিক আদালত। পাল্টা বক্তব্যে দক্ষিণ দমদম পুরসভার আইনজীবী অমলেশ রায় জানান, ওই জায়গায় নয়ানজুলি ছিল না। পুরসভার আইনজীবীর তথ্যের বিরোধীতা করেন অনিন্দ্যবাবু।

নয়ানজুলি না জলাশয়— এ নিয়ে বিচারকের সামনেই এ দিন দু’পক্ষের আইনজীবীদের বাদানুবাদ শুরু হয়। বিচারক প্রতাপকুমার রায় পুরসভার আইনজীবীদের কাছে নয়ানজুলি আর জলাশয়ের ফারাক জানতে চাইলে পুরসভার আইনজীবীরা জানান, পুর-রেকর্ডে ওই জায়গাটি জলাশয় বলে দেখানো ছিল। পুরসভাও জলাশয় ফেরানোর পক্ষপাতী। পরে আদালতের বাইরে অমলেশবাবু বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের জায়গা। খনন করতে হলে ওদেরই করতে হবে। আমরাও চাই জলাশয় ফিরুক।’’

উল্লেখ্য জুনে গ্রিন বেঞ্চের নির্দেশে নিযুক্ত অ্যাডভোকেট কমিশনার ভিআইপি রোডের ধারের ওই জায়গাটি পরিদর্শনে যান। তখন দেখা যায় সার্ভিস রোডের পাশেই নয়ানজুলির মতো দেখতে বড় বড় গর্ত ভেজা মাটি দিয়ে ভরাট করা। তার উপরে বসানো ঘাসের চাঙড়। কোথাও কোথাও আবার টাইল্স বসানো হয়েছে। সেই ছবিও তুলেছিলেন অ্যাডভোকেট কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE