প্রতীকী ছবি।
সন্ধ্যায় সবে বাজেয়াপ্ত হয়েছে সোনা। ৫৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকার সেই ২ কিলোগ্রাম সোনা নিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভীষণ ব্যস্ত কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতর। তখনই বিষয়টি মাথায় আসে অফিসারদের। তাঁদের এই ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে রাতে ফের সোনা পাচারের চেষ্টা হবে না তো! সেই সময় তাই এয়ারওয়েজের উড়ান সবে ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় নেমেছে।
ভাবনাটা মাথায় আসার পরেই ছোটেন শুল্ক অফিসারেরা। মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে তাই এয়ারওয়েজের সমস্ত বিমান চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে সত্যি হল সন্দেহ। সেই বিমানের ৫৫জে আসনের তলা থেকে পাওয়া গেল সম পরিমাণ সোনা। এক দিন পরে সেই সোনার দাম বেড়ে হয়েছে ৫৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।
এত দিন কলকাতা বিমানবন্দরে পাচার হয়ে আসা প্রায় ১০০ শতাংশ সোনাই এসেছে ব্যাঙ্কক থেকে। এ দিন সন্ধ্যাতেও যে সোনা পাওয়া গিয়েছিল তা ব্যাঙ্কক থেকে আসা ইন্ডিগোর বিমানের ১১সি আসনের তলা থেকেই মিলেছিল। এক দিনে ব্যাঙ্কক থেকে আসা পর পর দু’টি বিমান থেকে এক কোটি ১৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বেশি সোনা বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা প্রায় বেনজির বলে জানিয়েছেন শুল্ক দফতরের অফিসারেরাই।
শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে দু’টি বড় বিস্কুট চার ভাগ করে আনা হয়েছিল। পরে তাই-এর বিমানে ছিল বড় দু’টি বিস্কুট। দু’টি ক্ষেত্রেই আসনের তলায় আঠা দিয়ে প্যাকেটে ভরা সোনার বিস্কুট আটকানো ছিল। শুল্ক অফিসারেরা জানিয়েছেন, ওই দুই আসনে বসে আসা যাত্রী এই সোনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অফিসারদের সন্দেহ, এই সোনা পাচারকারীদের সঙ্গে বিমানবন্দরের কর্মীদের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে। নির্দিষ্ট ওই আসনের তলায় সোনা পাঠানোর খবর আগাম বিমানবন্দরের কোনও কর্মীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি সাফাই করার সময়ে সন্তর্পণে ওই সোনা বার করে নিয়ে পরে বাইরে চলে আসছেন।
আগেও এ ভাবে বিমানের আসনের তলায় আঠা দিয়ে আটকে সোনা পাচারের চেষ্টা করা হয়েছে। অফিসারদের একাংশের মতে, এ ভাবে হয়তো অনেক সোনা তাঁদের হাত ফস্কে বেরিয়েও গিয়েছে। এক অফিসারের কথায়, ‘‘ইদানীং কড়াকড়িও বেড়েছে। যাত্রীদের সঙ্গে আনা ১-২০০ গ্রাম সোনাও ধরা পড়ে যাচ্ছে। তাই আবার এই পথ ধরেছে পাচারকারীরা।’’
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইন্ডিগোর উড়ানে আসা সোনা সম্পর্কে নির্দিষ্ট খবর ছিল না শুল্ক অফিসারদের কাছে। তাঁরা এখন ব্যাঙ্কক থেকে আসা সমস্ত বিমানেই রুটিন মাফিক তল্লাশি চালান। তবে, সব আসন দেখা সম্ভব হয় না। মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও এ ভাবে ইন্ডিগোর কয়েকটি আসনের তলা তল্লাশি করে তাঁরা যখন ফিরে আসছিলেন তখন ইন্ডিগোর নিজস্ব কর্মীরাই বিমান পরিষ্কার করার সময়ে ১১সি আসনের তলায় ওই সোনা দেখতে পান। তাঁরাই আবার ডেকে পাঠান শুল্ক দফতরের অফিসারদের।
পরে গভীর রাতে তাই এয়ারওয়েজের বিমানে সমস্ত আসনের তলাতেই তল্লাশি চালান অফিসারেরা। তাতেই আবার পাওয়া যায় সোনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy