Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নিকাশি বুজিয়ে ভুগছে রাজারহাট

অবস্থার কথা স্বীকার করলেও বিধাননগর পুরসভার পাল্টা অভিযোগ, খাল বুজিয়ে একের পর এক কলোনি তৈরি করা হয়েছে। ওই এলাকায় কার্যত কোনও নিকাশি ব্যবস্থাই নেই। নতুন করে নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করতে গেলে বসতি এলাকার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০১:০৬
Share: Save:

পুকুর, খাল, নিচু জমি ভরাট করে বসতি গড়ে উঠেছে। আর সেটাই বুমেরাং হয়েছে বাসিন্দাদের কাছে। তাই এ বারের বর্ষায় এখনও পর্যন্ত বিধাননগরের অন্য জায়গায় জল না জমলেও ১২, ১৪, ২০, ২১ এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জল জমেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষার সময়ে দীর্ঘদিন তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। সমাধানে কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। এ বারেও বেশ কয়েক দিন জলবন্দি হয়েছিলেন এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

অবস্থার কথা স্বীকার করলেও বিধাননগর পুরসভার পাল্টা অভিযোগ, খাল বুজিয়ে একের পর এক কলোনি তৈরি করা হয়েছে। ওই এলাকায় কার্যত কোনও নিকাশি ব্যবস্থাই নেই। নতুন করে নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করতে গেলে বসতি এলাকার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। ফলে পরিকল্পনা তৈরি করতেই সমস্যায় পড়েছে পুরসভা।

কী ভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, বিধাননগর পুর এলাকার নিকাশি নির্ভর করে বাগজোলা, বিবি ওয়ান, কেষ্টপুর, ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল, পাশ খাল, নোয়াই খালের উপরে। ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা এবং সাধারণ নিকাশি নালার মাধ্যমে বর্জ্য এবং বৃষ্টির জল গিয়ে পড়ে খালে।

পুর-প্রশাসনের একটি অংশের মতে, বাগজোলা খালের সংস্কার হয়েছে, কেষ্টপুর খালে জলপ্রবাহ বেড়েছে। তাতে এ বছর জমা জল সরানোর ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। কিন্তু বাকি খালগুলির নাব্যতা কম। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই খাল ভরে যাচ্ছে। কিন্তু তার চেয়ে বড় সমস্যা কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে। এর মধ্যে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড নিচু এলাকা, কার্যত বেসিনের মতো। আশপাশের বিভিন্ন ওয়ার্ডের জল সেখানে গিয়ে জমা হয়। সেখান থেকেই সরাসরি খালে চলে যায়।

কিন্তু গত কয়েক দশকে নিকাশির সেই ব্যবস্থাই কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভেড়ির উপরে বসতি গড়ে উঠেছে। নিকাশি ব্যবস্থা বলতে কিছুই আর নেই। ফলে এ বছরে আশপাশের এলাকায় জল জমে গিয়েছে। পাম্প বসিয়েও কাজ হয়নি।

২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্বামীজি নগর থেকে বাগজোলা এবং শুলংগুড়ি এলাকায় একটি হাইড্রেন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে সামনের বছরে জল জমার সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। এর পাশাপাশি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বসানো এবং বেশ কয়েকটি পাম্পিং স্টেশনেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, কেএমডিএ ও সেচ দফতরের সঙ্গে ওই এলাকা এবং খালগুলির অবস্থা ফেরানো নিয়ে পর্যালোচনা করছে বিধাননগর পুরসভা।

পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানা জানান, খাল বুজিয়ে ভেড়ি এলাকায় বসতি গড়ে উঠেছে। নিকাশি ব্যবস্থা বলে কিছুই ছিল না। কয়েকটি নিকাশি নালা তৈরির কাজ চলছে। নতুন করে খাল কাটা এবং পাম্পিং স্টেশন বসানোর মতো পরিকল্পনাও চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE