প্রতীকী ছবি।
সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম নয়। খাস কলকাতার উপকণ্ঠে বসেই দিব্যি জাল নোট ছাপানোর কারবার চলছিল। কিন্তু সেই নোট বাজারে চালাতে গিয়েই ধরা পড়ে গেলেন চক্রের মাথারা। পুলিশ সূত্রের খবর, বেলঘরিয়ায় ডেরায় হানা দিয়ে টাকা ছাপানোর স্ক্যানার, প্রিন্টার, কম্পিউটার, কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে , ধৃতদের নাম প্রবীর বিশ্বাস, মিতালি গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও কাকলি ভট্টাচার্য। তাঁদের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ৮০০ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে অনির্বাণ ও কাকলি স্বামী-স্ত্রী। তাঁরা ও মিতালি খড়দহের বাসিন্দা। প্রবীরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে টাকা ছাপানোর যন্ত্র মিলেছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস জানান, উদ্ধার হওয়া নোটগুলি বেশির ভাগই ১০০ টাকার। বাকিগুলি ৫০০ ও দু’হাজারের নোট।
বেলেঘাটা থানা সূত্রের খবর, বুধবার রাতে মিতালি ও কাকলি সরকারবাজারে ওই জাল টাকা নিয়ে জিনিসপত্র কিনতে এসেছিলেন। কিন্তু নোট দেখে দোকানিদের সন্দেহ হয়। সেখান থেকেই থানায় খবর আসে। পুলিশ গিয়ে টাকাগুলি পরীক্ষা করে মহিলাদের পাকড়াও করে। জেরায় জানা যায়, বেলঘরিয়া ও খড়দহে এই কারবার চলছে। এর পরেই ওসি চন্দন রায় মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে থানার একটি দল বেলঘরিয়া এবং খড়দহে হানা দেয়। সেখান থেকেই পাকড়াও করা
হয় প্রবীর, অনির্বাণকে। তদন্তকারীদের দাবি, চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তাঁদের খোঁজ চলছে।
জাল নোটের কারবারের জন্য মালদহ সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলি কুখ্যাত। এ রাজ্যে তো বটেই, দেশের অন্য প্রান্তেও জাল নোট সরবরাহের জন্য মালদহ সীমান্ত ও সেখানকার পাচারকারীদের ব্যবহার করা হয়। ভিন্ রাজ্যের পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতেও মালদহের বহু পাচারকারী ধরা পড়েছে। কিন্তু যে ভাবে কলকাতার উপকণ্ঠে বসে জাল নোট ছাপার কারবার ফাঁদা হয়েছিল তাতে বিস্মিত পুলিশের একাংশ।
বেলেঘাটা থানার জাল নোট মামলায় পাকড়াও হওয়া চার জনকে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি মৃন্ময় মিত্র আদালতে জানান, রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নষ্ট করতেই এঁরা জাল নোটের কারবার ফেঁদেছেন। এই চক্রের শিক়়ড় পর্যন্ত পৌঁছনোর জন্য ধৃতদের জেরা করা প্রয়োজন। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানান তিনি। বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করে চার জনকে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, আপাতত ধৃতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা রুজু করা হয়েছে। পরবর্তী কালে তদন্তের অগ্রগতির পর বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধী আইন বা ইউএপিএ ধারা যুক্ত করার আর্জি জানানো হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy