Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাইবার মামলায় জার্মান জবানবন্দি

বিদেশিদের জবানবন্দির আর্জি পেশ করেন সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি আদালতে জানান, জার্মান পুলিশের কাছ থেকে কিছু নথি-প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এই মামলায় ধৃতেরা এ দিন জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৩০
Share: Save:

নিউ টাউনে পাতা ফাঁদে প্রতারিত হয়েছেন সুদূর জার্মানির কিছু নাগরিক। সাইবার জালিয়াতি সেই মামলায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে চান জার্মানির পুলিশ এবং প্রতারিত নাগরিকেরা। সোমবার বিধাননগরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত তাঁদের আবেদন গ্রহণ করেছে।

বিদেশিদের জবানবন্দির আর্জি পেশ করেন সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি আদালতে জানান, জার্মান পুলিশের কাছ থেকে কিছু নথি-প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এই মামলায় ধৃতেরা এ দিন জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। তা খারিজ করে তাঁদের ফের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বিভাসবাবু জানান, নতুন করে আসা নথিপত্রের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা যাতে ফের জেলে গিয়ে ধৃতদের জেরা করতে পারে, তার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। বিচারক অনুমতি দিয়েছেন।

নিউ টাউনের একটি অফিসে বসে জার্মান নাগরিকদের প্রতারণা করার ফাঁদ পেতেছিলেন কয়েক জন। সেই ফাঁদে পা দিয়ে বহু অর্থ খুইয়েছেন কিছু জার্মান নাগরিক। তদন্তে নামে সিআই়ডি-র সাইবার অপরাধ দমন শাখা। জুনে নিউ টাউনের ওই অফিসে হানা দিয়ে মূল চক্রী বলে অভিযুক্ত রিচা পিপলবা-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় কম্পিউটার, হার্ড ডিস্ক এবং বেশ কিছু নথি-প্রমাণ। সেই মামলাতেই গোপন জবানবন্দি দিতে এসেছেন জার্মানির প্রতিনিধিরা।

সিআইডি সূত্রের খবর, এসেছেন জার্মানির সরকারি কৌঁসুলি যুরগেন লেওয়ানড্রস্কি এবং পুলিশ অফিসার আলেকজান্ডার সিরোয়ি। প্রতারিত এক মহিলার আসার কথা ছিল। তিনি অবশ্য আসতে পারেননি। জার্মানির প্রতিনিধিরা এ দিন ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন। দুপুরে ভবানী ভবনে বৈঠক করেন সিআই়ডি-র সঙ্গে। গোয়েন্দাকর্তারা জানান, তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জার্মান প্রতিনিধিরা।

কী ভাবে চলত প্রতারণা?

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এ শহরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জার্মান নাগরিকদের ফোন করতেন রিচার সঙ্গীরা। নিজেদের বিশ্বের প্রথম সারির একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তাব দিতেন তাঁরা। সেই ছুতোয় দূরে বসেই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতেন অভিযুক্তেরা। তার পরে নিজেরাই কম্পিউটার খারাপ করে দিতেন এবং তা সারিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতেন। গোয়েন্দাদের দাবি, সেই অর্থ সরাসরি রিচাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত না। লন্ডনের একটি অ্যাকাউন্ট ঘুরে তা জমা প়ড়ত মধ্যমগ্রামের এক দম্পতির অ্যাকাউন্টে। ওই দম্পতির মেয়ে রিচাদের সংস্থায় চাকরি করতেন। সেই দম্পতি নিজেদের কমিশন কেটে নিয়ে বাকি টাকা রিচাদের কাছে পাঠাতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE