Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভুয়ো অভিযোগ করলে শাস্তি দিন, নির্দেশ সিপি-র

ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) রাজীব কুমার। লালবাজার সূত্রে খবর, শনিবার সিপি-র মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে সিপি ক্ষোভ প্রকাশেই থেমে থাকেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) রাজীব কুমার। লালবাজার সূত্রে খবর, শনিবার সিপি-র মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে সিপি ক্ষোভ প্রকাশেই থেমে থাকেননি। প্রতিটি থানাকে ভুয়ো অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, গত মাসেই পোস্তায় এক মহিলা ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তাঁকে একটি গলিতে নিয়ে গিয়ে দুই দুষ্কৃতী অস্ত্র দেখিয়ে সোনার গয়না লুঠ করে পালিয়েছে। কিন্তু মহিলার দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ খুঁজে পায়নি পুলিশ। বরং তদন্তকারীদের লাগাতার জেরার মুখে ভুয়ো অভিযোগ দায়েরের কথা স্বীকার করে নেন ওই মহিলা। মাস কয়েক আগে মানিকতলা থানা এলাকায় এক যুবক বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন। পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই যুবক নিজেই বোমা নিয়ে যাওয়ার পথে তা ফেটে গিয়েছিল। পুলিশি মামলা এড়াতে নিজে গল্প ফেঁদেছিলেন।

এ দিনের বৈঠকে এই দু’টি প্রসঙ্গ সিপি উত্থাপন করেন বলে লালবাজারের খবর। একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই দু’টি ঘটনায় ভুয়ো অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন, তা অফিসারদের কাছে জানতে চান। ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই আশ্বাস দিতে গিয়ে সিপি-র কাছে কার্যত তিরস্কৃত হন এক পুলিশকর্তা। লালবাজারের একাংশ জানাচ্ছে, ভুয়ো অভিযোগ করে অভিযোগকারীরা পুলিশের সময় নষ্ট করছেন বলে মনে করেন সিপি। পাশাপাশি, এই সবের তদন্ত করতে গিয়ে সরকারের টাকাও নষ্ট হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের এক প্রবীণ অফিসারের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা, নিরাপত্তার কাজ মিলিয়ে এমনিতেই মহানগরে পুলিশের কাজের চাপ বেশি। ভুয়ো অভিযোগ যে প্রায়ই আসে, তা মেনে নিচ্ছেন বিভিন্ন থানার ওসিরাও। তাঁদেরই এক জন বলছেন, বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে ঝামেলা থেকে শুরু করে পারিবারিক অশান্তি, নানা বিষয় নিয়ে ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করা হয়। তা বুঝতে পারলেও থানার অফিসারেরা ভুয়ো অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন না। অথচ তদন্তে পুলিশের সময় ও টাকা দুই-ই অপচয় হয়। সেই কারণেই এই প্রবণতা ঠেকাতে ভুয়ো অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাওয়াই দিয়েছেন সিপি।

পুলিশ জানায়, সিপি থানাকে তদন্তের ব্যপারে স্বাবলম্বী হতে বলেছেন। সে কারণে এলাকার চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত পুরনো অপরাধীদের উপরে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই নজরদারি ও তার ভিত্তিতে তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করলে চুরি, মোটরবাইক চুরির মতো অনেক অপরাধ কমবে বলে সিপি জানান। তিনি বলেছেন, যে কোনও ঘটনার তদন্ত থানাকেই করতে হবে। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ সাহায্য করতে পারে। বড় ঘটনা ঘটলে তবেই গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তভার নেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

false complaint Legal action complainant police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE