পুজোর আগেই অটো-শাসন নিয়ে পুলিশকে কড়া হতে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। সেই মতোই কালী পুজো অবধি কড়া নজরদারিতে ছিল শহরের অটো। কিন্তু নজরদারি সরে যেতেই অটো চলে গিয়েছে সেই আইন ভাঙার জগতে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে বাস, ট্যাক্সি, অটোর ভাড়া বাড়ানো যাবে না। বাস, ট্যাক্সির ভাড়া সরকারের হাতে। তাই, ওই ঘোষণার অন্যথা হয় না। কিন্তু অটোর উপরে নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। যদিও অটো নিয়ন্ত্রণ করে শাসক দলের ইউনিয়ন, তবু সরকারি নিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অটোর রাজত্ব চলছেই।
প্রতি বছরই পুজোর সময়ে কলকাতার অধিকাংশ অটো রুটে মহালয়া থেকে এক টাকা করে বেশি ভাড়া নেওয়া শুরু হয় যাত্রীদের থেকে। এ বারেও তা-ই হয়েছে। কিন্তু পুজো শেষের দু’মাস পরেও সেই ভাড়া কমেনি। বর্ধিত ভাড়াই নিয়ে যাচ্ছেন অটো চালকেরা। শহরের উত্তরে, দক্ষিণে, শহরতলিতে— সর্বত্রই একই চিত্র।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণের ২৮ নম্বর এবং ১০৫ নম্বর রুট। গড়িয়া থেকে গোলপার্ক (২৮ নম্বর রুট) এবং পাটুলি থেকে গোলপার্ক রুটে ভাড়া বেড়েছে ১ টাকা করে। দু’টি রুটে ১৫ টাকা ভাড়া বেড়ে ১৬ টাকা হয়েছে। বেড়েছে গড়িয়া-পাটুলি রুটের ভাড়াও। ৬ টাকা ভাড়া বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা। একই ভাবে ১ টাকা ভাড়া বেড়েছে দমদম নাগেরবাজার রুটেও।
এ তো গেল সংগঠিত ভাবে ভাড়া বাড়ানোর ঘটনা। এ ছাড়া, কলকাতার বহু রুটে ইচ্ছেমতো ভাড়া নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। যেমন, বি কে পাল অ্যাভিনিউ থেকে বড়বাজার রুটের কথাই ধরা যাক। যে সব জায়গার ভাড়া ৭ কিংবা ৮ টাকা, অফিস টাইমে হয়ে যায় ১০ টাকা। দুপুরে যাত্রীর চাপ কম থাকলে কখনও চালকেরা ঠিক ভাড়া নেন। তাই, ওই রুটে অলিখিত ভাবে ভাড়াই হয়ে গিয়েছে ১০ টাকা।
তৃণমূলের অটো ইউনিয়নের নেতারা অনেক ক্ষেত্রেই ভাড়াবৃদ্ধির কথা মানছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না। তাঁদের কথায়, ‘‘অনেক বছর ভাড়া বাড়েনি। তাই ভাড়া বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।’’ যদিও বিরোধী সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর নেতা অজিত চৌধুরীর দাবি, ‘‘সরকার কোনও ভাড়া বাড়ায়নি। কিন্তু ইউনিয়নের ছত্রচ্ছায়ায় বিভিন্ন রুটে অটোচালকেরা ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে। কেউ কিছু বলার নেই, দেখারও নেই।’’
আইএনটিটিইউসি নেতা শুভাশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কোনও অবস্থাতেই অটোর ভাড়া বৃদ্ধি হবে না, এমনটাই সরকারের নির্দেশ রয়েছে। ফলে, সংগঠনের পক্ষ থেকে কোথাও ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy