ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন মোড় পর্যন্ত সব বেআইনি নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের পূর্বাঞ্চল বেঞ্চ। একই সঙ্গে, ওই রাস্তার নয়ানজুলির পাড় আর যাতে কোনও ভাবেই জবরদখল না হয়, সেই ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছে তারা।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ সম্প্রতি ট্রাইব্যুনালে মামলা করে জানিয়েছিল, নির্মাণকারী সংস্থা ও অন্যদের দ্বারা উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন মোড় পর্যন্ত নয়ানজুলির পাড় বেআইনি ভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। গত ২১ জুলাই মামলাটি আদালতে উঠলে বিচারক প্রতাপকুমার রায় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, দক্ষিণ দমদম পুরসভা এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন, ওই এলাকা জুড়ে সব বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে আধিকারিক নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, নয়ানজুলির পাড়ে জবরদখল রুখতেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিচারক আরও জানিয়েছেন, সাধারণত অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেওয়ার সময়ে সব পক্ষকে ডাকা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যেহেতু পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি সামনে আসছে, তাই এক পক্ষের কথা শুনেই তিনি ওই নির্দেশ দিচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আইনজীবী সোমনাথ রায়চৌধুরী জানান, রায় দিতে গিয়ে বিচারক তাঁর নির্দেশে ২০১০ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদারকে লেখা দক্ষিণ দমদম পুরসভার তৎকালীন চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিতের একটি চিঠির উল্লেখ করেন। ওই চিঠিতে অঞ্জনাদেবী পূর্তমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, একটি নির্মাণকারী সংস্থা পুরসভা অনুমোদিত নকশা না মেনে লেকটাউন লিঙ্ক রোড এবং ভিআইপি রোডের মোড়ে বেআইনি নির্মাণ করছে। অঞ্জনাদেবীর অভিযোগ ছিল, ওই সংস্থাটি পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে লোহার পাঁচিলও তুলে দিয়েছে। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘ওই ধরনের বিভিন্ন নথি আমরা আদালতে জমা দিয়েছিলাম। ফলে আমাদের মামলাটির মধ্যে সত্যতা রয়েছে বলে আদালত মনে করছে।’’
বিজ্ঞান মঞ্চের সহ-সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরাও উন্নয়ন চাই। কিন্তু তা হোক বিজ্ঞানসম্মত ভাবে। নয়ানজুলিগুলি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন ভিআইপি রোড বর্ষায় ভাসছে। আমরা আরও নথি আদালতের কাছে দেব।’’
উল্লেখ্য, উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত নয়ানজুলি ভরাট করে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে বলে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে এর আগে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। ট্রাইব্যুনাল ঘটনার সত্যতা সরেজমিন তদন্ত করতে জুন মাসে সেখানে অ্যাডভোকেট কমিশনারকে পাঠায়। তিনি গিয়ে দেখেন, নয়ানজুলির মতোই বিভিন্ন বড় বড় গর্ত (পিট) মাটি দিয়ে ভরাট করা। সেগুলির উপরে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। এমনকী, ভেজা মাটির উপরেই ঘাস বসানো হয়েছে। তার ছবিও তোলেন অ্যাডভোকেট কমিশনার। ওই মামলাটির শুনানি ৩১ জুলাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy