অস্বাভাবিক দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের উপরে আস্থা রাখতে না পেরে সিআইডি-র হাতে তদন্তভার তুলে দিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।
পুলিশ জানায়, গত ২৫ মে খড়দহ থানার আগরপাড়ার একটি বহুতল থেকে পায়েল গোম্স নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। একই ঘরে উদ্ধার হয় তাঁর চার বছরের ছেলে অঙ্কুরের দেহ। শিশুটির গলার নলি কাটা ছিল বলে জানায় পুলিশ। পায়েলের বাবা তাঁর জামাই পিও গোমসের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পায়েলের ঘর থেকে পাওয়া সুইসাইড নোট থেকে পুলিশের অনুমান হয়, ওই গৃহবধূ প্রথমে নিজের সন্তানকে খুন করে পরে আত্মঘাতী হন। পিও বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন।
কিন্তু পায়েলের বাবা প্রফুল্ল মণ্ডল সেই তদন্তে সন্তুষ্ট হননি। তাঁর আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী জানান, খড়দহ থানার পুলিশের তদন্তে ভরসা করতে না পেরে এবং সঠিক তদন্ত চেয়ে প্রফুল্লবাবু অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ১৪ অগস্ট খড়দহ থানার পুলিশকেও মামলায় যুক্ত করা হয়।
কৌস্তুভবাবু জানান, মামলার আবেদনে পুলিশের তদন্তের ফাঁকগুলি তুলে ধরা হয়। এর আগে মামলাটির শুনানি হয় গত ১৯ অগস্ট। সে দিন তিনি আদালতে জানান, পায়েলের ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। কিন্তু প্রফুল্লবাবুকে থানায় ডেকে পাঠিয়ে পুলিশ জানতে চায়নি, ওই নোটের লেখা তাঁর মেয়ের হাতের কিনা। পুলিশ হস্তরেখা বিশারদেরও সাহায্য নেয়নি। তা ছাড়া ওই ফ্ল্যাট থেকে যে অস্ত্র উদ্ধার হয়, সেটিরও ফরেন্সিক পরীক্ষা করেনি পুলিশ। ওই দিন বিচারপতি দত্ত নির্দেশ দেন, ৩১ অগস্ট খড়দহ থানার ওসি শৈবালকুমার বাগচীকে আদালতে হাজির করাতে।
সোমবার প্রফুল্লবাবুর আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ঘটনার সঠিক তদন্ত শেষ না করেই গত ১৯ অগস্ট মামলার চার্জশিট পেশ করে অভিযুক্ত পিও-র বিরুদ্ধে বধূনির্যাতন ও পণের জন্য মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী সাধন রায়চৌধুরী আদালতে জানান, ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা না হলে অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে যেতে পারেন। সেই কারণেই পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে।
এ দিন বিচারপতি দত্ত খড়দহ থানার ওসি-র কাছে জানতে চান, কবে মামলা দায়ের হয়েছে এবং তাঁর থানার পুলিশকে কবে এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। ওসি তা জানাতে না পারায় বিচারপতি দত্ত তাঁর উদ্দেশে জানান, এই প্রশ্নের উত্তরই তাঁর জানা নেই। তা হলে ঘটনার তদন্ত কী হয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। এর পরেই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেন বিচারপতি দত্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy