এমনই হবে ডিজিটাল বোর্ড।
পার্কিং লটের অনিয়ম রুখতে এ বার ভরসা ডিজিটাল বোর্ড।
পার্কিং লট নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সেই বোর্ডে জানানো হবে, পার্কিং-এ কতটা জায়গা ভর্তি রয়েছে। কত জায়গা খালি। কোন গাড়ির জন্য ঘণ্টায় কত টাকা দিতে হবে। কলকাতা পুরসভার পার্কিং দফতরের এক আধিকারিক জানান, বেশি টাকা নিয়ে গাড়ি রাখার ব্যবসা রুখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, যদিও পার্কিংয়ের বেআইনি ব্যবসা রুখতে আগেও কয়েকটি পরিকল্পনা করেছে পুর প্রশাসন। কাজ হয়নি। যেমন, পার্কিং লটে নোটিস বোর্ড লাগিয়ে পার্কিংয়ের দর জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও ছোট গাড়ি রাখার জন্য ঘণ্টায় যে ভাড়া, তার থেকে বেশি নেওয়ার অভিযোগ কমেনি। এর পরে পুরসভা নতুন সিদ্ধান্ত নিল যে, প্রতিটি পার্কিং এলাকায় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র রাখতে হবে। গাড়ি রাখার সময় এবং দর জানিয়ে তা থেকে ছাপানো বিল বার করা হবে। তাতেও দেখা গিয়েছে, যন্ত্রে কারসাজি করে দর বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে। আর ছাপানো বিল দেখিয়ে বেশি টাকা নেওয়ার অসাধু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন একদল পার্কিং কর্মী।
পুরসভা সূত্রের খবর, এর সঙ্গে রয়েছে জায়গার কারসাজি। পার্কিং দফতরের এক অফিসার উদাহরণ দিয়ে জানান, পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিটের মতো জায়গায় গাড়ির ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। সেখানে একটা পার্কিং এলাকায় ১০টি গাড়ির জন্য ভাড়া দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। কিন্তু রাখা হচ্ছে ১৫টি গাড়ি। তাতে এক দিকে যেমন পুরসভার আয় কমছে। অন্য দিকে, রাস্তায় যানচলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। এ সবের জন্য পুলিশ এবং পুরসভার একাংশের হাতে কিছু ‘উপরি’ দিয়েই পাড় পেয়ে যাচ্ছেন পার্কিংয়ের ঠিকাদারেরা।
বর্তমানে দিন ও রাত মিলিয়ে গোটা শহরে প্রায় ১৪০টি পার্কিং লট রয়েছে। মোট প্রায় সাড়ে ১২ হাজার গাড়ি পার্কিং করার ব্যবস্থা রয়েছে ওই সব পার্কিং লটে। যদিও কলকাতা শহরে গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে অভিযোগ ভূরি ভূরি। অভিযোগ, পার্কিংয়ের কাজে যুক্ত কর্মীদের কাছে হেনস্থা হয়েছেন শাসক দলেরই কাউন্সিলর এবং বিধায়ক। প্রতি ক্ষেত্রেই এমন ঘটনার পরে পুর প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাওয়াটা রেওয়াজে হয়ে দাঁড়িয়েছে লটের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের। তাই কোনও ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করার নমুনা নেই বললেই চলে।
এ বার তাই পার্কিংয়ের অনিয়ম রুখতে ফের আরেক দফা চেষ্টা শুরু করছে কলকাতা পুরসভা। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, কোনও পার্কিং এলাকার শুরু এবং শেষে ডিজিটাল বোর্ড লাগানো হবে। সব সময়ে সেই বোর্ডে ভেসে উঠবে ওই পার্কিংয়ে কতটা জায়গা খালি রয়েছে। কতগুলো গাড়ি রাখা হয়েছে, কতগুলো রাখা যাবে এবং দর। যাতে সকলের নজরে পড়ে। কিন্তু এমন বোর্ড লাগাতে যে খরচ হবে, তা বহন করবে কে? পুরসভার এক আমলা জানান, ওই বোর্ডে পার্কিংয়ের তথ্য ছাড়াও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। সেখান থেকেই খরচ মিটবে। আপাতত, ক্যামাক স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার পার্কিংয়ে ওই ব্যবস্থা চালু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy