Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পার্কিংয়ের দখল ঘিরে হাতাহাতি

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ চিৎপুরের টার্নার রোডের বাসিন্দারা দেখলেন, এলাকা দখল ঘিরে দুই পক্ষে আবার হাতাহাতি বেধেছে। প্রকাশ্যে একে অপরকে লক্ষ্য করে ছুরি চালাচ্ছে।

ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট। মঙ্গলবার, চিৎপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট। মঙ্গলবার, চিৎপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৬
Share: Save:

চিৎপুরের বিশাল এলাকায় প্রতি দিন যে কয়েকশো মালবাহী গাড়ি যাতায়াত করে, সেগুলি কোথায় দাঁড়াবে তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বচসা চলছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। অভিযোগ, এই পার্কিং ব্যবস্থা ঘিরে তোলা আদায়ও চলত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ চিৎপুরের টার্নার রোডের বাসিন্দারা দেখলেন, এলাকা দখল ঘিরে দুই পক্ষে আবার হাতাহাতি বেধেছে। প্রকাশ্যে একে অপরকে লক্ষ্য করে ছুরি চালাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি পার্কিংয়ের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে এ দিন দুই ভাই কালু রাজভড় ও নাড়ু রাজভড়ের সঙ্গে স্থানীয় যুবক ভানু মিশ্রের হাতাহাতি শুরু হয়। কালু একটি মন্দিরের সামনে বসেছিল। অভিযোগ, সে সময়ে হঠাৎই ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে ভানু। কালুকে বাঁচাতে তার ভাই নাড়ু এলে সে-ও ছুরির আঘাতে জখম হয়। কালু ও ভানুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাড়ুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ডিসি (উত্তর) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আহতেরা কিছুটা সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।’’

চিৎপুরের টার্নার রোড ও তার আশপাশের এলাকায় রয়েছে প্রচুর গুদাম ও কারখানা। প্রতিদিন কয়েকশো মালবাহী গাড়ি সেখানে যাতায়াত করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই গাড়িগুলি থেকে পার্কিং ফি আদায় নিয়ে বহু দিন ধরেই গোলমাল চলছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী কালু ও তার ভাই নাড়ু রাজভড় বনাম এলাকারই বাসিন্দা শঙ্কর মিশ্র ও তার ছেলে ভানু মিশ্রের। আরও অভিযোগ, পুরসভার নিয়ম মেনে পার্কিং ফি নেওয়া হত না। দেওয়া হত না রসিদও। পুলিশ জানাচ্ছে, একটি পক্ষ নিজেকে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের কাছের লোক বলে দাবি করত। অপর গোষ্ঠী দাবি করত, তারা এলাকার তৃমমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। দু’পক্ষের বচসায় ভয়ে থাকতেন গাড়িচালকেরা।

টার্নার রোডের একটি গুদামে নিয়মিত গাড়ি রাখেন অজিত মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দিন দু’ঘণ্টার জন্য ওরা ৪০ টাকা চাইত। কোনও দিন ৮০ টাকা। মাঝেমধ্যে দু’পক্ষকেই পার্কিংয়ের টাকা দিতে বাধ্য হতাম। কোনও রসিদও মিলত না। উল্টে রসিদ চাইলে গাড়ি রাখতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিত।’’

কালুর বাবা বাবলু রাজভড়ের অভিযোগ, এলাকার কাউন্সিলরের প্রশ্রয়েই ভানুর রমরমা। তাঁর মদতেই সে তোলাবাজি চালাচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে ভানুর আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, জোর করে এলাকার দখল নিতে চাইছে কালু ও নাড়ু। দুই গোষ্ঠীর লড়াই নিয়ে ওয়াকিবহাল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মালা সাহা ও কাউন্সিলর সুমন সিংহ। মালাদেবী বলেন, ‘‘কে কোন সময়ে পার্কিং ফি আদায় করবে, তা ওদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে বলে দিয়েছিলাম। কোনও রকম তোলাবাজির অভিযোগ যাতে না ওঠে, সে বিষয়েও সাবধান করে দিয়েছিলাম। তার পরেও কেন এমন হল, খতিয়ে দেখতে হবে।’’

অন্য দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর সুমনদেবী বলেন, ‘‘দু’পক্ষই আমাদের দলের সমর্থক। এক এক পক্ষকে পনেরো দিন করে সময় ভাগ করে দেওয়ার পরেও সমস্যা মেটেনি। উপরমহলে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chitpur Parking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE